বিএলআরআই পরিদর্শনে ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) পরিদর্শন করেন এবং ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের সাথে এক মত বিনিময় সভায় অংশ নেন। এসময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রাণিসম্পদ-২) জনাব এস এম ফেরদৌস আলম।

মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএলআরআই-এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। মত বিনিময় সভায় অংশ নেন ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসরিন সুলতানা, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, প্রকল্প পরিচালকগণ এবং শাখাপ্রধানগণ। সভাটি সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক জনাব মোঃ আজহারুল আমিন।

উপস্থিত বিজ্ঞানীবৃন্দ ও কর্মকর্তাগণের পরিচিতি পর্ব সমাপ্ত হবার পরে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গৌতম কুমার দেব ইনস্টিটিউটের পরিচিতি, সক্ষমতা, অবকাঠামোসহ চলমান গবেষণা কার্যক্রমসমূহ এবং বিএলআরআই-এর সাফল্য ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। এসময় ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন।

সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এসময় বলেন, আমাদের নিজস্ব এবং দেশি জাতসমূহের সংরক্ষণ বেশি জরুরি। এরপর এসব জাতের উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং শংকর জাতের উদ্ভাবন করতে হবে যাতে করে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। একই সাথে খামারির চাহিদা বিশ্লেষণ করে এবং সাধারণ জনগনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে প্রচলিত জাত সমূহের উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে রেজাল্ট-ওরিয়েন্টেড এবং অবজেকটিভ-ওরিয়েন্টেড প্রকল্প নিতে হবে। প্রকল্পের সময়সীমা এমন লক্ষ্যমাত্রার হতে হবে যাতে করে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সাথে সাথে সেটি মাঠ পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।

এসময় তিনি জনগণের কাছে বিএলআরআই-কে আরও বেশি করে পরিচিত করার উদ্দেশ্যে বিএলআরআই উদ্ভাবিত ও উন্নয়নকৃত জাতসমূহের নামের সাথে বিএলআরআই-এর নাম সংযুক্ত করার ব্যাপারে পরামর্শ দেন। এছাড়াও বিএলআরআই-এর কার্যক্রম ও সাফল্য জনগনের কাছে পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমে প্রচারের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সচিব মহোদয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সচিব মহোদয় যেভাবে খামার এবং ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে চেয়েছেন, যেভাবে প্রশ্ন করেছেন তা থেকেই প্রমাণ হয় তিনি অনেক জ্ঞানী একজন ব্যক্তি, অনেক বড় মাপের একজন বিজ্ঞানী। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সৌভাগ্য যে তাঁর মত এত বড় একজন বিজ্ঞানীকে আমাদের মাঝে পেয়েছি। তাঁর দিক-নির্দেশনায় বিএলআরআই দেশীয় খামারিদের আগ্রহ ও প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় জাতসমূহের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে গবেষণায় নিয়োজিত হবে এবং দেশের নিরাপদ প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণে ব্রতী হবে। একই সাথে নিরাপদ মাংস দেশের বাইরে রপ্তানি করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যেও বিএলআরআই কাজ করবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, সচিব মহোদয়ের দিক-নির্দেশনায় দুটি প্রতিষ্ঠান পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে গবেষণার মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতে কাজ করবে এবং খামারির চাহিদা ও সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে নতুন নতুন উন্নত প্রযুক্তি মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে।

এর আগে বিকাল ০৩.৩০ ঘটিকায় সচিব বিএলআরআই-এ পৌঁছান। এরপর তিনি বিএলআরআই-এর বিভিন্ন গবেষণা খামার ঘুরে দেখেন এবং এসব খামারের পরিচালনা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় তিনি খামার ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণের জন্য বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। মহপরিচালকসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এসময় সচিব মহোদয় এবং অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে গবেষণা খামার পরিদর্শন করেন।

মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠানের শেষে ক্রেস্ট দিয়ে সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীকে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন।

প্রসঙ্গত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরে ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবারই প্রথমবারের মত বিএলআরআই পরিদর্শনে আসেন।