নতুন প্রজন্মকে ইন্টানেটের আসক্তি থেকে দূরে রাখতে হবে


রাজধানী প্রতিনিধি:আজ থেকে ১৫/২০ বছর আগের কথা যখন ছেলে-মেয়েরা মাঠে খেলাধুলা করে সময় কাটিয়েছিল। সেখানে এখনকার প্রজন্ম কাটাচ্ছে ফেইসবুক, টিকটক, ইউটিউব কিংবা ইন্টারনেটে। তথ্য আদান-প্রদানে মোবাইল ফোন বদলে দিয়েছে শহর ও গ্রামের মানুষের জীবন। পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে মোবাইল কার্যত বিপ্লব ঘটিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রজন্মের বিশেষ করে টিনএজ (তের থেকে উনিশ বছরের) ছেলে-মেয়েরা দৈনিক নয় ঘন্টা সময় ব্যয় করছে ফেসবুক আর ইন্টারনেটে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেমন পুরো বিশ্বকে সামনে আনা যায়, জ্ঞান অর্জন করা যায়, তেমনি ব্যবহারকারীদের বিপথগামী করে। তাই আমাদের উচিত নতুন প্রজন্মকে ইন্টানেটের আসক্তি থেকে দূরে রাখা আর এজন্য আমাদের "শখ"-এর শখের মতো ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী বেশি বেশি দরকার।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) বিকেল ৪ টায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা-এর নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারীতে তিন দিনব্যাপী (৪-৬ নভেম্বর) "শখ" নামক এ ব্যতিক্রমী মুদ্রা, ডাক টিকেট ও দেশলাইয়ের প্রদর্শনীটির উদ্বোধনকালে অতিথি বক্তারা এমন অভিমত তুলে ধরেন। প্রদর্শনীটি আগামীকাল ৫ নভেম্বর সকাল ১০ টা থেকে বেলা ২টা এবং ৬ নভেম্বর সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

বাংলাদেশর তিনজন সৌখিন সংগ্রাহকদের রকমারী আইটেম (মুদ্রা, ডাকটিকেট ও দেশলাই) নিয়ে তিন দিনব্যাপী (৪-৬ নভেম্বর) এ ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে উদ্বোধন করেন শখ প্রদর্শনীর এ মনোজ্ঞ আয়োজন।

কৃষিবিদ ড. কামরুজ্জামান কায়সার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও গেষ্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যথাক্রমে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক জনাব মোঃ কামরুজ্জামান ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।



তিনজন এক্সিবিটর সর্বজনাব ড. কামরুজ্জামান কায়সার, মোঃ রবিউল ইসলাম ও খন্দকার শাকিল হকের ডাকটিকেট, উদ্বোধনী স্মারক খাম, স্যুভেনীর শীট, প্রাচীন ও আধুনিক মুদ্রা, বিশ্বের দু'শতাধিক দেশের দুর্লভ ব্যাংক নোট ও দেশলাই বক্স প্রদর্শনীতে স্থান পায়। উপমহাদেশের বেঙ্গল সুলতান, দিল্লী সুলতান মোঘল সম্রাটদের পাচঁশ বছরের পুরনো ধাতব মুদ্রা ইতিহাস ঐতিহ্য ও কৃষ্টি সভ্যতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

ডাকটিকেটের মধ্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ব ও পরবর্তী সময়ের অনেক ঐতিহাসিক মূল্যবান স্ট্যাম্প স্যুভেনীর শীট, উদ্বোধনী স্মারক খাম ও বিভিন্ন দেশের দুর্লভ ফিলাটেলিক ইস্যু প্রদর্শিত হয়। বিভিন্ন থীমের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডাকটিকেট গুলো সন্নিবেশিত হয় যা দর্শকদের বেশ নজর কাড়ে।



প্রচলিত ব্যাংক নোটের পাশাপাশি পলিমার, হাইব্রিড গোল্ড ফয়েল, স্মারক ও নমুনা নোটও স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। বিশ্বের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন নোট (জিম্বাবুয়ান ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার ও জিম্বাবুয়ান অর্ধ পেনি) দর্শকদের আকৃষ্ট করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ের সকল লিগ্যাল টেন্ডার নোট, নমুনা ও স্মারক নোটের পাশাপাশি এ যাবৎ অবমুক্ত ১৮টি রৌপ্য ও স্বর্ণের স্মারক ধাতব মুদ্রা প্রদর্শনীতে আগত দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে।



প্রদর্শনীটির টাইটেল স্পনসর হিসেবে দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় তৈরী পোশাক রপ্তানীকারক প্রতিষ্ঠান মাইক্রো ফাইবার গ্রুপ CSR কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এগিয়ে আসে। আর অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করে স্বনামধন্য ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থা 'ব্ল্যাক এন অরেঞ্জ'।

ইতিহাসকে সামনে নিয়ে আসে মুদ্রা। আমাদের অনেকেই হয়তো জানি না, ব্রিটিশ ভারতে প্রত্যেকটি রাজ্যে আলাদা মুদ্রার প্রচলন ছিল। হারিয়ে যাওয়া মুদ্রাগুলো এখন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। 'মোগল আমলের মুদ্রা, ব্রিটিশ ভারতীয় ও স্বাধীন ভারতের মুদ্রা, পাকিস্তান, চীন, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের প্রাচীন মুদ্রাসহ পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মুদ্রা। তাই এসব দেখতে ও জানতে এ সুযোগটি হাতছাড়া করবেন না। দেরী না করে চলে আসুন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা-এর নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারীতে।