যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসা পরিচালনার করুন-পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের প্রতি ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

রাজধানী প্রতিনিধি: পাইকারী ও খুটরা পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের প্রতি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসা পরিচালনার কথা বলেছেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব ) জনাব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান। দোকানে অবশ্যই মূল্য তালিকা থাকতে হবে, ক্রয়-বিক্রয় রশিদ থাকতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে বাজার কমিটিকে দায়ী করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসা করবেন তবে তা যেন বাজারকে অস্থিতিশীল না করে।

আজ বৃহস্পডতিবার (০৯ মার্চ) সকাল ১১.৩০ টায় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে (১, কারওয়ান বাজার, টিসিবি ভবন-৮ম তলা) পাইকারি ও খুচরা পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ক মতবিনিময় সভাঅ সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় মহাপরিচালক বলেন পোল্ট্রি মুরগির বাড়তি দামের মূল কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া। ফিডের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিশেষ করে ডলারের মূল্য বৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ভূট্টা ও সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়েও তিনি উল্লেখ করেন। কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সমগ্র দেশে অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে বাজার অস্থিতিশীল করছে যেক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানোর বিষয়ে অনুরোধ করেন।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে মুরগির উৎপাদন খরচ যেখানে ১৬৭ টাকা সেখানে মুরগির মূল্য ২৫০ টাকা কেন তা খতিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনকে মুরগির ২৫০ টাকা বিক্রয় মূল্য নিয়ে বিশ্লেষন করার জন্য অনুরোধ জানান।এছাড়াও তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মুরগির মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ জানান।

তিনি সভায় অংশগ্রহণকারীবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি আরো বলেন সভায় পোল্ট্রি মুরগির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে যে সকল সাজেশন এসেছে তা সুপারিশসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। তিনি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকে সমসাময়িক বিষয়ের গভীরে অনুসন্ধান করে তা কর্তৃপক্ষের নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ জানান।

আলোচনা শেষে মহাপরিচালক পোল্ট্রি মুরগির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সকলে সমন্বিতভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকগণ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ ব্রয়লার এসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, ফিড ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি, বিভিন্ন বাজার সমিতির প্রতিনিধিগণ এফবিসিসিআই প্রতিনিধি, ক্যাবের প্রতিনিধি, কাপ্তান বাজার সমিতিসহ বিভিন্ন বাজার সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পাইকারি ও খুচরা পোল্ট্রি ব্যবসায়ীবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার স্বাগত বক্তব্যে ব্যবসায়ীদের আইন মেনে যৌক্তিক মূল্যে ব্যবসা পরিচালনা করার কথা বলেন।

সভায় দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, ক্রয় পাকা রসিদ/ ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ না করা, ক্রেতাকে বিক্রয়ের পাকা রসিদ/ক্যাশ মেমো প্রদান না করা, দোকানে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, ওজনে কম দেয়া, আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থা/কর্তৃপক্ষকে অসহযোগিতা করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

মোহাম্মদপুর পাইকারী ব্রয়লার হাউসের প্রতিনিধি, মোহাম্মদপুর বাজার সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি, কাজী ফার্মের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যদের আলোচনায় ব্রয়লারের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া বিশেষ করে ফিডের দাম বেড়ে যাওয়া, মূল্য নির্ধারণের যথাযথ নিয়ম না থাকা, ডলার সংকট, বাচ্চার উৎপাদন কমে যাওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলোকে পোল্ট্রি মুরগির বাড়তি দামের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ব্যবসায়ীদের অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে এবং কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল না করার অনুরোধ জানান। তাছাড়াও সকলে সম্মিলিতভাবে কাজ করে ভোক্তাদের সঠিক দামে সঠিক পণ্য পাওয়ার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ জানান।