শোকাবহ ২১ আগস্ট-হামলায় জড়িতদের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করা হোক- বাকৃবি নীল দল

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের অন্যতম ভয়াল হামলার ঘটনাটি ঘটে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চালানো হয় ভয়ংকর গ্রেনেড হামলা। ওই হামলায় নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন শেখ হাসিনাসহ ৩৩৮ জন দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থক, কর্তব্যরত সাংবাদিক, পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মী। জননেত্রী শেখ হাসিনার বাঁ কানের শ্রবণক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেদিন আহত ঢাকার তত্কালীন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। স্প্লিন্টারবিদ্ধ ব্যক্তিরা এখনো যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন।

রক্তাক্ত ইতিহাসের সাক্ষী আগস্ট মাস। ১৯৭১ সালের পরাজিত শক্তি এই মাসকেই বেছে নিয়েছিল তাদের প্রতিশোধের স্পৃহা চরিতার্থ করার জন্য। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। ২১ আগস্টের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটিও ছিল স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তিকে নির্মূল করার আরো একটি অপপ্রয়াস। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন সরকার। তদন্তে উঠে এসেছে, হাওয়া ভবনে তারেক রহমানের উপস্থিতিতে দফায় দফায় বৈঠকে এই হামলার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছিল। জঙ্গিগোষ্ঠী হরকাতুল জিহাদকে (হুজি) হামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। হুজি নেতা মুফতি হান্নান তাঁর জবানবন্দিতে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছেন। এর সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা লুত্ফুজ্জামান বাবর, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও জামায়াত নেতা মুজাহিদ, প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ বিএনপি ও জামায়াতের আরো কিছু নেতা সম্পৃক্ত ছিলেন।

জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) এবং পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন পরিকল্পনার সঙ্গে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে হামলা চালিয়েও হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পেরেছে। অবিস্ফোরিত গ্রেনেডসহ মামলার আলামতগুলো দ্রুত নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তদন্তের নামেও তারা প্রহসন করেছে। জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছে-হয়রানি করেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের।

১৪ বছর পর নিম্ন আদালতে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় হয়েছে। রায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং আরো ১৯ জনের যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে। আমরা আশা করি দ্রুত এই মামলার রায় কার্যকর করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটানোর সাহস না করে। ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি ও জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতান্ত্র ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামীলীগের নিবেদিতপ্রাণ সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছে  নীল দল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।