শেকৃবি অধ্যাপক জাহিদুল হকের বিদায়ী সংবর্ধনা

ক্যাম্পাস ডেস্ক:একদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হয়ে প্রবেশ করেছিলেন অধ্যাপক এম. জাহিদুল হক। মেধার শীর্ষে আরোহন করে হয়েছিলেন শিক্ষক। দীর্ঘ শিক্ষকতার জীবনে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে তৈরি করেছেন জ্ঞানের এক একটি আলোকবর্তিকা হিসেবে। নিজের মেধা, শ্রম ও গবেষণা দিয়ে ঋদ্ধ করেছেন জাতিকে। দেশের প্রথম সারির ইংরেজি পত্রিকায় নিয়মিত লিখেছেন। কৃষি, সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে তার  লেখা কলাম বেশ পাঠক প্রিয়।

‘ছাত্রজীবন ও শিক্ষকতা মিলিয়ে প্রায় ৪৭ বছর সম্পৃক্ত ছিলাম শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এখান থেকে অবসরের মাধ্যমে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় থেকে বিদায় নিচ্ছি। ’

এভাবেই শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিজের আত্মার বন্ধনের কথা তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম  জাহিদুল হক।

আজ সোমবার (২২ আগষ্ট) কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের উদ্যোগে বিভাগীয় ল‍্যাবে আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন আবেগ ঝরে এই শিক্ষকের বক্তব্যে।

কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় এই জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের অকুণ্ঠ অবদানের স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে ছিল এমন আয়োজন। অশ্রুসজল ও সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানটি উপস্থিত সকলের হৃদয় স্পর্শ করে।বিদায়বেলায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অধ্যাপক এম. জাহিদুলে কথায় উঠে আসে দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনের সুখ দুঃখের নানা স্মৃতি।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু শিখেছি। বিদায়ের ক্ষণে মনে বেজে উঠছে কখন এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে? কারণ সবারই তো পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়। ’



কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ জামশেদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক  উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী, অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবুল বাশার, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সফি উল‍্যাহ মজুমদার, অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল আলম, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, অধ্যাপক ড. রঞ্জন রায়, অধ্যাপক ড. তাহমিনা বেগমসহ বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় করেন কৃষিবিদ অলি আহাদ সেতু।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক এম. জাহিদুল হক ১ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। একই বছর বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউট বর্তমান শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ ও ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য, ডীন, রেজিস্ট্রার, পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষক, শিক্ষক ও বিজ্ঞানী নিয়োগ বোর্ড বিশেষজ্ঞসহ নানাবিধ একাডেমিক ও গবেষণামুলক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন । এছাড়াও বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তার ৪০ টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।