শুধু উৎপাদন বৃদ্ধিই নয়, কৃষির বাণিজিকীকরণ করতে হবে-মেসবাহুল ইসলাম

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম বলেছেন ‘শুধু উৎপাদন বৃদ্ধিই নয়, কৃষির বানিজ্যিকীকরণ করতে হবে। সে লক্ষ্যে পরিকল্পনামাফিক কাজ করছে বর্তমান সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান পলিসি হচ্ছে কৃষি কৃষকের উন্নয়ন। সেটি বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় ও এর অধীন দপ্তর/সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

আজ রোববার নোয়াখালীর সূবর্ণচরে, বিএডিসি খামার প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় আয়োজিত “চট্টগ্রাম অঞ্চলে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়” শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষি সচিব বলেন, ‘ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে কোন আপোষ করা যাবে না। কেননা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা মানেই কিন্তু চালের নিরপত্তা। চালের ক্ষেত্রে আমরা স্বংয়ংসম্পূর্নতা অর্জন করেছি, এটি ধরে রাখতে হবে পাশাপাশি অন্যান্য সবজি, ফলমূল ও বাণিজ্যিক ফসলের আবাদ আরো বাড়াতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হলে আমাদের অনেক কৃষি জমি ও শ্রমিক শিল্পখাতে চলে যাবে এটি অস্বাভাবিক নয়। এসব বিষয় মাথায় রেখে নতুন ধানের জাত ও প্রযুক্তি ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে কম সময়ে, কম ব্যয়ে অল্প জমি থেকে অধিক ফলন আমরা পাই।’ তিনি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী করার আহবান জানান যাতে নতুন জাত ও প্রযুক্তি দ্রুত কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যায়।
 
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএডিসির সূবর্ণচর প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আজিম উদ্দিন। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-এ এফ এম হায়াতুল্লাহ, চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, মো. আসাদুল্লাহ, মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ড. মো. আমজাদ হোসন, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ সুগার ক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট, ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট  এবং জনাব চৈতি সর্ববিদ্যা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোরশেদ আলম, সূবর্ণচর, নোয়খালী।
 
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, বোরো মওসুমে চাষ উপযোগী আমাদের হাতে হেক্টও প্রতি ৮-৯ টনের জাত রয়েছে। এগুলো কৃষক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারলে আগামী দিনের খাদ্য নিরপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা অসম্ভব বিষয় নয়। তিনি নতুন জাতের বীজের জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের সরাসরি ব্রির সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।

কর্মশালায় ব্রির পক্ষ থেকে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- ব্রি সোনাগাজী আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ড. বিশ^জিৎ কর্মকার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষিবিদ জনাব মো. মঞ্জুরুল হুদা, অতি. পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম অঞ্চল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করেন- ড. মো. নাজমুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক (গবেষণা), বিএডিসি। কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল মোমিন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম পরে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ব্রি উদ্ভাবিত জাত ব্রি ধান১০০ সহ কয়েকটি নতুন বোরো জাতের বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক, উপ-পরিচালকগণ, অতিরিক্ত উপ-পরিচালকগণ, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য পরিচালকগণ, যুগ্ম পরিচালক, উপপরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও সিনিয়র সহকারী পরিচালকবৃন্দসহ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও ফলিত পুষ্টি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিডব্লিওডিবি, এসআরডিআই, এআইএস, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী, এটিআই, এলজিডিআই, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।