উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পোল্ট্রিতে গাট হেলথ্ সুরক্ষা নিশ্চিত জরুরি

জাহিদ হাসান টাঙ্গাইল থেকে ফিরে:পোল্ট্রিতে বর্তমান সময়ে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নিরাপদ উপায়ে গুণগত মান ঠিক রেখে খাদ্য উৎপাদন করা। মুরগিতে পুষ্টি, স্বাস্থ্য এবং এনিমেল ওয়েলফেয়ার-এর মধ্যে একটি ভারসাম্য মূলক কাজ করে ডিম ও ব্রয়লার উৎপাদন করা এখন জরুরি। এজন্য পোল্ট্রি খামারীদের গাট হেলথ্-এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)  টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা রিসোর্টে এস কে এল এনিম্যাল হেলথ্ এর আয়োজনে ও ইভোনিক বাংলাদেশ-এর সহযোগীতায় "মুরগীর আন্ত্রিক সমস্যা ও তার প্রতিকার" শীর্ষক আলোচনায় পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসকেএল ও ইভোনিক টিম ছাড়াও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিসহ প্রায় ৬০ জন ফিড মিল মালিক, পোল্ট্রি খামারিরা অংশগ্রহন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব আসিফ আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইভোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ সনজিৎ চক্রবর্তী।

এসকেএল এনিমেল হেলথ-এর এমডি আবু সাইদ-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইভোনিক বাংলাদেশের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার ডা. মো. মাসুদুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, নিরাপদ পোল্ট্রি পন্য উৎপাদন করতে হলে খাদ্যকেও নিরাপদভাবে তৈরী করতে হবে। গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে ফিডের উৎপাদন ব্যয় কমানোর বিষয়টি চ্যালেঞ্জ মনে হলেও অসম্ভব কিছুই নয়। একটি কার্যকর টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে এ ধরনের কর্মশালা করা গেলে সকলেই উপকৃত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আলোচকরা।

বিশষজ্ঞরা আরো বলেন, ভোক্তারা এখন নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের ব্যাপারে অনেক সচেতন। কাজেই মেধাবী জাতি হিসেবে পরবর্ত্তী প্রজন্মকে গড়ে তুলতে চাইলে আমাদের সকলকেই আন্তরিক হতে হবে। আলোচকরা আরো বলেন, ভালোমানের ফিড তৈরী করতে চাইলে বিজ্ঞানী ও গবেষকসহ সকল স্টেক হোল্ডারদের এক সাথে কাজ করতে হবে।

পোল্ট্রি খাদ্যের রূপান্তর হার উন্নত করা, ওজন বৃদ্ধি, মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবে অন্ত্রে উপস্থিত অনুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য একটি আদর্শ প্রোবায়োটিক প্রয়োজন যা অপকারি অনুজীবকে দমিয়ে রাখে এবং পোল্ট্রির অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার নিমিত্তে পুষ্টির চলাচল এবং অন্ত্রের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে। শুধু তাই নয়, খাদ্য তৈরির বিভিন্ন ধাপে যেসব প্রোবায়োটিক-এর গুনগত মান অক্ষুন্ন থাকবে।



অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন SKL Animal Health Company Ltd.-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব আবু সাইদ। ইভোনিক বাংলাদেশ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ সনজিৎ চক্রবর্তী, তিনি অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্বখ্যাত ইভোনিক কোম্পানির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন।  তিনি বলেন, ইভোনিক মূলত আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর পণ্য নিয়ে কাজ করে। ইভোনিক-এর GutGare®  (Probiotic) পণ্যটি বাংলাদেশের ফিড ইন্ডাস্ট্রিস তথা পোল্ট্রি সেক্টরের সকল স্টেক হোল্ডারদের নিকট বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করেন।

ডা. মো. মাসুদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে খাদ্যের কাঁচামালের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেই সাথে আবহাওয়াগত প্রতিকূলতায় কাঁচামালের গুনগত মান কমে এসেছে। এছাড়া মুরগীর আন্ত্রিক স্বাস্থ্য ক্ষতি হবার বিভিন্ন কারন এবং সহজ প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি পরিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে ইভোনিক এনিম্যাল নিউট্রিশনের পথ চলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি GutGare® এর উপকারিতা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন।

সবশেষ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব আসিফ আহমেদ, তিনি সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন এবং এসকেএল ও ইভোনিক এর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে দেশের স্বনামধন্য সুপরিচিতি SKL Animal Health Company Ltd. প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের এগ্রো সেক্টরে অত্যন্ত সুনামের সহিত সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ সেক্টরে অনবদ্য অবদান রাখতে পোল্ট্রি ও ডেইরী শিল্পের স্বার্থে খামারীদের কল্যাণে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে।