এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, পোশাক শিল্পকে আমরা শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সব থেকে বড় ক্ষেত্র হিসেবে দেখছি না, সমাজ পরিবর্তনেও এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনেও এ খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। এখাতে প্রায় ৪২ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ শ্রমিক নারী। এই শিল্পের কল্যাণে নারীর ক্ষমতায়ন ফিরে এসেছে। নারীরা স্বপ্ন দেখতে শিখেছে। কাজেই সেই শিল্পকে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।
আজ সোমবার (১৩ মে) সচিবালয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন। এসময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আব্দুর রউফ, বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান এবং বিজিএমইএ এর নবনির্বাচিত সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)-র নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে সহ-সভাপতিবৃন্দ এবং পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কাস্টমসের বিরুদ্ধে ঠিকমতো সহযোগিতা পাচ্ছেন না এরকম অভিযোগ তোলার প্রেক্ষিতে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, অন্যান্য জায়গা থেকেও এরকম অভিযোগ এসেছে। এনবিআর এবং কাস্টমসের যে সমস্যাগুলো রয়েছে এটা বড় সমস্যা। আমি সামনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।
বস্ত্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে পোশাক খাতের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছি। আমরা সমাধানের সূত্রগুলো বের করব।
বিজিএমইএ'র দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে পূর্ণভাবে প্রস্তুত না করে বাইরে কোথাও শিল্প করতে দেওয়া যাবে না, এ নীতি নমনীয় করার চেষ্টা করব। আপনারা নগদ সহায়তা প্রদান ২০২৬ সাল পর্যন্ত বলবৎ রাখার দাবি জানিয়েছেন। আমাদের টার্গেটে পৌঁছাতে হলে বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে এই নগদ সহায়তার বিষয়টি থাকতে হবে।
এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় আমরা মাত্র ২৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছিলাম। ৮টা ফ্যাক্টরি ছিল মাত্র গ্রীন ফ্যাক্টরি। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সহযোগিতায় আজকে আমরা এ পর্যায়ে এসে ৪৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পেরেছি। আজকের ২১৫টি গ্রিন ফ্যাক্টরি। আরো ৩০০ গ্রীন ফ্যাক্টরির পথে আছে। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গ্রীন ফ্যাক্টরি আজকে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ আজকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।
আমরা যাতে আইন মেনেই সুন্দর সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারি তার দাবি জানাচ্ছি। আমরা হয়রানি মুক্ত ব্যবসা করতে চাই।
এ সময় ২০২৬ সাল পর্যন্ত পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তা বহাল রাখার দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি। পাশাপাশি সোর্স ট্যাক্স ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করেছে অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাহিরে শিল্প করা যাবে না। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে মাত্র তিনটি চালু হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু না করেই বাহিরে শিল্প করা যাবে না, এমন নির্দেশনা দিলে বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এই সার্কুলার তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।