বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তায় আগামীর শস্য হতে পারে কিনোয়া

রাজধানী প্রতিনিধি: খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশের আগামীর শস্য হতে পারে কিনোয়া। এটি একটি সুপার ফুড যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এর রয়েছে রপ্তানির অপার সম্ভাবনা যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন-এর ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে । এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মাটিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেলেও শস্যটি তার উৎপাদনশীলতা ঠিক রাখতে পারে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগ এর আয়োজনে ও ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর আর্থিক সহায়তায় "বাংলাদেশে কিনোয়া উৎপাদন প্রযুক্তি ও বিপণন শীর্ষক আপ-স্কেলিং" এক কর্মশালায় কিনোয়া নিয়ে গবেষণা দলের বক্তব্যে এমন তথ্যই ফুটে উঠে।

অপ্রচলিত শস্যগুলিকে সকলের মাঝে তুলে ধরতে এ ধরনের গবেষণা যেমন জরুরী তেমনি উৎপাদিত পণ্যের মার্কেট ক্ষেত্র তৈরি করা প্রয়োজন। এটি চাষের টেকনোলজি কৃষক পর্যায়ের ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সহ সরকারি বেসরকারি সকল সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান গবেষকরা। এটি নতুন একটি রপ্তানি যোগ্য কৃষি পণ্য হিসেবে কৃষি অর্থনীতি তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে যোগ করবে নতুন মাত্রা বলে মনে করেন বৃষি বিজ্ঞানীরা।

সাউরেস এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান খান এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ শিরিন। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবি’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর) অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেকৃবির ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিঃ এর প্রোগ্রাম এক্সপার্ট কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ মঞ্জুরুল আলম এবং উক্ত ব্যাংকের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর প্রকৌশলী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ শিরিন বলেন, ডিবিবিএল বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের জন্য কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) প্রকল্পের আওতায় গবেষণা প্রকল্পে প্রথমবারের মত ১৮ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। ১৩ কোটি টাকা ব্র্যাক এর মাধ্যমে দূর্গম অঞ্চলের অবহেলিত কৃষকের জন্য ফসলের বীজ, কম্বাইন্ড হার্ভেষ্টর, রাইস ট্রান্সপ্লেন্টার, সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। এদেশের কৃষিতে কৃষিবিদদের অবদানের কথা মাথায় রেখে কৃষির উন্নয়নে ৫ কোটি টাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ০৮টি গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থায়ন করেছে ডিবিবিএল।

কর্মশালায় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল বলেন, কিনোয়া একটি সুপার ফুড, যা দেশের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে। কিনোয়া দক্ষিণ অঞ্চল বিশেষ করে লবণাক্ত অঞ্চল ও চরাঞ্চলের পতিত জমিতে খুব সহজেই চাষ করা যায়। তিনি কৃষি গবেষণায় ডিবিবিএল এগিয়ে আসায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি অনুষদের সাবেক ডিন ও প্রকল্পের কো-প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান। এছাড়া ভ্যালুচাইনের উপর বক্তব্য রাখেন ডঃ মোঃ আনিসুর রহমান এবং কান্ট্রি এগ্রোর স্বত্বাধিকারী মোঃ রুহুল আমিন ।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও উদ্যোক্তা।