সমৃদ্ধ অর্থনীতির পথ ধরে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন গুণগত শিক্ষা ব্যবস্থা

ড. সৈয়দ মোঃ এহসানুর রহমান:প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় সহ মাদ্রাসা ও কারিগরী সকল পর্যায়ের শিক্ষাব্যবস্থাতেই টেকসই গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে। প্রতিটি শিশু যেন আদর্শ নাগরিক হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে এবং মানবিক গুন সম্পন্ন মানুষ হয়ে সুস্থ জাতি গঠনে অবদান রাখতে পারে এজন্য প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত বর্তমানে নির্ধারিত ও প্রচলিত পাঠ্য/কোর্স এর সাথে “নৈতিক শিক্ষা”, “স্বাস্থ্য ও পুষ্টি”, “আইন ও শরীরচর্চা”, “ইতিহাস ও সংস্কৃতি” বিষয়ক এই চারটি কোর্স বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

বর্তমানে প্রচলিত পাঠ্য গুলির মধ্যে গণিত, ইংরেজী, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার শিক্ষার উপর একটু বেশি মনোযোগী হওয়া লাগবে শিক্ষক ও ছাত্র উভয় পক্ষকেই। ব্যবহারিক কোর্স গুলিতে হাতে কলমে শেখা ও চর্চা করতে হবে সকলকেই। সার্বিকভাবে লেখাপড়া ও পরীক্ষা পদ্ধতিকে ভীতি বা চাপ এ পরিণত না করে এটিকে আনন্দদায়ক করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যেন বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চলমান থাকে সেদিকে রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেষ্ট হতে হবে।
চাকুরীক্ষেত্রে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য বিশেষায়িত শিক্ষাব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে যার ফলশ্রুতিতে দক্ষ ও মানসম্মত গ্রাজুয়েট তৈরি বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, প্রকৌশল, চিকিৎসা ও প্রযুক্তি শিক্ষায়। উপরন্ত শিক্ষক ও গবেষকরাও প্রাপ্য মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হওয়ায় দেশে বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্বমানের বিজ্ঞানী ও গবেষক তৈরী হচ্ছে না। সমৃদ্ধ অর্থনীতির পথ ধরে ২০৪১ এ বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাইলে জাতীয় বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করতে হবে।

 শিক্ষাবান্ধব আওয়ামীলীগ সরকার কর্তৃক প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এর সফল ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। গুণগত শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করনে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সকল পর্যায়ে শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রদানের বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে হবে। দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষনা সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য একটি দক্ষ উচ্চশিক্ষা কমিশন গঠন অতীব জরুরী। শিক্ষক ও গবেষকদের কাজের মূল্যায়ন, জবাবদিহিতা, স্বাধীনতা ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভিসি নিয়োগে আদর্শিক পরিচয়ের পাশাপাশি মেধা ও যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করতে হবে। বিশ্বর‍্যাংকিং এ প্রবেশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সময় ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া যেতে পারে।

লেখকঃ অধ্যাপক ও গবেষক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এবং আহবায়ক (নীলদল) বাকৃবি।
মোবাইলঃ ০১৭১১৯০১৬৫৫, ই-মেইলঃ This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.