By Dr. Afshana Parven Shahid:Birdsong fills the air as the sun rises over the expansive waters of Chalan Beel, illuminating the silvery surface of the marsh. Local communities have depended on this intricate ecosystem—the largest wetland in northwest Bangladesh—for farming, fishing, and gathering aquatic plants for years. In recent times, unplanned development and environmental degradation have posed significant threats to the balance of ecosystems and the livelihoods of many. In response, a quiet transformation has begun driven not by top-down interventions but by local communities choosing to coexist harmoniously with nature. This writing explores resilience, adaptation, and sustainable development emerging from the heart of Chalan Beel.
বাকৃবি প্রতিনিধি:‘কোরবুন’ শব্দ থেকে ‘কোরবানি’ শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ ত্যাগ বা উৎসর্গ। আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস ও নৈকট্য লাভের আশায় মুসলমানরা প্রতিবছর ১০ জিলহজ মাসে পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে তারা লোভ-লালসার প্রতীকী বিসর্জন দেন ।
সমীরণ বিশ্বাস: দেশে যে পরিমাণ প্লাস্টিক পণ্য তৈরি হয়, তার চেয়ে বেশি ভেসে আসে বহির্বিশ্ব থেকে। ফলে বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা। অন্ত দেশীয় এ সমস্যা সমাধান করা যাচ্ছে না। আর এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নাই প্রয়োজনীয় সক্ষমতা। দ্রুতই এর লাগাম টেনে ধরার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কৃষিবিদ আবুল বাশার মিরাজ: বিশ্ব পরিবেশ দিবস কেবল একটি প্রতীকী দিন নয়—এটি প্রকৃতির প্রতি মানুষের দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়ার সময়। জাতিসংঘ ঘোষিত এ দিবস প্রতিবছর ৫ জুন পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। দিনটির মূল উদ্দেশ্য, মানুষের মধ্যে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব ও চেতনা জাগানো এবং প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল গ্রহণে উৎসাহ দেওয়া। এবারের প্রতিপাদ্য “প্লাস্টিক দূষণের অবসান ঘটানো” বিশ্ববাসীর জন্য এক সতর্কবার্তা। বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার মতো ঘনবসতিপূর্ণ ও পরিবেশগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের জন্য বিষয়টি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
বাকৃবি প্রতিনিধি: আর কয়েকদিন পরই সারা দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ধর্মীয় উৎসবে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পশু কোরবানি করে থাকেন। এ সময় কোরবানির উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন হাটে লাখ লাখ গবাদিপশু কেনাবেচা হয়। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সবসময় সুস্থ ও ভালো পশু কোরবানি দিতে আগ্রহী থাকেন। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে অনেক ক্রেতা প্রতারিত হয়ে অসুস্থ, রোগগ্রস্ত কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক পশু কিনে ফেলেন, যা ইসলামি বিধানের বিরোধী।
সমীরণ বিশ্বাস: কৃষিতে জীববৈচিত্র্য বলতে বোঝায় কৃষি ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত জীবের বৈচিত্র্য, যেমন—ফসল, গাছপালা, গবাদিপশু, মাছ, কীটপতঙ্গ, মাইক্রোঅর্গানিজম (ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক) ইত্যাদির বৈচিত্র্য। এর অর্থ, কৃষিকাজে ব্যবহৃত বা কৃষি পরিবেশে বসবাসকারী প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতি এবং তাদের বিভিন্ন জাত বা বৈচিত্র্য।
জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মূল উপাদান:
বহু জাত ও প্রজাতির চাষ (Crop Diversification): একই জমিতে বিভিন্ন জাত ও প্রজাতির ধান, গম, ভুট্টা, সবজি, ফল ইত্যাদির ফসল চাষ করে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা যায়। স্থানীয় জাতের সংরক্ষণ (Conservation of Indigenous Varieties): স্থানীয় এবং প্রাচীন জাতের ফসল ও গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি প্রভৃতি বিভিন্ন গবাদি পশু সংরক্ষণ জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। জৈব চাষ (Organic Farming): রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে চাষাবাদ কৃষিতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে। আন্তঃফসল চাষ (Intercropping) ও ফসল ঘূর্ণন (Crop Rotation): মাটির গুণমান ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কার্যকর এই কৌশল দুটি। আবাসস্থল সংরক্ষণ (Habitat Conservation): কৃষিজমির পাশে থাকা বনাঞ্চল, জলাশয়, প্রাকৃতিক ঘাসভূমি ইত্যাদি সংরক্ষণ জীববৈচিত্র্য বজায় রাখে। পরাগায়নকারী ও উপকারী পোকামাকড় সংরক্ষণ: মৌমাছি, প্রজাপতি, জৈব কীটনাশক হিসেবে কাজ করে এমন পোকা সংরক্ষণ প্রয়োজন। মাটি ও উদ্ভিদের উপকারী মাইক্রোঅর্গানিজম: ব্যাকটেরিয়া, রাইজোবিয়াম, ছত্রাক ইত্যাদি। জিনগত সম্পদের সংরক্ষণ (Genetic Resource Conservation): বীজ ব্যাংক, কৃষক-পরিচালিত বীজ সংরক্ষণ কেন্দ্র ইত্যাদি গড়ে তোলা। টেকসই কৃষি পদ্ধতি (Sustainable Agricultural Practices): পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি না করে কৃষিকাজ পরিচালনা। স্থানীয় জ্ঞান ও চর্চার সংরক্ষণ: কৃষক সমাজের অভিজ্ঞতা, চিরাচরিত পদ্ধতি ও কৌশল সংরক্ষণ করা। সচেতনতা ও শিক্ষার প্রসার: কৃষকদের জীববৈচিত্র্যের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া।
জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কাজ শুরু:
আধুনিক অর্থে জীববৈচিত্র্য নিয়ে পরিকল্পিত কাজ শুরু হয় ১৯৭০-এর দশকের পর থেকে। বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি হলেন: বাংলাদেশ বন বিভাগ (Forest Department) ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকেই বন বিভাগ দেশের বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চল (যেমন সুন্দরবন, Lawachara, Rema-Kalenga) রক্ষার কাজ করে যাচ্ছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন বিভাগ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (BAU), ময়মনসিংহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ বিশেষ করে ফিশারিজ, ভেটেরিনারি ও এগ্রিকালচারাল বায়োলজির শিক্ষক ও গবেষকরা জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীববিজ্ঞান, উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগ জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা শুরু করে স্বাধীনতার পর থেকে। প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম, প্রফেসর মো. আনোয়ারুল ইসলামসহ অনেকে জীববৈচিত্র্য বিষয়ে গবেষণা ও জনসচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখেন। IUCN Bangladesh আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (IUCN) ১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখে। বেসরকারি সংস্থা ও পরিবেশবাদী আন্দোলন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, Bangladesh Bird Club, এবং WildTeam (সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণের জন্য কাজ করে)– এসব সংগঠন জীববৈচিত্র্য বিষয়টিকে জনপরিসরে নিয়ে আসে। জাতীয় জীববৈচিত্র্য কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা (NBSAP) বাংলাদেশ সরকার ২০০৪ সালে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য একটি জাতীয় কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এটি জাতিসংঘের CBD (Convention on Biological Diversity)-এর অংশ হিসেবে তৈরি। জীববৈচিত্র্য এর গুরুত্ব অপরিসিম যেমন, ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে। রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (DAE), বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI), এবং নানান এনজিও যেমন UBINIG ও Nayakrishi Andolon কৃষিতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।
দাতা সংস্থার নেতৃত্ব:
কৃষিতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ (Agrobiodiversity Conservation) নিয়ে অনেক দাতা সংস্থা কাজ করে থাকে, তবে এই উদ্যোগটি শুরু করেছে মূলত FAO (Food and Agriculture Organization of the United Nations) এবং Bioversity International এই দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থা। এরা বিশ্বজুড়ে কৃষিভিত্তিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তবে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাতা ও অংশীদার সংস্থার নাম নিচে দেওয়া হলো: FAO (জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা) কৃষিভিত্তিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও টেকসই কৃষি চর্চায় সহায়তা করে আসছে বহুদিন ধরে। Bioversity International (বর্তমানে Alliance of Bioversity International and CIAT) এটি কৃষিভিত্তিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য একটি প্রধান প্রতিষ্ঠান। GEF (Global Environment Facility) পরিবেশ সংরক্ষণ প্রকল্পে অর্থায়ন করে, যার মধ্যে কৃষিজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণও একটি। IFAD (International Fund for Agricultural Development) গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাস ও কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে। CGIAR (Consultative Group on International Agricultural Research) একটি বৈশ্বিক গবেষণা অংশীদারিত্ব যা কৃষি উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গবেষণা করে।
বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্য বিষয়ক কাজ মূলত সরকার, দাতা সংস্থা, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, গবেষক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে শুরু হয়। এর মূল চালিকাশক্তি ছিলেন প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি দায়িত্বশীল গবেষক ও প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দ। কৃষিকে পরিবেশবান্ধব ও টেকসই করার পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কৃষিতে জীববৈচিত্র্য হলো কৃষিজ পরিবেশে জীবজগতের বিভিন্নতা, যা টেকসই কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ , ঢাকা।