সংবর্ধিত হলেন বাকৃবি ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াদ

আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের নব-গঠিত কমিটির সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদকে সংবর্ধনা দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল ছাত্রলীগ। শনিবার (৩০ জুলাই ২০২২) বিকাল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

জানা যায়,খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বাকৃবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।  বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের নব-গঠিত কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আহনাফ আনজুম দারা সভাপতিত্বে ও আব্দুল্লাহ আল নোমান নাঈমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান।

সম্মানিত অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব মো. ইকরামুল হক টিটু। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন  বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মো. ছাইফুল ইসলাম, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. ছাইফুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মহির উদ্দীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ.কে. শাকুর আহম্মদ, বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপত মো. সরোয়ার মুর্শেদ জাস্টিস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিছবাহুজ্জামান চন্দন , রফিকুজ্জামান ইমন, বাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. আরিফ জাহাঙ্গীর। অনান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি কৃষিবিদ এম আনোয়ারুল হক, সহ-সভাপতি লিমন খানসহ বিভিন্ন হল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাফিকুজ্জামান ইমন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বলতেন, যদি সুসংগঠিত ছাত্রলীগ দেখতে চাও তাহলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাও। দুঃসময়ে তিনি কৃষিবিদ আব্দুল মান্নানকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি হিসাবে মনোনীত করেছিলেন। আজকে জননেত্রীর হাত ধরে কৃষিতে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য জাতির জনকের সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানীরা। কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে কৃষির উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে।

বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. সরোয়ার মুর্শেদ জাস্টিস বলেন, লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে ছাত্রলীগের জন্ম হয়েছে। কেবল ছাত্রলীগ করার কারণে এই ক্যাম্পাসে অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে, বর্তমানে আর এটি নেই। কৃষিবিদদের কারণে বর্তমানে বাংলাদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, এ ধারা অব্যহত রাখতে কৃষিবিদদের ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করে যেতে হবে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি রিয়াদের মাধ্যমে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগ সবসময় সুসংগঠিত থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তো বটেই দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাবে।

সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. মিছবাহুজ্জামান চন্দন বলেন, রিয়াদকে সংবর্ধনা দেওয়া মানে ছাত্রলীগের সবাইকে সংবর্ধনা দেওয়া হলো। এ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, অনেকের তাজা রক্ত দিতে হয়েছে। বর্তমানে ছাত্রলীগ অনেক সুসংগঠিত। আশা করবো ভবিষ্যতেও এ ধারা এ ক্যাম্পাসে অটুট থাকবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ.কে. শাকুর আহম্মদ বলেন, আমি রিয়াদকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। সে সবার সাথে বিনয় নিয়ে কথা বলেন, কাজ করে। এ ধারা অব্যহত রাখলে সে জাতীয় পর্যায়ের নেতা হতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মহির উদ্দীন বলেন, আমি তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসাবে পেয়েছি। আমি মনে করি, সংবর্ধনা নেওয়ার পর থেকে রিয়দের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। রিয়াদের হাত ধরে ছাত্রলীগের অতীত ঐহিত্য ফিরে আসবে, ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সুস্থ রাজনৈতিক ধারা বিরাজ করবে সে প্রত্যাশা রাখছি।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মী হিসাবে রিয়াদকে যেমনটা দেখেছি আজো এমনটাই দেখছি। রিয়াদ খুবই বিনয়ী একটা ছেলে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে সমুজ্জ্বল করতে রিয়াদ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতির পজিশনটা যেমন আনন্দের তেমনি অনেক দায়িত্বের। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী যেনো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে সামনে এগোতে পারে সেজন্য ছাত্রলীগকে ভূমিকা রাখতে হবে।

সংবর্ধিত হওয়ার পর বক্তব্য দেওয়ার সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদক ও র‌্যাগিং মুক্ত রাখতে আমি দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে নিজ দলের নেতা কর্মীদের সৎ ও সোচ্চার থেকে কাজ করতে নির্দেশ দেন। এছাড়াও দেশব্যাপী কৃষিবিদদের একত্রে কাজ করার আহবান জানান তিনি।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বাকৃবির অবদান অপরিসীম। দেশের কঠিন পরিস্থিতিতে বাকৃবির শিক্ষার্থীদের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কথা ও ছাত্রলীগের ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে সোনার বাংলা গড়তে সকলকে ঐক্যদ্ধভাবে কাজ করতে সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। আগামী দিনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ আরো সুসংগঠিত ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার ও দুষ্কৃতিকারীদের প্রতিহত করতে সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন হতে বলেন তিনি।

বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, যতদিন কৃষিবিদ আছে ততদিন এ দেশে কেউ না খেয়ে থাকবে না। দেশ বরেণ্য কৃষিবিদরা দেশের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদক ও র‌্যাগিংমুক্ত রাখতে ছাত্রলীগের প্রতিজ্ঞাকে সাধুবাদ জানিয়ে সুস্থ ও সুন্দর ধারার রাজনীতি চর্চা করার জন্যে ছাত্র-ছাত্রীদের আহবান জানান।