ProAct 360™ ও HiPhorius™ দেশের পোল্ট্রি ও মৎস্য শিল্পে আশির্বাদ বয়ে আনবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফিড উৎপাদনের কাঁচামাল বিশেষ করে সয়াবিন ও ভুট্টা সহ অন্যান্য প্রায় প্রতিটি কাঁচামালের দামের উর্ধগতির কারণে বর্তমান সময়ে খাদ্য উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকহারে। কাঁচামালের উচ্চমূল্য এবং দুষ্প্রাপ্যতার কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যয়কে হ্রাস করতে গবেষকরা তাই ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সমসাময়িক এসব চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবেলা করে পোল্ট্রি ও মৎস্য শিল্পে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিতে বিশ্বখ্যাত এনিমেল নিউট্রিশন কোম্পানি DSM Animal Nutrition & Health তাদের দুইটি ইনোভেটিভ পণ্য ProAct 360™ এবং HiPhorius™ বাজারজাতকরণের কথা জানিয়েছে।

সোমবার (০১ আগষ্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিশেষজ্ঞরা ProAct 360™ এবং HiPhorius™ তাদের বক্তব্যে পণ্য দুইটির গুণাগুণ ও প্রয়োগ গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরলেন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ফিড উৎপাদনের প্রতিটি কাঁচামালের উচ্চ মূল্য ও সংকট এখন একটি বড় চ্যালেন্জ। ফিডের মান অক্ষুণ্ণ রেখে এখন ফিড ফর্মূলেশনের দিকে জোর দিতে হবে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।



অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসএম বাংলাদেশ-এর সিনিয়র টেকনিক্যাল ম্যানেজার জনাব রুহুল আমিন সরকার। তিনি আগত সকলকে উপস্থিত আলোচকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দ্নে। পণ্য দুটি বাংলাদেশের পোল্ট্রি ও মৎস্য সেক্টরের সকল স্টেক হোল্ডারদের নিকট বর্তমান প্রেক্ষাপটে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা করেন রুহুল আমিন। ProAct 360™ এবং HiPhorius™ বাংলাদেশের বাজারে অচিরেই পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

শুরুতেই বক্তব্য রাখেন William Chin, Manager, Specialty Enzymes APAC । তিনি বর্তমান সময়ে তিনটি চ্যালেঞ্জকে চিহ্নিত করেন যেগুলি হচ্ছে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন কাঁচামালের আকাশচুম্বী দাম, রোগবালাই এবং আগামী দিনের জন্য একটি টেকসই লা্ভষ্টক উৎপাদন। এ চ্যালেঞ্জ গুলো কিভাবে মোকাবেলা করা যায়? কাদের উপরে এই দায়িত্বটা বেশি সেগুলোই তিনি তুলে ধরেন।



তিনি বলেন, পোল্ট্রিতে বার্ড ফ্লু ছাড়াও রানীক্ষেত, কক্সিডিওসিস, গামবোরো, মাইকোপ্লাজমা ইত্যাদি রোগগুলো সব সময় ছিল এবং আগামীতেও এ চ্যালেঞ্জ থাকবে এজন্য আমাদের বায়ো সিকিউরিটি কার্যক্রম উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদন খরচকে সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসতে টেকনই ফিড ফর্মুলেশন এখন বেশি জরুরি। এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব এ শিল্পের সাথে জড়িত নিউট্রশনিস্টদের। কাজেই তাদের এই মহান দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিতে হবে।



এরপর বক্তব্য প্রদান করেন Dr. Abdoreza Soleimani Farjam, Senior Research Scientist, Novozymes, Malaysia. তিনি তাঁর বক্তব্যে Novozyme-DSM Alliance বিষয়গুলি তধ্য উপাত্ত সহকারে তুলে ধরেন। এছাড়া অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত নিউট্রিশনিষ্টদের হাতে কলমে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রোটিয়েজ ProAct 360™ ব্যবহারের কলাকৌশল শিখিয়ে দেন।

সবশেষে "ProAct 360™ : The New Market Standard for ProAct 360™ এবং HiPhorius™: Adding a little wins a lot" শীর্ষক আলোচনায় অংশগ্রহন করেন Kostas Stamatopoulos, Senior Global Product Manager- Phytases.

