“জলাতঙ্ক : মৃত্যু আর নয়, সবার সাথে সমন্বয়”- দেশ জুড়ে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২২ পালিত

মো. সামছুল আলম: “জলাতঙ্ক : মৃত্যু আর নয়, সবার সাথে সমন্বয়” এই প্রতিপাদ্যকে  সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস-২০২২ পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং সেমিনারের আয়োজন করা হয় রাজধানীর খামারবাড়ি সংলগ্ন প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের সভা কক্ষে। সেমিনারে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দিনের শুরুতে জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা  বিষয়ক বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালিটি সকাল ৯ টায় প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের চত্বর থেকে শুরু হয়ে খামার বাড়ি মোড় ঘুরে পুণরায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে এসে শেষ হয়। এসময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল, আইসিডিডিআরবিসহ বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারি বৃন্দ জলাতঙ্কের ওপর সচেতনামূলক প্লেকার্ড, পোস্টার ও ব্যানার হাতে নিয়ে র‌্যালী প্রদক্ষিণ করে। প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহজাদা র‌্যালির নেতৃত্ব দেন।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় জলাতঙ্কের ওপর সচেতনতামূলক লিফলেট, পোস্টার ও ব্যানার  বিতরণ করেন ।

সেমিনারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল মো. জুবাইদুর রহমান বলেন, গত ৩০ বছরে নতুন ২০ রোগের আবির্ভাব হয়েছে। এদের অধিকাংশই জুনোটিক রোগ। জলাতঙ্ক একটি অন্যতম জুনোটিক রোগ। এ রোগ প্রতিরোধের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ২০২১ সালে ২২ হাজার কুকুরকে টিকা প্রদান করা হয়। এছাড়াও কুকুর সরাসরি নিধন না করে স্ট্রিট ডগ এর  অভয়ারন্য নির্মানের লক্ষে ২ বিঘা জমি বরাদ্দ করা হয়েছে।



জলাতঙ্ক রোগ ও তা নিরাময়ে করণীয় সম্পর্কে  বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আবু সুফিয়ান,ডা. মো. আজিজুল ইসলাম ও ডা.সুকেশ চন্দ্র বাদয়সহ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো.এমদাদুল হক তালুকদারের-এর সভাপতিত্বে প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহজাদা। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন,এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ২২ লাখ জলাতঙ্ক রোগের টিকা দেয়া হয়েছে।পূর্বের তুলনায় ভ্যাকসিন প্রদানের সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু র‌্যাবিস আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। আমরা যদি সমন্বিতভাবে কাজ করি তাহলে ২০৩০ সালের আগেই জলাতঙ্কমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।

সেমিনারে দেশ বরেণ্য ভেটেরিনারিয়ান ও প্রফেসর ডা. নীতিশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা যদি মন থেকে জলাতঙ্ক নিরাময়ে কাজ করে এসডিজি বাস্তবায়নের সাথে জলাতঙ্ক রোগ ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা সম্ভব।  

ডা. মো. শাহিনুর আলম-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা.এস এম নজরুল ইসলাম,ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব এনিম্যাল হেলথ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা.নূরে আলম সিদ্দিকী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. এনামুল কবীরসহ প্রমুখ।