সবুজ বিপ্লবঃ নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু

ড. জগৎ চাঁদ মালাকার                                                                                      
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কৃষি :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুধাবন করেছিলেন কৃষির উন্নতিই হচ্ছে কৃষকের অর্থনৈতিক মুক্তি। সে কারণেই স্বাধীনতার পরই তিনি সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। জাতির পিতা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে বলেছিলেন, খাদ্যের জন্য অন্যের উপর নির্ভর করলে চলবে না। আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আমাদেরই উৎপাদন করতে হবে। আমরা কেন অন্যের কাছে খাদ্য ভিক্ষা চাইব। আমাদের উর্বর জমি, অবারিত প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের পরিশ্রমী মানুষ, আমাদের গবেষণা সম্প্রসারণ কাজে সমন্বয় করে আমরা খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করব। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার”। (সূত্র কৃষি ও কৃষকের বঙ্গবন্ধু, ড. সামসুল আলম, পৃষ্ঠা-৪৩) সময়ের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৩য়, সবজি উৎপাদনে ৩য়, আম উৎপাদনে ৭ম, আলু ও পেয়ারা উৎপাদনে ৮ম অবস্থানে রয়েছে। আবাদি জমি কমেছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ। সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু খাদ্য নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের জন্য তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচি গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন পরিকল্পনা ও তার পরিপ্রেক্ষিতগুলো ছিল- বঙ্গবন্ধু কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করেন। ভূমিস্বত্ব আইন জারি করার মাধ্যমে পরিবার প্রতি ভূমি মালিকানা ৩৭৫ একর থেকে কমিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ বিঘা সিলিং আরোপ করেন। গরিব কৃষকদের সহায়তার উদ্দেশ্যে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সরকারের প্রথম বার্ষিক বাজেটে  ১৯৭২-৭৩ সালে ৫০০ কোটি টাকা উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ ছিল এর মধ্যে ১০১ কোটি টাকা শুধু কৃষি উন্নয়নের জন্য রাখা হয়েছিল। কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে তিনি প্রথম বাজেটে কৃষিখাতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করেন। বাজেটে ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে কীটনাশক ও সার সরবরাহ করেন।এই ধারা (বাজেটে ভর্তুকি) সময়ের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অব্যাহত রেখেছেন ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়সম্পূর্ণ।

সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা  
খামার হলো একজন কৃষকের মাঠ ও বসতবাড়িতে বিস্তৃত উৎপাদন ক্ষেত্র। অর্থাৎ যেখান থেকে কোন উৎপাদন হয় তা’ই খামার। খামারের একক উপাদানের সকল উন্নত প্রযুক্তির একটির সাথে অন্যটির খামারের এক উপাদানের উপজাতের সাথে অন্য উপাদানের উপকরন ব্যবহারের সমন্বয়। খামারের উপাদান সমুহে (ধান চাষ, বসতবাড়ীতে ফল মূল ও শাক- সবজি চাষ, হাঁস/মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া পালন এবং মাছ চাষ) উন্নত কলাকৌশলের সমন্বয়ের মাধ্যমে এবং এদের আন্ত: সর্ম্পক বিবেচনায় রেখে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে কাঙ্খিত ফলন লাভ করাই হলো সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা।

সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষক তার খামারের সম্পদ সমুহ চিহ্নিত করে এদের আন্তঃসর্ম্পক  বিবেচনায় সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করেন। এতে খামারের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করে অধিক লাভবান হওয়া যায়। খামারের সমস্যা সমাধানে খামারের নিজস্ব সম্পদ কি কি আছে তা দেখবেন। অর্থাৎ খামারের উপজাতসমুহ অন্যটির উৎপাদন ব্যবস্থায় অত্যন্ত কার্যকরি ভাবে ব্যবহার করা হয়। উপাদানের উপজাত যেমন গোবর, খড়, ছাই, কুড়া, মুরগীর বিষ্টা, চাল ভাঙ্গা ইত্যাদি খামারী ব্যবহার করবেন এবং খামারে নতুন কোন উপাদান যোগ করার সুযোগ আছে কিনা তা দেখবেন এবং প্রয়োজনে বাজার থেকে কিনে তা ব্যবহার করে খামারের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করে অধিক লাভবান হবেন।

