'মুক্ত করো রুদ্ধ চেতন' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু: পিদিম ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ রুমে শনিবার (২৮ জানুয়ারি ২০২৩) লেখক এডভিন বরুন ব্যানার্জী রচিত  'মুক্ত করো রুদ্ধ চেতন' গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত, প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, বাংলা একাডেমির সভাপতি, সেলিনা হোসেন।

উইং কমান্ডার (অব.) খ্রীষ্টফার অধিকারী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গবেষক, বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক ড. তপন বাগচী। অনুষ্ঠানে “মুক্ত করো রুদ্ধ চেতন” বইয়ের লেখক স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বক্তব্যে বইটির লেখক সমসাময়িক বিষয়াবলি কীভাবে তাঁকে আন্দোলিত করেছে এবং বই লেখার পিছনে প্রেরণা যুগিয়েছে তা চমৎকার ভাবে তুলে ধরেন। বইটি লিখতে যাঁরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রেরণা দিয়েছেন এবং সুন্দর সুন্দর মতামত দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের প্রতি তিনি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

বিশেষ বক্তা সিসিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক, জুলিয়েট কেয়া মালাকার তাঁর বক্তব্যে লেখকের সমসাময়িক বিষয়াবলির উপর বিশদ জ্ঞানের ভূয়সী প্রসংশা করেন। তিনি বলেন, বইটিতে যে বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করা হয়েছে তা নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। বইটি পড়ে পাঠক,পাঠক সমাজ এবং সর্বোপরি সমাজ উপকৃত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংক্ষিপ্ত আলোচনায় গ্রন্থ আলোচক লেখক ও এনজিও কর্মী ড. ফ্লোরেন্স লিপিকা সমাদ্দার বলেন, বইটিতে লেখক তাঁর লেখনি দিয়ে বহুমুখী প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বইটি নতুন পাঠকদের কাছে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে। গ্রন্থ আলোচক, লেখক ও লিটল ম্যাগ সম্পাদক, মি. আহমেদ ফয়েজ বলেন, লেখক তাঁর লেখনী দিয়ে সমাজ,ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিষয়গুলোকে যেভাবে পাঠক সমাজের কাছে তুলে ধরেছেন, তা তাঁর গভীর জ্ঞান ও শিল্পকর্মের-ই বহি:প্রকাশ। পাঠক বই-টি পড়ে নানা উপজীব্য খুঁজে পাবে। যা তাকে জ্ঞান অন্বেষণের ক্ষুধা মিটাবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন লেখক রঞ্জনা বিশ্বাস, মি. জুলিয়াস অধিকারী, রেভারেন্ড মিলিতা দাস প্রমূখ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. তপন বাগচী বলেন, লেখক সমসাময়িক বিষয়াবলি তাঁর লেখনী দিয়ে সাবলীল ভাবে তুলে ধরেছেন। বইটিতে একই সাথে সমাজ,ধর্ম ও রাষ্ট্রীয় নানা বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। সুন্দর সুন্দর উপমা এবং যুক্তি দিয়ে তাঁর লেখনীকে সমৃদ্ধ করেছেন। লেখক যে একজন ভালো পাঠক বইটিতে তারও প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠেছে। তিনি লেখককে আরো ভালো বই উপহার দেয়ার আহবান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিনা হোসেন বলেন, লেখক “মুক্ত করো রুদ্ধ চেতন”বইয়ের মাধ্যমে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বিদ্যমান মূল্যবোধের উপর আঘাত করেছেন। যেন সমাজে পরিবর্তন আসে। এ বইটি পাঠকের নিকট দিকনির্দেশনা হিসাবে কাজ করবে। লেখক তাঁর লেখনী দিয়ে আমাদের মাঝে মহাদিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছেন। যারা পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য রাজনীতি করেন তাঁরা যদি বইয়ের ভাবনাকে সমাজের মানুষের কাছে নিয়ে যান তাহলে আমাদের দেশ একটি মহান দেশে পরিনত হবে। লেখকের বিচিত্রমূখী চিন্তা ভাবনা পাঠকের কাছে ভিন্নমাত্রা যোগ করবে। আমরা সবাই বইটি পড়ে সৎ পথে চলব অন্যকেও সে পথে চলতে উৎসাহিত করব।

সভাপতির বক্তব্যে উইং কমান্ডার (অব.) খ্রীষ্টফার অধিকারী বলেন, বইটিতে লেখক সমাজ পরিবর্তনের যে ডাক দিয়েছেন তা সত্যিই একটি সাহসী পদক্ষেপ। বইটিতে পৌরাণিক ভাষার পাশাপাশি আধুনিক ভাষার চমৎকার মেলবন্ধন খুঁজে পাওয়া যায়।

সমাপনী বক্তব্যে জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর সেলিম (সিনিয়র পরিচালক, কার্যক্রম, পিদিম ফাউন্ডেশন) বলেন, বইটিতে লেখক তাঁর লেখনি দিয়ে সমাজ, ধর্ম এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিষাবলীর উপর যুগোপযোগী এবং যুগান্তকারী ভাববিনিময় করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংনীয়। বই-টি পড়ে নতুন পাঠকদের মধ্যে সাহিত্য চর্চাবোধ জেগে ওঠবে।

অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন জনাব মোঃ শফিউল্লাহ শোভন, সিনিয়র পরিচালক (এন্টারপ্রাইজ, প্রশাসন ও মনিটরিং) পিদিম ফাউন্ডেশন। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন, জয়েস তিথি, উপ-পরিচালক (মানবসম্পদ ও আরটিডি) এবং সোমা সরকার, সহকারী পরিচালক (অর্থ), পিদিম ফাউন্ডেশন ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক ড. মোস্তফা আলী রেজা হোসেন ১৯৮৮ সালে বাকৃবি থেকে স্নাতক, ১৯৯৫ সালে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব স্টার্লিং থেকে স্নাতকোত্তর, ১৯৯৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও ২০০০ সালে জাপান থেকে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। বাকৃবির মৎস্য জীববিদ্যা ও কৌলিতত্ত্ব বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে অধ্যাপনা করছিলেন তিনি।