একজন লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার-এর সফলতার গল্প

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার মাটিকাটা গ্রামে বেড়ে ওঠা কৃষিনির্ভর অল্প আয়ের পরিবার-এর একজন এনাতুল হক। পরিবার এ সদস্য সংখ্যা মোট ৬ জন। ৩ ভাই ও ১ বোন এর মধ্যে এনাতুল সবার বড়। ছোট থেকেই সে বাবার আয়ের পাশাপাশি আর্থিকভাবে কিছুটা সহযোগিতা করতে পারেন তাহলে বাবার উপর আর্থিকচাপ কিছুটা কমবে। বিকল্প আয়ের চিন্তাভাবনা করেছেন ঠিকই কিন্তু তাতেও দরকার পুঁজি। আর্থিকভাবে কিছুটা টানাপোড়েনে তাঁর কাছে এ এই পুঁজি যোগাড়ও যেন বিলাসিতা।

সাল তখন ২০২২-এর নভেম্বর,অনার্স ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত এনাতুলের পরিচয় হয় আরএমটিপি পোল্ট্রির আওতায় নিরাপদ পোল্ট্রি ও পোল্ট্রিজাত পণ্যের উপপ্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান দু:স্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র-এর প্রকল্প টীমের সাথে। প্রকল্প টীম একটি বিজ্ঞাপন ও প্রকাশ করে যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণে যদি কেও আগ্রহী হয় তাহলে যোগাযোগ করতে। ঠিক তখন এনাতুল আগ্রহ নিয়ে যোগাযোগ করলে দু:স্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর আরএমটিপি পোল্ট্রির পক্ষ থেকে যুব উন্নয়ন এ ৩ মাস মেয়াদি গবাদি পশু, হাঁস মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ এ ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

৩ মাস এর প্রশিক্ষণ শেষে বর্তমানে উপপ্রকল্পর সাথেই লাইভস্টক সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে কাজে যুক্ত আছেন। পাইকুরাটি, সেলবরষ,ধর্মপাশা, সিংধা, চিরাম ইউনিয়ন -র বেশ কয়েকটি গ্রামে উনি সেবা চালু রেখেছেন। হাঁস, মুরগি, কবুতর, গবাদিপশুর টিকাদান, হাঁস পালনকারীদের বেসিক প্রশিক্ষণ দিয়ে মাসিক উপার্জন হচ্ছে প্রায় ১৫,০০০ টাকা। ইতোমধ্যে এই উপার্জনের মধ্য দিয়েই একটি মোটরসাইকেল কিনেছেন যেন খুব দ্রুত সময়ে জনগনকে এই সেবা দিতে পারেন।

স্বল্প আয়ের পরিবারে এই উপার্জনে আর্থিকচাপ অনেকাংশেই কমেছে,স্বচ্ছলতা ফিরে আসছে এবং দিন দিন মানুষের কাছে একজন ভ্যক্সিনেটর ও প্রশিক্ষক হিসেবে জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে এনাতুল হকের। স্থানীয় জনগণ যেকোন প্রয়োজনে তার সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। এতে গ্রামের হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল পালনকারীরা তাদের প্রাণিদের সময়মত টিকা দিতে পারছেন। কৃমিনাশক ক্যম্পেইন-এর মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি হয়েছে এবং উপপ্রকল্পের কর্ম এলাকায় পাখি জাতীয় প্রাণির মৃত্যুহার অনেক কমেছে।

এনাতুল হক বর্তমানে স্থায়ীভাবে বাজারে একটি ভেটেরিনারি দোকান দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। এই কাজের পাশাপাশি এনাতুল হক পড়াশুনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। এই অবস্থান এ আসার পিছনে অবদান এর জন্য পিকেএসএফ এবং দু:স্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর কাছে এনাতুল এবং তার পরিবার অত্যনক কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে ও এই ধরণের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নমূলক কাজের অংশীদার হয়ে নিজেকে আরো সফল অবস্থানে দেখতে চান তিনি।