এ প্রসঙ্গে একটা উদাহরন দিলে ব্যাপারটা আরও স্পস্ট হবে যেমন ধান উৎপাদনে গোবর, খড়, ছাই, মুরগীর বিষ্টা ইত্যাদি ব্যবহারের সাথে বাজার থেকে বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করে অধিক উৎপাদন নিশ্চিত হবে। অর্থাৎ ধানের উৎপাদনের সাথে, হাঁস- মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া পালন এর উপজাতের ব্যবহার করা হলো। আবার হাঁস- মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া পালনে ধানের খড়, কুড়া, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। আরেকটি উদাহরন দিলে ব্যাপারটা আরও স্পস্ট হবে যেমন বসতবাড়িতে উৎপাদিত বাঁশ-ধান চাষ, রবি শস্য চাষ, বসতবাড়িতে ফল মূল ও শাক-সব্জি চাষ, হাঁস- মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া পালন এবং মাছ চাষ ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়ে আসছে। অর্থাৎ খামারের বিভিন্ন উৎপাদনশীল উপাদানের সাথে এবং এদের উপজাতের সাথে উৎপাদানের সাথে একটি আন্তঃ সর্ম্পক বিদ্যমান। বিদ্যমান সর্ম্পককে আরও জোরদার করে মোট উৎপাদন বাড়াতে হবে। অর্থাৎ খামারের সকল উপাদানের (ধান চাষ, বসতবাড়িতে ফল মূল ও শাক- সবজি চাষ, হাঁস/মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া পালন এবং মাছ চাষ) ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা। সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। খামারের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করে অধিক লাভবান হওয়াই হলো সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, কৃষকের, কৃষিবিদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৭৩ সালে ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহে বঙ্গবন্ধু বিশেষ ভাষণ দিয়েছিলেন। সে ভাষণে তিনি কৃষি বিপ্লবের কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন গ্রামের দিকে নজর দিতে হবে। কেননা গ্রামই সব উন্নয়নের মূল কেন্দ্র। গ্রামের উন্নয়ন আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যখন বেগবান হবে তখন গোটা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সম্মুখপানে। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের কৃষি শিক্ষায় আকৃষ্ট করে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার মানসে জাতির পিতা এসময় কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যাদা প্রদান করেন। তাঁর অদম্য ইচ্ছা ছিল যে কোনো উপায়ে কৃষকের স্বার্থরক্ষা করা। কেননা কৃষকই এ দেশের আসল নায়ক যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমাদের সবার অন্ন জোগায়।  কৃষকের চলমান, চাহিদা যথোপযুক্তভাবে নিশ্চিত করতে পারলে কৃষক অনেক আগ্রহে স্বতঃস্ফূর্ততায় কৃষিতে নিজেকে বিনিয়োগ করতে পারবে, উন্নয়নের জোয়ার বইবে।

মানুষের ওপর জোর করে কিছুই চাপিয়ে দেয়া যাবে না এটি খুব ভালো করে জানতেন বঙ্গবন্ধু। তাই তো তিনি বলেছেন করে দেখাতে হবে, এতে কৃষক নিজে নিজে শিখে নিজের আঙিনায় বাস্তবায়ন করবে। এক গ্রামের ২০ জনকে একসাথে ক্ষেতখামারে হাতে কলমে কাজ দেখালে পাশের অন্য কৃষক দেখে দেখে নিজের জমিতে বাস্তবায়ন করলে উৎপাদন বেড়ে যাবে। তখন সারা বাংলার অন্যরা এগিয়ে আসবে সম্পৃক্ত হবে উন্নয়নের মূলধারায়। কেননা আমাদের কৃষক দেখে বিশ্বাস করতে অভ্যস্ত।

তিনি কৃষিবিদদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা যারা কৃষি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছেন আপনাদের গ্রামে গিয়ে  কৃষকের সাথে মিশে যেতে হবে, মনোযোগ দিতে হবে তাদের চাহিদা আর কর্মের ওপর, তবেই তারা সাহসী হবে, আগ্রহী হবে, উন্নতি করবে। ফলবে সোনার ফসল ক্ষেত ভরে। আপনারা এখন শহরমুখো হওয়ার কথা ভুলে যান। গ্রাম উন্নত হলে দেশ উন্নত হবে, তখন আপনারা আপনা-আপনি উন্নত হয়ে যাবেন। গ্রামভিত্তিক বাংলার উন্নতি মানে দেশের উন্নতি, আর আপনাদের উন্নতি তখন সময়ের ব্যাপার। শহরের ভদ্রলোকদের দিকে তাকিয়ে আপনাদের চিন্তা বা আফসোস করার কোনো কারণ নেই। কেননা গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দিকে আমাদের সবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। কৃষক বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, তা নাহলে বাংলাদেশ বাঁচতে পারবে না।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন...খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, আটা, ময়দা আর ভুট্টাকে বুঝায় না বরং মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি এসবকে বুঝায়। সুতরাং কৃষির উন্নতি করতে হলে এসব খাদ্যশস্যের উৎপাদন উন্নতি করতে হবে।  বঙ্গবন্ধু ভাবতেন সবার আগে দরকার খাদ্যের। খাদ্যের নিশ্চয়তা না দিতে পারলে সব উন্নয়ন কার্যক্রম বিফলে যাবে। সুতরাং নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক কৃষি উন্নয়ন তথা কৃষি এবং কৃষকের কথা ভেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের জনগণের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা লাভের অব্যাবহতি পরেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের দিকে আমাদের সবার ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’ তিনি বলেছিলেন ‘কৃষক বাঁচাতে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে তা না হলে বাংলাদেশ বাঁচতে পারবে না। তাঁর সেই ভবিষ্যৎ বাণীর বহিঃপ্রকাশ আজকের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর সময় বিবেচনায় খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো সহজ ছিল না, কেননা, পূর্ব বাংলার খাদ্য ঘাটতি বহু আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল।

