২০২২ সালে সারা দেশে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন কীটনাশক ব্যবহৃত হয়েছে

দীন মোহাম্মদ, বাকৃবি: “বাংলাদেশে অধিক বিপদজনক কীটনাশক এবং রাসায়নিকের উন্নত ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা উন্নয়ন” শীর্ষক কর্মশালা ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের আয়োজনে কর্মশালাটি ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালকের অফিস-খামারবাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়।

আজ রবিবার (২১ এপ্রিল) সকাল দশটায় ময়মনসিংহ সদর খামারবাড়ির প্রশিক্ষণ কক্ষে ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার কৃষি অফিসার ও কৃষকদের নিয়ে কর্মশালাটি আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে খামারবাড়ির সামনে থেকে কৃষক ও কৃষি অফিসারদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক র‍্যালি বের করা হয়।

প্রকল্পের টিম লিডার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. গোপাল দাস মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, ২০২২ সালে সারা দেশে প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগই অধিক বিপদজ্জনক কীটনাশক যার ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাসায়নিক কীটনাশক বিপনন ও ব্যবহারের সাথে জড়িতদের অধিকাংশই এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানেন না। কিছু কিছু কীটনাশকের ব্যবহার করার অনুমতি না থাকলেও বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে এবং কৃষক ব্যবহার করছেন। এতে সংশ্লিষ্টরা ভয়াবহ রকমের স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়েছেন। তারা নানা রকমের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশের সার্বিক স্বার্থে কীটনাশক ব্যবহারের নিয়মাবলী ও নিষিদ্ধ কীটনাশক সম্পর্কে সকল কৃষক ও বিপননকর্মীসহ কৃষি অফিসারদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এর প্রতিস্থাপক হিসেবে জৈবিক কীটনাশকের ব্যবহার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ এলাকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু, উপপরিচালক সালমা আক্তারসহ ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাগণসহ কৃষক ,ডিলার উপস্থিত ছিলেন।

ড. নাছরিন আক্তার বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ে অনেক ক্ষতিকর কীটনাশক ও অন্যান্য সার অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। যা আমাদের জলজ ও অন্যান্য জীব বৈচিত্রে প্রবেশ করে বিষাক্ত করে তুলে। পরবর্তীতে খাবার হিসেবে তা মানবশরীরেও উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। তাই আমাদের এই কীটনাশক ব্যবহারের সঠিন জ্ঞান লাভ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নিরাপদ উন্নতির দ্বিতীয় লক্ষ্যমাত্রাটি অর্জন করতে সবাইকে সচেষ্ট হয়ে কাজ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত পরিচালক এনায়েত উল্লাহ বলেন, কীটনাশক মূলত আবিষ্কার হয়েছিল কৃষির উন্নতি সাধনের জন্যই। তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার আজ আমাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ আমাদের বায়ুমন্ডল ও জলজ ভূমিতে বিভিন্ন ভারী ধাতু পাওয়া যাছে। আমরা এখনই সচেতন হতে না পারলে একসময় আমরা খুব বড় একটি বিপদে পড়ে যাবো। তাই আমাদের কীটনাশকের সঠিক পরিমাণ ও সময় নির্বাচন করে আমাদের কৃষকদের জানাতে হবে। এতে আমাদের পরিবেশ তার পুরনো রূপ ফিরে পেতে পারে।