বাকৃবি গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম-এর আয়োজনে ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু, অর্ধশতবর্ষে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার ও প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত

কৃষিবিদ দীন মোহাম্মাদ দীনু: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ০৬ এপ্রিল ২০২১ ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু, অর্ধশতবর্ষে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনার ও প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

করোনা প্যানডেমিক এর কারণে অনেক প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জনাব মোঃ ফরিদুল হক খান, এমপি। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালযয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর এবং বঙ্গবন্ধু গবেষক প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন ময়মসসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব মোঃ ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জনাব মোঃ কামরুল হাসান, এনডিসি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এ. কে. এম. জাকির হোসেন। উক্ত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাউরেস পরিচালক প্রফেসর ড. আবু হাদী নুর আলী খান। গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সম্মানিত সভাপতি প্রফেসর ডঃ মোঃ রকিবুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক।

গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম ‘শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু, অর্ধশতবর্ষে বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি স্মারক প্রকাশ করে। উক্ত স্মারকে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের ৩০ জন শিক্ষকের বিভিন্ন ধরনের লেখা প্রকাশিত হয়। লেখকবৃন্দের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.  লুৎফুল হাসান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালযয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম এবং পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন উল্লেখযোগ্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু কৃষি উন্নয়ন ভাবনা, কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে বঙ্গবন্ধু, কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন ও সার্বজনীন কৃষি শিক্ষা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আজকের বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কৃষি ও খাদ্য সুরক্ষা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন বঙ্গবন্ধু ও আজকের কৃষি, সোনার বাংলা বিনির্মাণে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও আজকের বাস্তবতা, রূপালি বিপ্লবে বঙ্গবন্ধু, বিশ্বনেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বঙ্গবন্ধু, ইত্যাদি নানা বিষয়ে ৩০টি লেখা ও কবিতা প্রকাশিকা হয়। তাছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, ১৩ই ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩ সালে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আগমন এবং কৃষিবিদদের সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদা প্রদানের ইতিহাস ও আলোকচিত্র প্রকাশিত হয় সংকলনটিতে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জনাব মোঃ ফরিদুল হক খান, এমপি বলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষি ও কৃষকবান্ধব। সোনার বাংলাদেশ গড়তে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমৃদ্ধ কৃষির যে কোন বিকল্প নেই এটা বঙ্গবন্ধু বেশ করে বুঝেছিলেন।

জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব এ দেশে কৃষিতে ঘটেছিল যুগান্তকারী উন্নয়ন,তার নেতৃত্বে আমরা পেয়েছি সোনারবাংলা ; হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলাদেশ গড়তে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমৃদ্ধ কৃষির যে কোন বিকল্প নেই এটা বেশ ভালো করে বুঝেছিলেন। সেই কৃষি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সফল সরকারের শাসনামলে আজ সার্বিক কৃষিতে এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কৃষিতে এখন বহুমুখীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ ঘটেছে। বর্তমান সরকার খ্যাতি পেয়েছে    ‘কৃষি বান্ধব’ সরকার হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর কৃষি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকার কারণে আজকের খাদ্যে স্বয়ম্ভর বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.  লুৎফুল হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন কৃষিবিদগণ"। বঙ্গবন্ধু সবসময় কৃষক শ্রমিকের অর্থনৈতিক মুক্তির কথা ভেবেছেন। বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদদের ১ম শ্রেণীর মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। যা নিয়ে কৃষিবিদরা গর্বিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালযয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এক সময়ের দূর্ভিক্ষের দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশ আজ খাদ্যশস্য, মৎস্য এবং প্রাণিজসম্পদ উৎপাদনে বিশ্বে রোল মডেল।

স্মারক গ্রন্থ সম্পাদনা ও প্রকাশনা কমিটির সদস্য-সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক অধ্যাপক বলেন বঙ্গবন্ধুর সাথে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একই সাথে পাওয়া আমাদের জীবনে আর ঘটবে না। এই ঐতিহাসিক ও বিরল সন্ধিক্ষণটি স্মৃতিময় করে রাখায় অনন্য সুযোগ পেয়ে আমরা নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত শিক্ষক সংগঠন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের শিক্ষকদের চিন্তা-চেতনার গবেষণাধর্মী বহিঃপ্রকাশ এ সংকলনটি। এটি নতুন প্রজন্মের শিক্ষকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষি ও কৃষকবান্ধব। সোনার বাংলাদেশ গড়তে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমৃদ্ধ  কৃষির যে কোন বিকল্প নেই এটা বঙ্গবন্ধু বেশ করে বুঝেছিলেন।