গবাদিপশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:মহামারি কোভিড-১৯ এ কোটি কোটি মানুষ আক্রান্ত হলেও গবাদিপশুর আক্রান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, মুরগিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এমনকি এসব প্রাণী হতে মানবদেহে সংক্রমণেরও কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই কুরবানির পশু জবাই এবং মাংস নিয়ে করোনা সংক্রমনের ভয়ের কোন কারণ নেই। বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ভেটেরিনারি এডুকেশন এন্ড রিসার্চের (বিএসভিইআর) ২৮ তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের ৮০ টি গবেষণা পত্র উপস্থান শেষে এমন তথ্য উঠে আসে।

বিএসভিইআরয়ের ২৮ তম বার্ষিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মুহাঃ ইলিয়াছুর রহমান ভূঁইয়া। বুধবার (১ জুন) বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অফিসে ওই সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজিত হয়।

তিনি আরো বলেন, গত ২৮ মে (শনিবার) বিএসভিইআর এর বৈজ্ঞানিক সম্মেলন শুরু হয়। এবছর সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘প্রাণীসম্পদ শিল্পের উপর করোনার প্রভাব ও প্রশমন’। বিষয়টির উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাপানের কাগোশিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাওকি মিউরা এবং আলোচনা পেশ করেন অধ্যাপক ড. আলিমুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস।

মূল প্রবন্ধের পাশাপাশি চারটি পূর্ণাঙ্গ গবেষনামুলক প্রবন্ধ এবং ৮০টি গবেষণা পত্র উপস্থাপিত হয়। বাংলাদেশ, জাপান, জার্মানী, চীন, কেনিয়া, ইরান, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১২০ জন গবেষক দুইদিনব্যাপী বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, গবাদিপশুর মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে গবেষণা প্রবন্ধগুলোতে উঠে এসেছে। তবে করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে প্রাণীসম্পদ শিল্পে। এজন্য করোনা মহামারী সহ অন্যান্য মহামারী হতে আমাদের বাঁচতে হলে ‘ ওয়ান হেলথ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের উপর জোর দেন গবেষকেরা। এই প্রোগ্রামের আওতায় ডাক্তার, ভেটেরিনারিয়ান ও গণস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মকবুল হোসেন, বিএসভিইআরের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জহিরুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. তানভীর রহমান ও আয়োজক কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল।

এসময় ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মকবুল হোসেন বলেন, মানুষের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ভেটেরিনারিয়ানদের সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে হবে। এজন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ভেটেরিনারিয়ানদের নিয়োগ দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এন্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিসটেন্স বাংলাদেশের জন্য একটি মহামারি, যা থেকে বাঁচার জন্য অপরিকল্পিত ও নির্বিচারে এন্টিবায়োটিক ও এন্টিমাইক্রোবিয়াল ওষধ গ্রহন বন্ধ করতে হবে। শুধুমাত্র রেজিস্ট্রার ডাক্তার এর প্রেসক্রিপশান অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ও এন্টিমাইক্রোবিয়াল ওষধ বিক্রয় ও সেবন করতে হবে।