দেশের পোল্ট্রি শিল্পের জন্য বহুল আকাঙ্খিত পণ্য ARBOCELⓇ এর যাত্রা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:দেশের পোল্ট্রি শিল্পের জন্য বহুল আকাঙ্খিত পণ্য ARBOCELⓇ-এর যাত্রা শুরু। বাংলাদেশের পোল্ট্রি সেক্টরে সকল স্টেক হোল্ডারদের নিকট বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে ARBOCELⓇ বাংলাদেশের বাজারজাত শুরু করেছে দেশের পোল্ট্রি সেক্টরে সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান প্লানেট ফার্মা লি:।



এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ আগষ্ট) রাজধানীর RADISSON BLU হোটেলে " PLANET Planet Pharma Ltd. এবং J. RETTENMAIER & SÖHNE (JRS)-এর যৌথ আয়োজনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্লানেট ফার্মা লি:-এর সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মোহাম্মদ রিয়াজ গৌরি। তিনি আগত সকলকে উপস্থিত আলোচকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।



প্লানেট ফার্মা লি:-এর পরিচালক জনাব ফাহাদ হাবীব এগ্রিলাইফকে জানান গত কয়েক দশকে এনিম্যাল নিউট্রিশনিষ্টরা পোল্ট্রি ফিড ফর্মুলেশনে ফাইবারের দিকে তেমন একটা মনোযোগ দেননি। ধাপে ধাপে গবেষকদের পাশাপাশি পোল্ট্রি শিল্পও ফাইবারের গুরুত্ব উপলব্ধি করে। পোল্ট্রিতে ফাইবারের ব্যবহার সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে একটি প্রধান গবেষণার বিষয় ছিল এবং এখনও রয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় দেশের পোল্ট্রি শিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এবং সংশ্লিষ্টদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা পণ্যটি বাজারজাত শুরু করেছেন।



অনুষ্ঠানে JRS, India Pvt. Ltd.-এর Managing Director Mr. Rohit Raut  J. RETTENMAIER & SÖHNE কোম্পানীর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি আগতদের নিকট তুলে ধরেন। সুস্থ ও আধুনিক জীবনযাপনের জন্য সকল ক্ষেত্রে তারা বিশ্বব্যাপি অবদান রাখছে। সমগ্র বিশ্বের ৯০টি দেশে তাদের ৩৫০০ জন লোক এ কোম্পানীতে কর্মরত রয়েছেন। ১৪০ বছরের পুরাতন এক কোম্পানী JRS এখন বিশ্বব্যাপি একটি ব্র্যান্ডে পরিণত। তাদের পণ্যগুলি হলো পরিবেশবান্ধব যা বর্তমান সময়ের জলবায়ুর বিরূপ পরিবেশ মোকাবেলা করে নিরাপদ পণ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে সক্ষম।



JRS-এর Head of Business Unit Livestock Applications Dr. Manfred Pietsch তার মূল প্রবন্ধ "INSOLUBLE FIBRE- AN "ESSENTIAL NUTRIENT" IN POULTRY NUTRITION আলোচনায় ARBOCELⓇ এর নানা বিষয়গুলি গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরেন।



Dr. Manfred Pietsch বলেন, বিভিন্ন ফাইবার উৎসের একটি প্রধান স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল দ্রবণীয়তা। যেমন সবজির শিকড়,আপেল,কমলা এবং চিনির বীট প্রধানত দ্রবণীয় ফাইবার (অর্থাৎ পেকটিন) সরবরাহ করে। আবার সব ধরনের তুষ বেশি অদ্রবণীয় (অর্থাৎ সেলুলোসিক) ফাইবার সরবরাহ করে। বিভিন্ন গবেষকরা বিগত ১০ বছরে নিবিড়ভাবে লিগনোসেলুলোজের উপর ভিত্তি করে গবেষণা করে দেখেছেন কমপক্ষে ৬০%  ক্রুড ফাইবার অদ্রবণীয়।

তিনি আরো বলেন অদ্রবণীয় ফাইবারগুলি ফিডে ব্যবহার যথেষ্ট  ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। খাদ্যে মাঝারি মাত্রার অদ্রবণীয় ফাইবার থাকলে স্টার্চের হজম ক্ষমতা বেশি এবং হজমের হার দ্রুত হয়। দ্রুত উত্তরণ হারের কারণে অন্ত্রের ট্র্যাক্টে বিষাক্ত পদার্থের কম জমা হয়। অন্ত্রের ক্রিয়াকলাপে অদ্রবণীয় ফাইবারের প্রভাব গিজার্ডে জমা হওয়ার ক্ষমতা থেকে উদ্ভূত হয়,যা অন্ত্রে হজমের হার এবং পুষ্টির হজম নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়াও অদ্রবণীয় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলি লেয়ার এবং ব্রিডারে রোগের প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ করে।



অদ্রবণীয় ফাইবারগুলি তাদের ভৌত রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সমস্ত পোল্ট্রির ওয়েট লিটার,ক্যানিবালিজম এবং ফেদার পিকিং প্রতিরোধ করে। অতিরিক্তভাবে অদ্রবণীয় ফাইবার ব্রয়লার ব্রিডারকে খাদ্য গ্রহনে উৎসাহিত করে। অন্যদিকে দ্রবণীয় ফাইবারগুলি প্রোটিন,স্টার্চ এবং চর্বিগুলির হজম ক্ষমতা হ্রাস করে যোগ করেন Dr. Manfred Pietsch ।

সমাপনী বক্তব্যে প্লানেট ফার্মা লি: -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব শাহ্ হাবিবুল হক অনুষ্ঠানে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পোল্ট্রি খাদ্যের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে খামারী পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে এবং গবেষক, ফিডমিলার এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। উদ্যোক্তারা যদি তাদের স্বস্ব ক্ষেত্রে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব পণ্যগুলির দিকে সু-নজর তেন তবেই নিরাপদ পোল্ট্রি পণ্য উৎপাদনে আমাদের এ এ উদ্যোগ স্বার্থক হবে বলে মনে করেন তিনি।

কর্মশালায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন প্লানেট ফার্মা লি: -এর পরিচালক জনাব মোসলেহ উদ্দিন, জনাব বদরুল হাসান খানসহ প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।



অনুষ্ঠানের শেষ দিকে ছিল আকর্ষণীয় র‌্যাফেল ড্র যেখানে আই ফোন প্রো-ম্যাক্স ১৩ জিতে নেন চট্টগ্রামের প্রগ্রেসিভ হ্যাচারির জনাব ইমরান উদ্দিন সাগর।



ARBOCELⓇ বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্পে ফিড উৎপাদনে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন অনুষ্ঠানে আগত নিউট্রিশনিষ্টরা। কর্মশালায় সারা দেশ থেকে পোল্ট্রি সেক্টরের পুষ্টিবিদ, বিজ্ঞানী, ব্যাংকার, পোল্ট্রি  বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ প্রায় ১৭৫ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে সকলে মিলে এক নৈশভোজে অংশগ্রহন করেন।