প্রফেসর ড. এস এম রেজাউল করিম: গত দুই দশকে বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাসে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, রপ্তানি খাতের বিস্তার, এবং সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর ফলে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যের বাইরে এসেছে। কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে একাধিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক চাপ, বিশেষত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং কর্মসংস্থানের ধীরগতি আবারও দারিদ্র্যের হার বাড়িয়ে তুলেছে। নতুন পরিসংখ্যান ও পূর্বাভাসগুলো দেখাচ্ছে যে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সাম্প্রতিক অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়তে পারে।

আতিকুল ইসলাম: বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় আবহাওয়া পূর্বাভাসের গুরুত্ব দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, খরা, অতিবৃষ্টি, তাপপ্রবাহ ও শৈতপ্রবাহের মতো অনিশ্চিত আবহাওয়া কৃষি উৎপাদনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাস কৃষকের কাছে একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকেরা এই পূর্বাভাস কিভাবে গ্রহণ করছেন, কতটা বিশ্বাস করছেন এবং কীভাবে তা কাজে লাগাচ্ছেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মতামত ও অভিজ্ঞতা।

বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশে ব্রয়লার খামারিদের জন্য তীব্র গরমের মৌসুম একটি বড় চ্যালেঞ্জ। উচ্চ তাপমাত্রা (সাধারণত ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি) যখন দীর্ঘসময় ধরে থাকে, তখন মুরগির শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। এসময় ব্রয়লারের খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়, ফলে ওজন বৃদ্ধি ধীর হয়ে যায়। এছাড়া বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট, কোষ নষ্ট হওয়া এমনকি মৃত্যুহারও বেড়ে যায়। ফলশ্রুতিতে ব্রয়লারের উৎপাদন কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে পুরো পোলট্রি শিল্পের ওপর।

রোটারিয়ান ড. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ:প্রাণিসম্পদ খাত দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতি, খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ জীবিকায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, প্রাণিজ আমিষের চাহিদা বৃদ্ধি, প্রাণিজ রোগের নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রয়োজন দক্ষ ও বহুমুখী পেশাদারদের। এই প্রেক্ষাপটে, ডক্টর অফ ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম) এবং এনিম্যাল হাজবেন্ড্রি (এএইচ) এর সমন্বয়ে গড়ে উঠা ডিগ্রি প্রোগ্রামগুলো বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি অত্যন্ত উপযোগী ও সম্ভাবনাময় মডেল হতে পারে, যার যৌক্তিকতা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত।

ড. এম আব্দুল মোমিন: কৃষি একটি শ্রমঘন পেশা। এ কারণে বাংলাদেশের কৃষি নির্ভর পরিবারগুলো ক্রমশ কৃষি ছেড়ে ভিন্ন পেশা বেছে নেয়ার চেষ্টা করতো। কৃষকের ছেলে কৃষক হতে চাইতো না। চাকুরি বা ব্যবসাসহ ভিন্ন পেশায় মনোনিবেশ করতো। কৃষকও নিজেও চাইতেন না নিজের সন্তানকে কৃষি পেশায় নিয়ে আসতে। অনেক ক্ষেত্রে পেশা হিসেবে কৃষির সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও কম সম্মানের বিষয়টি বিবেচ্য ছিল। কিন্তু দিন বদলের পালায় সেই গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশ বাড়ছে। কেননা কৃষি এখন প্রযুক্তিবান্ধব ও আগের যে কোন সময়ের তুলনায় অধিক লাভজনক পেশা। কৃষিই সমৃদ্ধি এটা আবারো আমাদের সচেতন সমাজ উপলদ্ধি করছেন। এটা ঠিক যে বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ, যেখানে জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। এক সময় কৃষি ছিল মূলত খোরপোষের চাহিদা মেটানোর মাধ্যম। কৃষকরা নিজ পরিবারের খাদ্যসংস্থান নিশ্চিত করতেই কৃষিকাজ করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই চিত্র বদলে গেছে। এখন কৃষি শুধু পেটের দায় নয়, এটি হয়ে উঠেছে মুনাফাভিত্তিক ও বাজারমুখী বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড।

সমীরণ বিশ্বাস: বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান এবং খাদ্য নিরাপত্তার বড় অংশই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও দেশে পর্যাপ্ত কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান, আধুনিক রাইসমিল, হিমাগার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে ওঠেনি। এর ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং কৃষি খাতের সম্ভাবনা পূর্ণভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।