বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস ২০২২' চ্যাম্পিয়ন হলো Dr.Chashi

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এ ডাঃ চাষী চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড জিতেছে- ক্যাটাগরির  ”অন্তর্ভুক্তি এবং কমিউনিটি সার্ভিসেস- টেকসই এবং পরিবেশ” এর অধীনে। সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত ২৯৬ জন অংশগ্রহণকারীকে পিছনে ফেলে প্রথম হয় AgtriTech ডেটা কোম্পানি (মদিনা টেক লিমিটেড)-এর ডা. চাষী।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে এই অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও বার্তায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “আজ যারা বিজয়ী হয়েছে তারা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আইসিটি অস্কার এপিকটা প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়া, জাপান, চীন, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, হংকং, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোর সাথে লড়াই করবে।

বর্তমানে বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে আমাদের আইসিটি রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ১৪০ কোটি ডলার। আমরা ২০২৫ সালের মধ্যে এটিকে ৫শ কোটি ডলারে উন্নীত করতে চাই আর অন্তত ৩০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। আজ যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে ভবিষ্যতে এই লক্ষ্যমাত্রা তাদেরকে নিয়ে পূরণ করা হবে।“

আগামীর জন্য উদ্ভাবনী প্রযুক্তির দিকে মনযোগী হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশ্বে সফটওয়্যার হচ্ছে ভবিষ্যত অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ২০৪১ সাল নাগাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভিশন-২০৪১ দিয়েছেন, একটি বুদ্ধিদীপ্ত, সাশ্রয়ী, জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবনী স্মার্ট উন্নত বাংলাদেশের, সেখানে মূল চালিকাশক্তি হবে সফটওয়্যার শিল্প থেকে আমাদের রপ্তানী আয়। একই সাথে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পুর্ণভাবে সফটওয়্যার শিল্প নির্ভর হয়ে যাবে।

পুরস্কারের প্রতিক্রিয়ায় মদিনা টেক লিমিটেড -র Dr.Chashi প্রকল্পের সিইও মদিনা আলী বলেন, মাঠ ফসল এবং ছাদ বাগানের পোকা ও রোগ নির্ণয় এবং আধুানক কৃষিতে AI  প্রযুক্তি ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। যদিও আমার টিম, আমাদের উপদেষ্টা এবং সরকারের কৃষি প্রতিষ্ঠানের অপরিসীম সহায়তা এবং পরিশ্রমের সাথে কাজ করে আমরা শক্তিশালীভাবে বেড়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি।



বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এবং বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি জনাব মো. জসিম উদ্দিন।

“সরকার এবং সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ তিনটি দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “ই-গভর্নেস এর প্রকল্পের কাজ দেশিয় আইসিটি প্রতিষ্ঠান করে থাকে। সেই কাজে সংশ্লিষ্ট বেসিস সদস্য প্রতিষ্ঠানকে যেন স্বীকৃত দেওয়া হয়। যে প্রতিষ্ঠান প্রকল্পে কাজ করছে সেখানে যেন ঐ প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ থাকে। এতে করে বিদেশেও কাজ পেতে আমাদের জন্য সহজ হয়।“ পাশাপাশি দেশের ইন্ডাস্ট্রি ব্র্যান্ডিং এবং দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে বেসিসকে সম্পৃক্ত করার দাবিও জানান রাসেল টি আহমেদ।

তিনি আরো বলেন, “আজকে পুরস্কৃত সেরা প্রকল্পগুলো অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। আমরা তাদের গ্রুম করার চেষ্টা করছি। বিগত বছরগুলোতে কয়েকটি ধাপে আমাদের বাংলাদেশি কোম্পানিরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সেখানে। আমরা বিশ্বাস করি যে, এবারও এপিকটা থেকে আমরা অ্যাওয়ার্ড নিয়ে আসবে।“

বেসিস সভাপতি আরো বলেন, “বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডসের মাধ্যমে আমরা সারাদেশের উদ্ভাবনী ও সম্ভাবনাময় তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবাগুলোকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাছাই করি এবং তাদেরকে স্বীকৃতি ও উৎসাহ প্রদান করার লক্ষ্যে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসব পণ্য ও সেবা দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা প্রকাশ করে। এবারের আয়োজনে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে কার্যকরী প্রকল্পগুলোকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়েছে।“

বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এর আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বেসিস অ্যাডভাইজরি স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি এম রাশিদুল হাসান। এছাড়া প্রধান বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন বেসিস প্রেসিডেন্টস অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ এইচ কাফি ও সহ-আহবায়ক হিসেবে ছিলেন বেসিস অ্যাডভাইজরি স্থায়ী কমিটির সদস্য লিয়াকত হোসেন। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সম্মানিত বেসিস সদস্য বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

উল্লেখ্য, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্ভাবনীমূলক পণ্য ও সেবা প্রকল্পসমূহকে স্বীকৃতি দিতে এবারের আসরে মোট ৩৬টি ক্যাটাগরিতে ১০৮টি পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রাপ্ত সেরা প্রকল্পসমূহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অস্কার হিসেবে খ্যাত অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস-এর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।