প্রান্তিক মাছ চাষিদের সুখে-দুখে "এআইটি ফিড" সবসময় পাশে

মোঃ আসিফ-উজ-জামান, মার্কেটিং ম্যানেজার, এআইটি ফিড:বর্তমানে প্রান্তিক মাছ চাষিরা সবচেয়ে অবহেলিত। কারণ তাদের উন্নয়নে প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত সবাই পৌছাতে পারে না। ফলে তাদের মাছ চাষসহ অন্যান্য কর্মকান্ডের সঠিক ও নব্য-নতুন তথ্য-প্রযুক্তিগত জ্ঞান-বিদ্যার অপ্রতুলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। দিন দিন তারা পিছিয়ে পড়ছে। খামার থেকে লাভের মুখ না দেখে, লসের বোঝা মাথায় নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ভ্রান্ত ও মরীচিকাময় সুখ লাভের আশায়। তবে প্রান্তিক মাছ চাষিদের দোরগোড়ায় সুখে-দুখে সবসময় পাশে থেকেছে প্রাণি ও মৎস্য খাতে রেডি ফিডের পথিকৃৎ এআইটি (এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাস্ট) ফিড। তাদের একদল চৌকষ মাঠ কর্মী মাঠ পর্যায়ে প্রান্তিক চাষিদের উন্নয়নে নানান কর্মকান্ড পরিচালিত করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি মেহেরপুরের মাছ চাষিদের জন্য এআইটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। উক্ত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন এআইটি ফিডের হেড অব মার্কেটিং জনাব মোহাম্মদ রেজাউল হাসান এবং প্রশিক্ষক ছিলেন মৎস্যবিদ নূরে রাসূল।

মৎস্যবিদ তার প্রশিক্ষণে চাষিদের হাতে-কলমে যেসব বিষয়গুল প্রশিক্ষণ প্রদান করেন সেগুলো হলো - চাষের ও মাছের ধরণ, মাছের হ্যাচারী ও পোনা প্রাপ্তি, পুকুর প্রস্তুতি, পানি সংযোজন-বিয়োজন, পানিতে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদন, মাছ চাষের জন্য পানির উপযুক্ততা, পোনা সংগ্রহ ও পরিবহণে সতর্কতা, পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময় ও করণীয়, আদর্শ মজুদ ঘনত্ব নির্ণয়, প্রয়োগকৃত খাদ্যের ধরণ (পাউডার ও পিলেট সাইজ) এবং প্রয়োগ পরিমাণ (দেহ ওজনের ভিত্তিতে শতকরা হার) নির্ধারণ, নিয়মিত নমুনায়ন ও মাছের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ, পুকুরের পরিবেশ উত্তম রাখার জন্য বেস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রাকটিস (বি.এম.পি) হিসেবে কি কি কাজ নিয়মিত করতে হয়, পানিতে উৎপন্ন ক্ষতিকর গ্যাস দূরিকরণ পদ্ধতি, আংশিক আহরণ ও বাজার ব্যবস্থাপনা তদারকি, বাজারজাতকরণের সঠিক ও সহজ চ্যানেল ও পন্থা গ্রহণ, এবং সবসময় লক্ষ্য রাখা যে, “মাছ একটি অত্যন্ত পঁচনশীল পন্য” ফলে যা করণীয় তা পূর্বেই পরিকল্পনা মাফিক করা, ইত্যাদি।

এই কর্মশালাটি আয়োজন করতে এআইটি মাছ চাষিদের একেবারে দোর গোড়ায় পৌছে যায় এবং তাদের সাথে আন্তরিকতা, সখ্যতা এবং একাত্মতা’র সম্পর্ক গড়তে তাদেরকে নিয়ে উঠান বৈঠকে বসে। চাষিদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয় শ্রেণি অংশগ্রহণ করেন। তারা সাগ্রহে ও মনযোগ সহকারে মাছ চাষের উপর জানা-অজানা সব তথ্য প্রশ্ন-উত্তর পর্বে জেনে নেন এবং তাদের ভুলগুলো শুধরে নেন।

পরে চাষিদের একটি নিকটস্থ পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদেরকে পুকুরের পানি ও মাটির প্রাকৃতিক, জৈবিক, রাসায়নিক ও ভৌতিক উপাদানগুলো সচক্ষে দেখিয়ে এদের আন্ত:পারষ্পরিক সম্পর্ক, মাছ চাষে তাদের ভূমিকা এবং উপকারিতা-অপকারিতা জানানো হয়। এরপর জাল টেনে মাছ ধরে নমুনায়ন দেখানো হয়। মাছের গ্রোথ বা বর্ধণ কেমন বা কত হয়েছে এবং কী পরিমান খাদ্য খেয়েছে তার একটা অনুপাত বের করে শেখানে হয় ‘মাছের খাদ্য রুপান্তর হার বা এফ.সি.আর। এছাড়াও ‘মাছ চাষে অন্যান্য খুঁটিনাটি বিষয় অথচ সেগুলো পালনে লাভ বয়ে আনতে পারে’ সেসবও প্রদর্শনী পুকুরে দেখানো ও শেখানো হয়।

পরিশেষে, প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দূর-দুরান্ত থেকে আগত মাছ চাষিদেরকে এআইটি’র পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও মোবারকবাদ জানানো হয়। মোদ্দা কথায় বলা হয় যে, মাছ চাষে শতভাগ লাভবান করতে হলে (১) খরা (২) বন্যা (৩) চুরি এবং (৪) বিষ প্রয়োগ থেকে পুকুর মুক্ত রাখার চেষ্টা অব্যহতভাবে রাখতে হবে, অন্যদিকে (১) মানসম্মত পোনা (২) গুণগত মানের খাদ্য (৩) উন্নত চাষ ব্যবস্থাপনা এবং (৪) অভিজ্ঞ চাষি ও মৎস্যবিদের সহয়তা ও পরামর্শক্রমে মাছ চাষকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে এআইটি ফিড পরিবার সবসময় পাশে আছে বলে তাদের আশ্বস্ত করে। পারস্পরিক কল্যাণ কামনা এবং আবারও এরুপ প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করে অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি হয়।