সয়াবিন মিল-এর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ভারতের পোলট্রি শিল্পোদ্যোক্তারা

বিজনেস প্রতিনিধি:সয়াবিন মিল-এর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ভারতের পোলট্রি শিল্পদ্যোক্তারা। বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং এর পক্ষ থেকে সয়াবিন মিল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ জারির একদিন পরেই ভারত সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছে পোলট্রি ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া।

বাংলাদেশ থেকে চুক্তির বাকী সয়াবিন মিল সরবরাহের নিশ্চয়তা চেয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য চিঠিতে চলতি বছরের অন্তত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত চুক্তির অবশিষ্ট  সয়াবিন মিল সরবরাহের অনুরোধ জানিয়েছে ভারতের পোলট্রি ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। পোলট্রি ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট রমেশ চন্দ্র ক্ষেত্রি স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় সয়াবিন মিল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং বাংলাদেশ থেকে ভারতে সয়াবিন মিল রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট ইস্যু বন্ধ করে দেয়। ফলে ভারতে পোলট্রি, মৎস্য ও ডেইরি ফিড উৎপাদ বিঘ্নিত হয়ে পড়বে।

তবে দেশের খামারি থেকে শুরু করে এর সাথে জড়িত সকল শ্রেণীর শিল্পোদ্যোক্তারা শুরু থেকেই সয়াবিন মিল রপ্তানির বিরোধিতা করে আসছিলেন। সম্প্রতি একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে ভারতে সয়াবিন মিলের রপ্তানীর বিপক্ষে শক্ত অবস্থান তুলে ধরেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব ডা. শেখ আজিজুর রহমান। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ এ ব্যাপারে শক্ত অবস্থানে থাকায় এটি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন একাধিক উদ্যোক্তারা।

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আহসানুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এমনিতেই এ পণ্যের দর
বাড়তি ছিল। পাইকারি বাজারে হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ এক মাস আগেও যা ছিল ৪৪-৪৬ টাকা। আর রপ্তানীর খবরে সয়াবিন মিল বিক্রয় হচ্ছে ৫৫-৫৭ টাকা। দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সর্বোপরী ভোক্তাদের প্রাণিজ পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য এর একটি স্থায়ী সমাধান চান জনাব আহসানুজ্জামান।

সরকারের রপ্তানী বন্ধের এ সিদ্ধান্তকে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন এ সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা। তারা বলেন, নিকট অতীতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কথা এ দেশের জনগণ ভুলে যায়নি। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে ছিল তাদের নিজের দেশের জনগণের জন্য, দেশ প্রেমের জন্য। এটি নিশ্চয়ই তাদের দেশের জন্যএকটি ইতিবাচক দিক। তাদের শিল্পের কথা মাথায় রেখে  তাদের জনগণের জন্য যা ভালো তারা এটা সবসময় করে থাকে। কাজেই আমাদের দেশের জন্য, আমাদের জনগণের জন্য, আমাদের শিল্পের জন্য সর্বোপরী আমাদের পুষ্টি নিরাপত্তার কথা আমাদেরকেই ভাবতে হবে বলে মনে করেন উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সকলে। তারা সরকার ও ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ-এর সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।