বৃক্ষরোপণে ইসলামের নির্দেশনা

ইসলামিক ডেস্ক:যে বৃক্ষ আমার এত এত উপকার করে, বিনা প্রয়োজনে আমরা যেন তা না কাটি। এটি যেমন এ নিআমতের না-শুকরি হবে তেমনি নিজের ক্ষতি ডেকে আনা হবে। কারণ, বৃক্ষ যত কমতে থাকবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। খরা, অনাবৃষ্টি দেখা দেবে। পৃথিবীর আবাদী অনাবাদীতে পরিণত হবে। মানুষসহ পশু-পাখি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে। সুতরাং বিনা প্রয়োজনে আমরা গাছ কাটব না।

এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো বড়ই গাছ কাটবে আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। আবু দাউদ রাহ.-কে এ হাদীসের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, এ হাদীসের বক্তব্যটি সংক্ষিপ্ত। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, যে ব্যক্তি অকারণে বা না-হকভাবে মরুভূমির কোনো বড়ই গাছ কাটবে, যেখানে পথিক বা কোনো প্রাণী  ছায়াগ্রহণ করে, আল্লাহ তাকে অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। (দ্র. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫২৩৯) তবে কেউ কেউ বলেন, এ হাদীস হরম অঞ্চলের বড়ই গাছ কাটার সাথে সম্পৃক্ত। তো যাইহোক অকারণে গাছকাটা যে নিজেদের ক্ষতি ও সওয়াব থেকে মাহরূমি উপরের আলোচনায় আশা করি তা স্পষ্ট হয়েছে। সুতরাং আমরা বেশি বেশি গাছ লাগাব, অকারণে গাছ কাটব না।

দুনিয়াবী অনেক কাজের ক্ষেত্রেই -সে কাজের প্রতি গুরুত্বারোপের সাথে সাথে- নবীজী তাঁর সাহাবীদের মানসিকতাকে আখেরাতমুখি করেছেন। তো বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রেও নবীজী এমনটি করেছেন। তাঁর প্রিয় সাহাবী গাছ লাগাচ্ছে তো তাকে জান্নাতে গাছ লাগানোর পথও বাতলে দিচ্ছেন। হযরত আবু হুরাইরা রা. একদিন গাছ লাগাচ্ছিলেন। এমন সময় নবীজী পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, আবু হুরাইরা! কী লাগাচ্ছো? তিনি বললেন, একটি চারা রোপণ করছি। নবীজী বললেন, আমি কি তোমাকে এর চেয়ে উত্তম রোপণের কথা বলে দেব? আবু হুরায়রা বললেন, আল্লাহর রাসূল! অবশ্যই বলুন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, বল,সুবহানাল্লাহ, "আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার"-এর প্রতিটির বিনিময়ে জান্নাতে তোমার জন্য একটি করে গাছ লাগানো হবে। সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৮০৭।

এখন গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়। আসুন আমরা যে যতটুকু পারি ফলের গাছ, ঔষধি গাছ লাগিয়ে পরিবেশের উন্নতি সাধন করি। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে অকারণে গাছকাটা থেকে বিরত থাকার তাওফিক দিন। আমিন