চট্টগ্রামে জাতিসংঘ ঘোষিত রোড সেফটি সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে নানাবিধ কার্যক্রম!

রাসেল উদ্দীন: "Make Walking Safe, Make Cycling Safe" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে জাতিসংঘ ঘোষিত রোড সেফটি সপ্তাহ। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে বুধবার (২৮ মে) পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপের সমন্বয় ও পরিকল্পনা সভা নগরীর একটি রেস্টোরেন্ট এর হল রূমে অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে চট্টগ্রাম জিইসি মোড়স্থ বনজৌর রেস্টুরেন্টের কনফারেন্স রুমে স্ট্রেনদেনিং রোড সেফটি এ্যাক্ট এন্ড সিভিল সোসাইটি অ্যাকশন ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় স্টেপস স্টুয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজনে সমন্বয় ও পরিকল্পনা সভা এবং পরে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপের সভাপতি ও বিশিষ্ট কলামিষ্ট মুহাম্মদ মুসা খানের সভাপতিত্বে সভায় ফেসিলিটেটর হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্টেপস ঢাকার অ্যাডভোকেসী ও কমিউনিকেশন সমন্বয়কারী শাহেদা ফেরদৌসী মুন্নী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার(ট্রাফিক)নেছার উদ্দীন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, প্রবীন সাংবাদিক এম নাসিরুল হক ও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু।

আইএসডিই এর প্রজেক্ট অফিসার রাইসুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশনেন পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপের সদস্য সচিব ও দৈনিক পূর্বদেশের বার্তা প্রধান আবু মোশারফ রাসেল, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের চট্টগ্রাম মহানগরের সহ-সভানেত্রী সায়মা হক, বিএনপি নেত্রী অ্যাডভোকেট ফরিদা আকতার, চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর জেসমিনা খানম, ফারহানা আকতার, ক্যাব মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব সদরঘাটের সভাপতি শাহীন চৌধুরী, সবুজের যাত্রার নির্বাহী পরিচালক সায়েরা বেগম, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলম, পিআইজি গ্রুপ নেতা অধ্যাপক মোকতার আহমদ, সাইদুর রহমান মিন্টু, যুব ক্যাব নেতা লায়ন সাজ্জাদ উদ্দীন, বাংলানিউজ২৪ডটকমের প্রতিনিধি আলরহান, স্কাউট চট্টগ্রাম আঞ্চলিক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক এস এম শাহনেওয়াজ আলী মির্জা, দৈনিক পূ্র্বদেশের স্টাফ রির্পোটার এম এ হোসেন, চট্টলার কন্ঠ পত্রিকর সম্পাদক কমল চক্রবর্তী, ক্যাব চান্দগাঁও এর ইসমাইল ফারুকী, সিএসডিএফ এর সমন্বয়কারী শম্পা কে নাহার, যুব ক্যাব নেতা এমদাদুল ইসলাম, তানিয়া সুলতানা প্রমুখ।

সভায় জানানো হয় ২০০৫ সালের মার্চ মাসে বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহের ধারণাটি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব করা হয়। পরবর্তীতে ঐ বছরের অক্টোবর মাসে এক ডেজোলেশনের মাধ্যমে এটি আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায়। বিশ্বব্যাপী সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৭ সাল থেকে জাতিসংঘ বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন শুরু হয়। এ বছরের ১২-১৮ মে অষ্টম বারের মতো বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ ঘোষিত রোড সেফটি সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। নিরাপদে হাঁটা ও সাইকেল চালনা যেমন দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস করে, তেমনি মানুষকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখতে এবং নিরাপদ ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ কারণে এবছরের প্রতিপাদ্যে উল্লেখিত নিরাপদ হাঁটা ও সাইকেল চালনার জন্য যথাযথ অবকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া জরুরি।

বিশ্ব সংস্থার তথ্যমতে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১২ লাখ মানুষ রোড ক্র্যাশে মারা যায় এবং ২ থেকে ৫ কোটির মতো মানুষ আহত হয়। হতাহতের মধ্যে একটি বড় অংশ পথচারী ও সাইকেল চালক। দেশে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৫৬৭টি রোডক্র্যাশের ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত হয়েছেন। গত একমাসে ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত ও ২২৪ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।

সভায় বক্তারা রোড় ক্রাশের বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগের পাশাপাশি শিক্ষা ও সচেতনতামুলক কর্মকান্ডের ওপর জোর দেন। একই সাথে আইন প্রয়োগে শিথীলতার কারণে ব্যাটারী চালিত রিকসাসহ লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন গাড়ীর অভেধ চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। জনগন ও পথচারী সচেতন হলে এই সংখ্যা কমনো সম্ভব। তাই পথচারী ও নতুন প্রজন্মের মাঝে নিরাপদ সড়ক বিষয়ে সচেতনতা ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের সাথে নিয়মিত অ্যাডভোকসী সভা আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পরে বছরের একটি কর্ম পরিকল্পনা চুড়ান্ত করা হয়।