প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞানীদের সাফল্য অনেক এবং এ ধারাকে আরো বেগবান করতে হবে

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন দূর্যোগকালীন সময়ে প্রাণিসম্পদের সমস্যাগুলি অতি সহজেই বিজ্ঞানী-গবেষকরা মোকাবেলা করতে পারেন। এখাতের বিজ্ঞানীদের সাফল্য অনেক এবং এ ধারাকে আরো বেগবান করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের বিজ্ঞানীদের আরো নিবিড় সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। গবেষণালব্ধ ফলাফলগুলি সঠিক সময়ে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে তবেই গবেষণাগুলি সার্থক হবে এবং দেশ ও জাতি উপকৃত হবে।

আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানী ফার্মহটরে BARC ট্রেনিং রুমে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের প্রাণিসম্পদ বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান-এর "Research Review 2020-21and Research Program 2021-2022" শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি এবং বরেণ্য প্রাণিসম্পদ সেক্টরের বিজ্ঞানী-গবেষকগণ এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন ড. মোহাম্মদ আজিজ জিলানী চৌধুরী, সদস্য পরিচালক (শস্য বিভাগ) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান-এর মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল জলিল এবং  ডা:নিলুফা বেগম, পরিচালক (গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন) প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মহাখালী, ঢাকা।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সদস্য পরিচালক (প্রাণিসম্পদ) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল-এর লাইভষ্টক বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।

এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিজ্ঞানী-গবেষক উর্ধতন, কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর বিভিন্ন পর্যায়ের বিজ্ঞানী-গবেষকবৃন্দ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

উদ্বেধনী দিনে কারিগরী সেশনে "Animal Health Research, Animal Production Research এবং Poultry production Research"-শীর্ষক তিনটি পেপার প্রেজেন্টেশন করেন বিজ্ঞানী-গবেষকগণ। এছাড়া গবেষণা পত্রের উপর চমৎকার প্রশ্নোত্তর পর্ব ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বিজ্ঞানীরা। এসময় সেশন চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন BARC-এর লাইভষ্টক ডিভিশনের কনসালট্যান্ট ড. কাজী এম কামারুদ্দিন এবং এক্সপার্ট মেম্বার হিসেবে ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. মো:আইনুল হক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডিডি ড. এবিএম খালেদুজ্জামা এবং বাকৃবি'র Animal Science বিভাগের প্রফেসর ড. মো: রকিবুল ইসলাম খান।



কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের উন্নয়ন, নিরাপদ পুষ্টি নিরাপত্তা এবং দারিদ্র্য নিরসনে প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান অনস্বীকার্য। জনসংখ্যার প্রায় ২০% প্রত্যক্ষ এবং ৫০% পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদ খাতের উপর নির্ভরশীল। প্রাণিসম্পদ খাতের সাফল্যের প্রাণীজ আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস দুধ, মাংস ও ডিমের জনপতি প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ খাতে কর্মরত বিজ্ঞানী গবেষকদের কল্যাণে এ ধারা দিনদিন কৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ খাতে সাফল্য পাওয়া গেলেও এ খাতে বেশ কয়েকটি সীমাবদ্ধ রয়েছে যার মধ্যে কম উৎপাদনশীলতা, মানসম্মত ফিড উৎপাদন তৃণ জাতীয় খাদ্যের অপর্যাপ্ততা, নতুন নতুন রোগের প্রাদুর্ভাব এবং পুরানো রোগের সংক্রমণ, অপর্যাপ্ত ভেটেরিনারি সেবা ও প্রাণী স্বাস্থ্যসেবা, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব, অনুন্নত বিপণন ব্যবস্থা ইত্যাদি।

এ সমস্ত সীমাবদ্ধতাগুলি অতিক্রম করে আধুনিক জৈব কৌশল ব্যবহার করে উপযুক্ত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা গ্রহণ এবং খাদ্য ও পুষ্টি সুরক্ষার জন্য নিরাপদ প্রাণীজ প্রোটিন উৎপাদনের মাধ্যমে কাজ করে যেতে হবে বলে মনে করেন দেশের সুধীজনেরা।