এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন; মার্চ মাসের ৩০ তারিখ প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করে। নদ-নদী ও হাওরে ব্যাপক পরিমাণে পানি বৃদ্ধি পায়। সুনামগঞ্জে এ বছর ২০১৭ সালের চেয়েও বেশি পানি হয়েছে তবে বাঁধের কাজ ভালো হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পাঁচ হাজার হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা কর্মচারীর বাঁধ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । শত শত শ্রমিকও প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বাঁধের গোড়ায় মাটি ভর্তি বস্তাও ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ রক্ষায়ও কাজ করা হচ্ছে।
আজ প্রতিমন্ত্রী সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগন্জ, জগন্নাথপুর ও দিরাই উপজেলার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হাওর পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব ( উন্নয়ন) জনাব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক(পূর্ব) জনাব মাহবুবর রহমান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) এস এম শহিদুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন; উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওড়ে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ঢলের পানি হাওড়ের পাড় উপচে তাহেরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওড়ে ঢুকছে। সর্বশেষ রোববার রাতে দিরাই উপজেলায় হুরামন্দিরা হাওরে পানি ঢোকে। এখানে জমি আছে ১ হাজার হেক্টর, ক্ষতি হয়েছে ২০০ হেক্টরের।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন; বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের পাশে আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। আগামী বোরো মৌসুমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ, সার দেয়া হবে। এছাড়া, সারা বছর ধরে ভিজিএফসহ বিভিন্ন খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে, যাতে খাদ্যের জন্য কেউ কষ্ট না করে। কৃষকবান্ধব সরকার হাওর অঞ্চলে ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে ধান কাটার যন্ত্রকম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার কৃষকদের দিচ্ছে যাতে করে উৎপাদন খরচ কম লাগে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে এ পর্যন্ত ১৭টি ছোট–বড় হাওর ও বিলের ৫ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। প্রথম দফা পাহাড়ি ঢলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার দ্বিতীয় দফায় ঢল নামতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলায় ধান কাটা হয়েছে ৮৪ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমির। যা মোট ধানের ২৪ ভাগ। এবার হাওর ধান চাষাবাদ হয়েছে দুই লাখ ২২ হেক্টর জমিতে। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১৪ লাখ মেট্রিক টন। আমরা কৃষকদেরকে বলছি, ৮০ ভাগ ধান পাকলে কাটার জন্য।
উল্লেখ্য; সুনামগঞ্জ জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওড়ে ৭২৭টি প্রকল্পে ১শ২২ কোটি টাকায় ৫শ৩৬ কি:মি: ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি। এছাড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দু’তিন দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দেবে তদন্ত কমিটি।