কেঁচো দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করে সফলতা পেয়েছেন সিরাজগঞ্জ সদরের মো. রাশিদুল ইসলাম

কে এস রহমান শফি, সিরাজগ:ঞ্জ বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করে সফলতা পেয়েছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের বড় হামকুড়িয়া গ্রামের মো. রাশিদুল ইসলাম । এই সার ব্যবহারে কৃষক ভাল ফলন পাওয়ায় দ্রæতই বাড়ছে এর প্রসার। ফলে খামার থেকেই উৎপাদিত সার বিক্রি করে এখন ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন তিনি।

কিছুদিন আগে মুরগির খামার করে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হন রাশিদুল। পরে সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের জন্য মনোনিত করা হয়। এজন্য আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের ‘ভামি কম্পোস্ট’ প্রদর্শনী দেয়া হয়। তাকে একশ’ রিং এবং ১০ কেজি থাইল্যান্ডের কেঁচো বিনামূল্যে দেয়া হয়। তাই দিয়ে তিনি ভর্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন। এতে অল্পদিনেই ব্যাপক সাফল্য পান। পরে তিনি পুরো খামারের ভেতরে বড় পরিসরে আরও ৭০টির মতো বেড তৈরি করেন। সেখান থেকেও একই পদ্ধতিতে সার তৈরি করছেন।

‘স্মার্ট এগ্রো পার্ক’ নামে তার এই প্রদর্শনী থেকে প্রতিমাসে প্রায় ২৫ টন সার উৎপাদন করছেন। যা নিজ এলাকাসহ সারাদেশে বিক্রি করছেন। রাশিদুল জানান, তার খামারে ৪ জন কর্মচারী রয়েছে। তাদের বেতন ভাতাসহ সব খরচ বাদ দিয়ে এখান থেকে তার প্রতি মাসে ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। এখন তিনি খামার বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছেন। তার মতো জেলা জুড়ে অনেক বেকার ও কৃষক এমনভাবে সার উৎপাদন করে এখন বাড়তি আয় করছেন। পাশাপাশি নিজেদের জমিতে ব্যবহার করছেন।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের চন্ডিদাসগাতী বøকের উপ সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, রাশিদুল কৃষির সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও ভার্মি কম্পোস্ট প্রদর্শনীর মাধ্যমে তাকে কৃষিতে আনতে পেরেছি। সে এতোই উদ্যমী কৃষক যে গত ৫মে প্রদর্শনী স্থাপন করে এখনই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার এই সফলতা দেখে অনেকেই এগিয়ে আসছেন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো.আনোয়ার সাদাত জানান, রাশিদুলকে আমরা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সব রকম সহযোগিতা দিয়েছি। ফলে সে এখন প্রতিমাসে বিপুল পরিমাণ সার উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে। পাশাপাশি এলাকার কৃষকরা এই সার ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন। তিনি বলেন, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমানো, ফসল ও সবজির উৎপান বাড়াতে ভার্মি কম্পোস্ট সার অত্যন্ত কার্যকরী।

সিরাজগঞ্জ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় ৯৯৬ জন খামারি ও কৃষক সারাবছর ১৪ হাজার ৩৫২ মেট্রিক টন ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছে ।