রাজধানী প্রতিনিধি:‘বছরব্যাপী ফল চাষে, অর্থ পুষ্টি দুই-ই আসে’ এ প্রতিপাদ্যে আজ থেকে তিন দিনব্যাপী (১৬-১৮ জুন) শুরু হয়েছে জাতীয় ফল মেলা ২০২২। করোনা দুর্যোগ কাটিয়ে বিগত দুই বছর পর এইবার আবার জাতীয় ফল মেলা ২০২২ আয়োজন করা হয়েছে। এবারের এই মেলায় দর্শনার্থীরা ফল প্রদর্শনীর পাশাপাশি ফল উৎপাদনে নানা ধরনের প্রযুক্তি প্রদর্শন করছেন। এর পাশাপাশি তারা নিরাপদ ফল কিনতেও পারবেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন চত্বরে আজ সকালে এই মেলার উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।
পরে কেআইবি মিলনায়তনে জাতীয় ফল মেলা উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে যোগ দেন মন্ত্রী। সেমিনারে কৃষিসচিব মো: সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো: বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সংস্থা প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিএসও বাবুল চন্দ্র সরকার। তিনি জানান বর্তমানে দেশে দেশি বিদেশি ৭৮ রকমের ফল চাষ হচ্ছে। তবে উৎপাদিত ফলের শতকরা ৬০ ভাগই হচ্ছে আম, কলা ও কাঁঠাল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ৯ টি স্টল নিয়ে সজ্জিত প্যাভিলিয়নে দেশী বিদেশি নানা ধরনের ফলের সমাহার ঘটেছে। প্রায় ১০০ ভ্যারাইটির আম প্রর্দশন করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, হাড়িয়াভাঙ্গা, ব্রুনাই কিং, বানানা ম্যাঙ্গো, মিয়াযাকি (সূর্য ডিম), সূর্যপুরী ইত্যাদি। এছাড়াও জাতীয় ফল কাঠাল, সুস্বাদু লিচু, আনারস সহ প্রায় ২০০ প্রকার বিভিন্ন ফলের সমারোহ ঘটানো হয়েছে এবারের এই ফল মেলায়।
এবারের ফল মেলায় আনারসের নতুন জাত এমডি ২ প্রদর্শিত হচ্ছে। এর বৈশিষ্ট হচ্ছে এই আনারস অন্যান্য জাতের আনারস অপেক্ষা চার গুণ বেশি ভিটামিন সমৃদ্ধ, খোসা ছাড়ানোর সময় পাতলা চোখ সহ অপসারণ করা যায়, খেতে সুস্বাদু। বাংলাদেশে এমডি ২ জাতটি মাননীয় কৃষি মন্ত্রীর উদ্যোগ কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং ও বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়নে প্রকল্প এই আনারস সম্প্রসারণ করছে। এবারের ফল মেলায় এমবি ২ আনারসের প্রদর্শনী হচ্ছে।
মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে এবং রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল ক্রয় করতে পারছেন। সরকারি ও বেসরকারি মিলে ৬৭টি প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশগ্রহণ করছে।