তিনি বলেন দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রোটিয়েজ ProAct 360™ ফিড উৎপাদনের কাঁচামালের প্রোটিনের অ্যামাইনো এসিডগুলি এবং চতুর্থ প্রজন্মের ফাইটেজ HiPhorius™ ব্যবহার খাদ্য উৎপাদনের কাঁচামালের মিনারেলের সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। ব্যাপক গবেষণা এবং উন্নয়নের মাধ্যমে এ পণ্যগুলি প্রোটিনের ডাইজেস্টেবিলিটি এবং গ্যাস্ট্রো ইনটেস্টাইনাল ইন্টিগ্রিটি বৃদ্ধির মাধ্যমে পোল্ট্রির উৎপাদন নিশ্চিৎ করবে। পাশাপাশি এগুলি ব্যবহারে ফিড উৎপাদন ব্যয়কে কমিয়ে আনবে।

Kostas  আরো বলেন, একটি টেকসই ফিড ফর্মুলেশন করতে বর্তমান সময়ে পণ্য দুটি খামারি এবং ফিড উৎপাদকদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। ফিড উৎপাদনের সময় HiPhorius™ ৯৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় পিলেটিং প্রসেসকালে এর মান অক্ষুন্ন রাখতে সক্ষম। ফসফরাসের হজম ক্রিয়া শোষনের সর্বোচ্চ কার্যক্রম প্রদর্শন করে করে।

এরপরে বিশেষজ্ঞরা আগত নিউট্রেশনিস্টদের সাথে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে মিলিত হন। এ সময় সময়োপযোগী প্রশ্নগুলো সঠিক সমাধান দেন বিশেষজ্ঞরা।



সমাপনী বক্তব্যে Puneet Pokhriyal, Director, South Asia বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ProAct 360™ এবং HiPhorius™ সর্বপ্রথম বাংলাদেশে বাজার করতে পেরে তারা অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি আশা করেন বাংলাদেশের নিউট্রিশনিষ্টরা  অত্যন্ত মেধাবী ও প্রজ্ঞাবান তারা পণ্য দুটি ব্যবহারের মাধ্যমে এ দেশে টেকসই পোল্ট্রি ও মৎস্য উৎপাদনেগিুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।



অনুষ্ঠানে আগত একাধিক নিউট্রিশনিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় বর্তমানে সময়ে এ ধরনের পণ্য ফিড ফর্মূলেশনের জন্য অত্যন্ত জরুরী ও যুগোপযোগী। পণ্যগুলো দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া গেলে তাদের খাদ্য উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা। এ ধরনের পণ্য বাংলাদেশে দ্রুততম সময়ে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়ায় তারা ডিএসএমকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএসএম বাংলাদেশ-এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার ডা: নূর আলম, চয়ন বর্মা এবং এক্সিকিউটিভ কাস্টমার সার্ভিস আহমেদ রিশাদ করিম, ডিএসএম বাংলাদেশ-এর ডিষ্ট্রিবিউটর হ্যালিকন এন্টারপ্রাইজ-এর ম্যানেজিং পার্টনার জনাব মোতাসিম বিল্লাহ (তারেক), পোল্ট্রি কনসালট্যান্ট এন্ড ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস-এর ডিজিএম জনাব মোঃ নাসিমুল হক ও অন্যান্য উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

দেশের পোল্ট্রি শিল্পে ফিড উৎপাদনে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন অনুষ্ঠানে আগত নিউট্রিশনিষ্টরা। কর্মশালায় সারা দেশ থেকে পোল্ট্রি-ফিস সেক্টরের পুষ্টিবিদ, বিজ্ঞানী, পোল্ট্রি-ফিস সেক্টরের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ প্রায় ৮৫ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। সবশেষে সকলে মিলে এক নৈশভোজে অংশগ্রহন করেন।