মাংস আমদানির পরিকল্পনা সরকারের নেই-বাণিজ্যমন্ত্রী

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: স্থানীয় খামারীদের স্বার্থ বিবেচনায় মাংস আমদানির পরিকল্পনা সরকারের নেই। মাংস আমদানি করলে দেশের মানুষকে ৪০০-৪৫০ টাকায় খাওয়ানো সম্ভব। কিন্তু আমরা সবসময় দেশের খামারীদের কথা ভেবেছি যে তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক। কুরবানীর অর্ধেক গরু ভারত থেকে আমদানি করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে একটি গরুও আমদানি করতে হয়না বরং উদ্বৃত্ত থাকে। এ খাতে অনেক নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। অনেকে চাকরি না করে গরুর খামার দিচ্ছে। দেশের খামারিদের কথা বিবেচনায় আপাতত আমরা মাংস আমদানি করতে চাই না।

আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএফডিসিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক ছায়া সংসদের গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি একথা জানান।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে টিপু মুনশি বলেন, ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসায় যখন আমদানির অনুমতির সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তখন ডিমের দাম কমে গেলে। মাত্র ৬২ হাজার ডিম আমদানির পর প্রতি ডজনে আরও ২০-৩০ টাকা কমে গেলো। আলুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এর মানে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ পণ্য মজুদ আছে। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফার লোভে বাজারজাত করছে না।

দেশে যে পরিমাণ পিঁয়াজের চাহিদা তার চেয়ে প্রায় ৭-৮ লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি থাকে। যেটা আমরা ভারত থেকে আমদানি করে থাকি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে পিঁয়াজ আমদানির পারমিশন দেয়ার জন্য বলা হলেও কৃষকের কথা ভেবে অনুমতি দেয়া হয়নি। পরে যখন আমদানির অনুমতি দেয়া হলো তখন ভারত আমদানির উপর ৪০ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ করলো। এর কিছুদিন পরেই আবার প্রতি মেট্রিকটন পিঁয়াজ রপ্তানি আটশো ডলার করে যেকারণে সরকার নির্ধারিত দাম ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।

চিনির আমদানি শুল্ক কমানোর পরও দাম না কমা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ডলারের মূল্য আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। যেসব পণ্য আমদানি করতে হয় সেগুলো আন্তর্জাতিক বাজার বা ডলারের মূল্যের উপর নির্ভর করে। আমরা চাইলেও সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারি না। আমরা যেটা পারি সেটি হলো শুল্ক কমাতে। যেমন চিনি দাম কমাতে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দামে কোনো প্রভাব পড়েনি বরং বেড়েছে। ফলে এর সুফল ভোক্তা পায়নি।

বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, সরকার বা সিন্ডিকেট শক্তিশালী নয়। জনগণের সিন্ডিকেট সবচেয়ে শক্তিশালী। ভোক্তাদের সচেতন ও প্রতিবাদী হতে হবে। সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে কোনো শক্তিই টিকতে পারবে না। এই উদ্যোগ মানুষকে সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও জানান তিনি।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

ইডেন মহিলা কলেজ এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ফাইনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ জয়লাভ করে।