কৃষি-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে আজকের সাফল্যের অন্যতম কারিগর সিনিয়র কৃষিবিদরা-আনিসুল হক এমপি

রাজধানী প্রতিনিধি: কৃষি-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে আজকের সাফল্যের অন্যতম কারিগর সিনিয়র কৃষিবিদরা। সকল সিনিয়র কৃষিবিদদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা, উদ্যোগ, একাগ্রতা এবং সর্বোপরি দেশমাতৃকার প্রতি নিবিড় ভালোবাসার ফলস্বরূপ কৃষি-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের এ অর্জনে জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গুলি ব্যয় করেছেন সিনিয়র কৃষিবিদরা। তাদের নিরলস পরিশ্রমে ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশের জনসংখ্যা সাত কোটি থেকে ১৭ কোটিতে বৃদ্ধি হলেও দেশের মানুষের বর্তমানে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। খাদ্য উৎপাদনে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন দেশের সকল সিনিয়র কৃষিবিদরা।

কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন ঢাকা মেট্রোপলিটনের আয়োজনে কেআইবি অডিটরিয়ামে আজ শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০ টা থেকে শুরু হওয়া সিনিয়র কৃষিবিদ সম্মিলন-২০২১-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী জনাব আনিসুল হক এমপি।

প্রধান অতিথি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষি গবেষণাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এজন্য তিনি সিনিয়র কৃষিবিদদের গবেষণায় মনোযোগী হওয়ার অনুরোধ করেন। গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে তিনি তার সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন। শেখ হাসিনা সরকারের সকল মহতী উদ্যোগগুলিকে সফল করার জন্য সকল সিনিয়র কৃষিবিদদের যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। স্বাধীনতার ৫০ বছরে কৃষির যে পরিবর্তন তার কারিগর এই সিনিয়র কৃষিবিদগণ। দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য তিনি সকল সিনিয়র কৃষিবিদদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বঙ্গবন্ধু পরিষদের মহাসচিব ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেআইবি’র সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জীবন-যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলি কৃষিসেবায়, কৃষির জ্ঞান-গবেষণা-বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছেন আজকের সিনিয়র কৃষিবিদরা। বর্তমান শেখ শেখ হাসিনা সরকার আজ কৃষিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষিবিদদের সম্মানিত করেছেন, গৌরবান্বিত করেছেন। কাজেই সুন্দর একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে যার অবস্থান থেকে সহযোগিতা করবেন এমনটাই আশা করেন তিনি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় সিনিয়র কৃষিবিদরা সামিল হবেন সেই কাফেলায় এমনটাই আশা করেন সকল কৃষিবিদদের জনপ্রিয় এ নেতা।

অনুষ্ঠানে কৃষিবিদদের জীবন্ত কিংবদন্তী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান নবীন কৃষিবিদদের কর্মস্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দেবে। তিনি অত্যন্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষিবিদরা আর অনুপ্রাণিত হবে। কৃষিবিদরা কেবল কৃষিতে নয় সর্বক্ষেত্রে যেন অবদান রাখতে পারে সেটি কামনা করেন ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা।

কেআইবি ঢাকা মেট্রোর সভাপতি কৃষিবিদ লিয়াকত আলী জুয়েল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেআইবি-এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ প্রফেসর ড. শহীদূর রশীদ ভূঁইয়া এবং মহাসচিব কৃষিবিদ খায়রুল আলম প্রিন্স। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কেআইবি ঢাকা মেট্রোর সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ ড. মো: তাসদিকুর রহমান (সনেট)। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন কেআইবি'র দপ্তর সম্পাদক কৃষিবিদ এম এম মিজানুর রহমান ও কেআইবি'র  সাবেক মহাসচিব মো: মোবারক আলী।

পরে প্রধান অতিথি জনাব আনিসুল হক এমপি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন গ্রন্থাগার উদ্বোধন করেন এবং এর প্রতিটি অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। এসময় কয়েকজন সিনিয়র কৃষিবিদ তাদের লেখা কয়েকটি বই তাকে উপহার দেন। সিনিয়র কৃষিবিদ সম্মিলন-২০২১ উপলক্ষে "গুরুজন" নামের একটি স্মরনিকার মোড়ক উম্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।

'সিনিয়র কৃষিবিদ সম্মিলন’-এর এই দিনটিতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিটিউশন -এর আঙ্গিনা সিনিয়র কৃষিবিদদের পদচারনায় কানায়কানায় ভরে উঠেছিল। অডিটরিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। জুমার নামায ও মধ্যাহ্ন ভোজের বিরতির পর দুপুর ২:৩০ থেকে শুরু হয় প্রানবন্ত উন্মুক্ত আলোচনা এবং মতামত উপস্থাপন। কেআইবি ঢাকা মেট্রোর সাবেক সভাপতি কৃষিবিদ মো: শরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে বেশ কয়েকজন সিনিয়র কৃষিবিদ আলোচনায় অংশগ্রহন করেন। তারা চমৎকার চমৎকার প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন।

একাধিক সিনিয়র কৃষিবিদদের সাথে এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, কেআইবি ঢাকা মেট্রো নিয়মিত এ ধরনের আয়োজন করে চলেছে যা সকল কৃষিবিদদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের ও গৌরবের। সিনিয়র কৃষিবিদদের এই মিলনমেলার মাধ্যমে কৃষিবিদদের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। এ ধরনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়; এ ধরনের আয়োজন নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতা বাড়াবে। তারা আয়োজকদের এ ধরনের অসামান্য অবদানের জন্যে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চা-চক্রের মাধ্যমে বিকেল ৫:০০ টায় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।