পোল্ট্রি ফিড ও একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা ক্রয়ে খামারীদের জন্য সরকারি প্রণোদনার আহ্বান জানিয়েছে ফিআব

ডেস্ক রিপোর্ট:ক্রমাগত বেড়ে চলা ভুট্টা এবং সয়াবিন মিলের দাম বাড়তি দামে বেকায়দায় দেশের পড়েছে পোল্ট্রি ফিড কোম্পানিগুলো। লোকসানের বোঝা কমাতে একাধিকবার পোল্ট্রি ফিডেরও দাম বাড়িয়েছে তারা ফলে লোকসানের কঠিন চাপে পোল্ট্রি খামারীরা। এমন পরিস্থিতিতে মুরগীর খাদ্য এবং বাচ্চা ক্রয়ে সরকারি প্রণোদনার আহ্বান জানিয়েছেন "ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ফিআব)" এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আহসানুজ্জামান।

এজি মাহমুদ এর উপস্থাপনায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সংবাদ ও বিশ্লেষণ নিয়ে ডিবিসি নিউজ এর নিয়মিত আয়োজন ইসলামী ব্যাংক নিবেদিত "টালি খাতা" অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে এমনটাই জানালেন তিনি। একদিকে কনটেইনার এর ভাড়া বেড়েছে ৩-৪ গুন তার উপর ভুট্টা, সয়াবিন মিল ও ফিড এডিটিভস্ যে উপাদান গুলো রয়েছে সেগুলো আমদানি মুল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে অনেক খামার বন্ধ হওয়ার মুখে এবং কিছু ফিড মিল তাদের উৎপাদন অর্ধেকে নামিয়ে এনেছেন। এজন্য তিনি সরকারের উর্ধতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন। প্রণোদনা হিসেবে নগদ অর্থের বিকল্প হিসেবে কিছু মুরগীর বাচ্চা এবং খাবার সরবরাহ করা হলে অনেক খামারীগন উৎসাহ ফিরে বলে আশা করেন (ফিআব)" এর সাধারণ সম্পাদক জনাব আহসানুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে কয়েকজন খামারী ও ফিডের পরিবেশক তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, করোনা প্রতিরোধে ভোক্তারা ডিম গ্রহনে উৎসাহিত হওয়ায় বাজারে দিন দিন ডিমের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে তবে বাজার পোল্ট্রি ফিডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠছে না।
পোল্ট্রি ফিডের মুল্য প্রতি ব্যাগ ২০০০ টাকার উপরে হওয়ায় ডিমের মুল্য ৭০০-৭৫০ টাকার উপরে থাকা প্রয়োজন বলেন একজন খামারী। আরেক খামারী বলেন, চলতি ফেব্রুয়ারী থেকে আগস্ট মাস নাগাদ ফিডের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০০-৪৫০ টাকা। ফিডের সর্বোচ্চ বিক্রয় মুল্য না লিখে সর্বনিম্ন বিক্রয়মূল্য লেখার দাবী জানালেন একজন পরিবেশক।

তবে পোল্ট্রি ফিডের মূল্য কমাতে বিকল্প খাদ্য উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ জানিয়েছেন পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ এবং পুষ্টিবিদগণ। এজি এগ্রোর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান এগ্রিলাইফকে বলেন, খামারিদের উৎপাদিত ডিম মুরগি যাতে করে ত্রাণের আওতায় আসে সেজন্য সরকারিভাবে সে উদ্যোগটি নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি। সরকারী ত্রাণ সহায়তায় চাল-ডাল-তেলের পাশাপাশি ডিম ও ব্রয়লার মুরগী বিতরণ করা এখন জরুরী। পোল্ট্রিশিল্পের নেতৃবৃন্দ মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের কর্মকর্ত, জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ করে যদি এসব কাজে সম্পৃক্ত হোন তাহলে বর্তমান সংকট থেকে কিছুটা হলেন উত্তর পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। ফিডে প্রোটিনের বিকল্প উৎস হিসেবে এ সময়  প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সার্টিফাইডকৃত জেনুইন মিট এন্ড বোন মিল ব্যবহারের মাধ্যমে ফিডের উৎপাদন খরচ হ্রাস করা সম্ভব বলে মনে করেন কৃষিবিদ লুৎফর রহমান।

বিশিষ্ট পোল্ট্রি কনসালটেন্ট জনাব কৃষিবিদ মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনে বিকল্প সোর্স হিসেবে যদি  ডিওআরবি, রেপ সিড, কটন সিড মিল ফিড ফর্মুলাতে ব্যবহার করলে একদিকে খরচ যেমন কমবে তেমনি অক্ষুন্ন থাকবে ফিডের গুনগত মান। পোল্ট্রি উৎপাদনের খরচ কমাতে শেষ দিকে ফিনিশার ফিড ব্যবহার করার পরামর্শ জানিয়েছেন পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞগণ।

উল্লেখ্য, মুরগীর খাদ্য তৈরিতে ভুট্টা এবং সয়াবিন মিল ব্যবহৃত হয় ৭০-৮০ শতাংশ। এই সমগ্র পরিমানের প্রায় অর্ধেক ভুট্টা এবং সয়াবিন মিল আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকে। গত দেড় বছর যাবত আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টা এবং সয়াবিন মিলের দাম ঊর্ধ মুখী রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ফিড উৎপাদন, যার ফলে বেড়েছে ফিডের দাম।