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় তিনি দেখতে চেয়েছিলেন দেশের কৃষি ও কৃষকের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়ন এবং স্বনিভর্রতা। তাই তো বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কৃষি ক্ষেত্রে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।  
           
নিরাপদ খাদ্যকে সমধিক গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন দেশ কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ, দূষণকারী বস্তু, অণুজীব, রোগ ও পোকা ইত্যাদির পাশপাশি পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করছে। উত্তম কৃষি পদ্ধতি সামগ্রিক কৃষি কার্যক্রম যা অনুসরণে নিরাপদ এবং মান সম্পন্ন খাদ্য ও খাদ্য বর্হিভূত কৃষিজাত পন্য সহজলভ্য, পরিবেশ সুরক্ষা, অর্থনীতি এবং সমাজ সুসংহত হবে। নিজের বসতবাড়িতে উৎপাদিত কৃষি পন্য নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় দারুণ ভূমিকা রাখবে।

খামারের সমস্যা সমাধানে খামারের নিজস্ব সম্পদ কি কি আছে তা দেখবেন। খামারের উপাদানের উপজাত যেমন গোবর, খড়, ছাই, কুড়া, মুরগীর বিষ্টা, চাল ভাঙ্গা ইত্যাদি খামারি ব্যবহার করবেন এবং খামারে নতুন কোন উপাদান যোগ করার সুযোগ আছে কিনা তা দেখবেন এবং তা ব্যবহার করে খামারের মোট উৎপাদন বৃদ্ধি করে অধিক লাভবান হবেন। অর্থাৎ খামারের বিভিন্ন উৎপাদনশীল উপাদানের সাথে এবং এদের উপজাতের সাথে উৎপাদানের সাথে একটি আন্তঃসর্ম্পকবিদ্যমান। বিদ্যমান সর্ম্পককে আরও জোরদার করে মোট উৎপাদন বাড়াতে হবে। সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা।

উপসংহার:
বিশেষ করে ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের হাঁস- মুরগী পালন, গরু পালন, ছাগল/ভেড়া বিদ্যমান পালন পদ্ধতিতে উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয় করতে হবে(খাদ্য,বাসস্থাসও চিকিৎসা ব্যবস্থান) এবং মাছ চাষে বিদ্যমান পদ্ধতিতে উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয় করতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যদি সমন্বিত কৃষি খামার গড়ে তোলা না যায় তাহলে আমাদের কৃষি উন্নয়ন ব্যাহত হবে, আমরা আমাদের কাংক্ষিত উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারব না। আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ব। কোঅপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে আগাতে পারলে আমাদের কৃষির উৎপাদন এবং সার্বিক উন্নয়ন দুটিই মাত্রা পাবে। অধিক শস্য উৎপাদনের জন্য আমাদের সবার সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। মাঠের ফসল, গবাদিপশু, মাছ পরিবেশ সব কিছুর মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় করেত হবে। তা না হলে আমরা কাংক্ষিত ভাবে এগোতে পারব না। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন...খাদ্য বলতে শুধু ধান, চাল, আটা, ময়দা আর ভুট্টাকে বুঝায় না বরং মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, শাকসবজি এসবকে বুঝায়। সুতরাং কৃষির উন্নতি করতে হলে এ সবের উৎপাদনে উন্নতি করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করতে হবে। বিধায় বঙ্গবন্ধুর সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা যদি প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে করা যায় দেশের নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বঙ্গবন্ধুর সবুজ বিপ্লবের স্বার্থে সমন্বতি কৃষি খামারের বাস্তব ধারণাটি ছবির মডেল অনুযায়ী প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে করা গেলে দেশের নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার অপার সুযোগ হবে বলে আমার বিশ্বাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কৃষি ও কৃষকদের উন্নয়নে তিনি প্রথম বাজেটে কৃষিখাতে ভর্তুকির ব্যবস্থা করেন। বাজেটে ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে কীটনাশক ও সার সরবরাহ করেন। এই ধারা (বাজেটে ভর্তুকি-সার) সময়ের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অব্যাহত রেখেছেন ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

-লেখক:উপপরিচালক (এল.আর), সংযুক্ত
উদ্ভিদ সংগনরিোধ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা।
ইমেইল: This email address is being protected from spambots. You need JavaScript enabled to view it.