বায়োটেকনোলজির সফল প্রয়োগ দেশে গলদা চিংড়ি চাষে নতুন দিগন্ত সূচিত করবে

বিশেষ প্রতিবেদক: বায়োটেকনোলজির সফল প্রয়োগ দেশে গলদা চিংড়ি চাষের নতুন দিগন্ত সূচিত করবে। এ লক্ষে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) রাজধানী ঢাকায় দেশে প্রথমবারের মতো "Building the Future: Applying Biotechnology in Golda Farming"- শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়। Agro Solution ও MAVERICK INNOVATION-এর যৌথ আয়োজনে এ সেমিনার গলদা চিংড়ির হারানো গৌরব ফিরে আসতে কার্যকর অবদান রাখবে বলে মনে করেন একুয়া বিশেষজ্ঞরা।

সেমিনারে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক। সেমিনারে মূল আলোচনায় অংশগ্রহন করেন Albert Tacon - Founder & Owner - AquaHana LLC, এছাড়া মালয়েশিয়া থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন খ্যাতনামা একুয়া বিশেষজ্ঞ GK AQUA SDN BH-এর Mr Giva Kuppusamy। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এগ্রো সল্যুশন-এর সিইও অং থয়েন এ (অন্তু)।

কারিগরী তথ্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রফেসর ড. মো: আমজাদ হোসেন, AQUA-GEN-এর সিইও জনাব সোহেল ইবনে সাত্তার, MAVERICK INNOVATION-এর প্রতিষ্ঠাতা Dr M A Kabir Chowdhury, এগ্রো সল্যুশন-এর ডা. কাকলী মোহন্ত কেয়া।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় শতাধিক আমন্ত্রিত ব্যক্তিবর্গ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হওয়া গলদা চিংড়ি নিয়ে এ সেমিনারে আশার আলো দেখেছেন। তারা জানান তাদের অনুভূতির কথা; অনেকে বলেন গলদা চিংড়ি আমাদের একটি গৌরব সঠিক জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে এ সাদা সোনা। দেশের বাজারেও গলদা চিংড়ির যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে; বাজার মূল্য ভালো কাজেই আমরা দেশেই বাজারজাত করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারি।

আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টিকে থাকতে হলে বায়োটেকনোলজির প্রয়োগের কোন বিকল্প নেই এ লক্ষ্যে একাডেমিয়া থেকে শুরু করে গবেষক-উদ্যোক্তা, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট, চিংড়ি খামারি সহ সকলের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য তাগিদ দিলেন সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা।

সেমিনারে আলোচনার পাশাপাশি নানা প্রশ্ন উপস্থাপন করেন একাধিক গবেষক ও নিউট্রিশনিষ্টরা। দেশে গলদা চিংড়ি চাষকে উৎসাহিত করতে এবং গলদা চিংড়িকে নিরাপদ ও সমৃদ্ধ করতে এ সেমিনারটি ব্যাপক গুরুত্ববহ বলে মনে করেন আলোচকরা। আগত গবেষক ও স্টেক হোল্ডারদের মাধ্যমে উঠে আসা গলদা চাষে সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে একটি সুপারিশমালা সহকারে মৎস্য অধিদপ্তরে প্রেরণের জন্য অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক আয়োজকদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান।। এ ব্যাপারে তাঁর ও তাঁর অধিদপ্তরের পূর্ণ সহযোগিতা করার কথা বলেন তিনি।

আলোচনায় উঠে আসে গলদা চিংড়ি চাষের মূল সমস্যা হলো পিএল এছাড়াও ব্রুডষ্টক ফিড-এর অপ্রতুলতার কথা উল্লেখ করে আলোচকরা। দেশে ৪৫টি হ্যাচারি থাকলেও সবগুলো হ্যাচারি এখন সচল নয়। এর মূল কারণ কারিগরি দক্ষতা, দক্ষ জনবল এবং সঠিক তথ্য বলে মনে করেন গবেষকরা। গুড অ্যাকোয়াকালচার প্র্যাকটিস, সাইন্টিফিক মেথড, ওয়াটার সাপ্লাই-এর প্রতি অধিকতর মনোনিবেশ করার কথা বলেন বক্তারা।

গলদা চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে কঠোর মনিটরিং, ষ্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করতে পারলেই গলদা চিংড়ির হারানো ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানান গবেষকরা। বাগদা চিংড়িতে যেমন আমাদের জিআই সনদ রয়েছে তেমনি গলদার জন্য আমাদেরকে এমনভাবে কাজ করতে হবে যেন আমরা জিআই সনদ অর্জন করতে পারি। সেলক্ষে এই আয়োজনটি একটি চমৎকার প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। এখান থেকেই একটি ভালো কিছুর সূচনা হলো; এখন আমাদের উচিত সকলকে মিলে এই কাজকে এগিয়ে নেওয়া।

সেমিনারে স্পেক্টা হেক্সা ও নাম সাই ফ্রাই এর সিইও কৃষিবিদ আহসানুজ্জামান ডিরেক্টর ও সিইও কৃষিবিদ মোঃ আহসানুজ্জামান, মৎস্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর মনিষ কুমার মন্ডল, সহকারী পরিচালক এ.বি.এম শাব্বীর সহ সেক্টরের প্রায় শতাধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সমগ্র সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন মুহাম্মদ ফররুখ রহমান। সেমিনারে Platinum sponsor AQUAGEN, Gold sponsor Jefo, ADYAN AGRO LTD. Doctor's Agro Vet Ltd. ও Penta Green এবং Silver sponsor হিসেবে CATAPOL, HOOVERS অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমন্ডিত করতে সহযোগিতা করে।