সারাবছর মাছের পোনা উৎপাদনে ‘মাছ চাষে জলবায়ু গবেষণার ল্যাবরেটরি’ উদ্বোধন

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মদ দীনু। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) আর্থিক সহায়তায় সারাবছর মাছের পোনা উৎপাদনে ‘মাছ চাষে জলবায়ু গবেষণার অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি’ উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (১৫ এপ্রিল ২০২৩) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.লুৎফুল হাসান প্রধান অতিথি হিসাবে গবেষণাগারটি উদ্বোধন করেন।

বাকৃবি মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদীয় সম্মেলন কক্ষে এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস। মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড.মো: আবুল মনসুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের কো-পিআই প্রফেসর ড.মুহাম্মদ মাহফুজুল হক । গবেষণার মূল বিষয় উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এ. কে. শাকুর আহম্মদ । এছাড়াও কেজিএফ প্রতিনিধি এবং বাকৃবির শিক্ষকবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

প্রধান অতিথি ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্পটি অত্যন্ত সময় উপযোগি ও মাছের হ্যাচারীতে পোনা উৎপাদনে ভূমিকা রাখবে । তিনি বলেন , এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তিত জলবায়ুতে মাছের বৃদ্ধি ও পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে এবং বাংলাদেশে বছরের বেশি সময় ধরে টেকসই উপায়ে মাছ ও পোনা উৎপাদন সম্ভব হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে তেলাপিয়া, পাংগাস ও শিং মাছের দৈহিক বৃদ্বি ও পোনা উৎপাদনের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও পরিবর্তিত জলবায়ুতে মাছের টেকসই উৎপাদন ও প্রজননের ক্ষেত্রে জলবায়ু প্রশমন ও অভিজোজন কৌশল উদ্ভাবনে বহুমাত্রিক গবেষনা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে ।

প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. এ. কে. শাকুর আহম্মদ বলেন, বাংলাদেশে মূলত: মার্চ থেকে আগষ্ট পর্যন্ত হ্যারীতে মাছের পোনা উৎপাদন হয়ে থাকে এবং অন্যান্য মাসে বায়ু ও পানির তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারনে মাছের পোনা উৎপাদন সম্ভব হয়না। ফলে শীতকাল ও এর অবিলম্ব পূর্ব ও পরে মাছের পোনা পাওয়া যায়না এবং এই সময়ে মাছের সকল হ্যাচারী বন্ধ থাকে এবং পরবর্তি গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কিভাবে আভ্যন্তরিন সিষ্টেম নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে পানির তাপমাত্রা ধরে রেখে মাছের দৈহিক বৃদ্বি ও পোনা উৎপাদন সম্ভব তা যথাযথভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মাছ জলজ শীতল রক্ত বিশিষ্ট্য প্রানী হওয়াতে বায়ুর তাপমাদ্রা, বায়ুর আপেক্ষিক আদ্রতা, বৃষ্টি ও সূর্য়ের আলোর প্রক্ষরতায় পানির গুনাগুন সূচক পরিবর্তনের মাধ্যমে মাছের দৈহিক বৃদ্বি ও পোনা উৎপাদন প্রভাবিত হয়। ইতিপূর্বে বিভিন্ন গবেষনায় দেখা গেছে যে মাত্রারিক্ত তাপমাত্রা, অতি নিম্ন তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টি, সূয়ের আলোর অপ্রতুলতা জনিত কারনে মাছের দৈহিক বৃদ্বি ও প্রজনন সক্ষমতা কমে যায় ফলে গুনগত মানের পোনা উৎপাদন ব্যহত হয়। বাংলাদেশে মাছের হ্যাচারীতে পোনা উৎপাদনের জন্য পানির সর্বোত্তম তাপমাত্রা নিশ্চিত থাকা খুবই জরুরি।

এই প্রকল্পে দুই জন পিএইচডি ফেলো ও পাঁচ জন এম এস ছাত্র/ছাত্রী তাদের গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।