জীব প্রযুক্তি সহ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে বিশিষ্ট আলেমগণের সমর্থন

Category: ইসলাম ও জীবন Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও ফসল উৎপাদনে জীব প্রযুক্তির ব্যবহারে  ইসলামী শরীয়ায় কোন নিষেধ নেই। আজ এক আলোচনা সভায় এমন মত দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট আলেমগণ। 

সামাজিক সচেতনতা ও সর্বস্তরে এর গ্রহনযোগ্যতার নিমিত্তে, কৃষি উদ্ভাবন, তথা জীব প্রযুক্তি,  জিন এডিটিং এবং এ সম্পর্কে সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার গুরুত্ব নিয়ে আয়োজিত এ সভায় বিজ্ঞ আলেমগণ এ বিষয়ে মতামত দেন।   

ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ (এফএফবি) দেশের বিশিষ্ট ইসলামিক আলেম ও চিন্তাবিদদের নিয়ে আজ আগারগাঁও তে লায়নস ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভাটির আয়োজন করে। "ইসলামী শরিয়ায় কৃষি বিষয়ক উদ্ভাবন ও কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক মতবিনিময় ও আলোচনাসভা” শীর্ষক এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল কিভাবে ইসলাম এবং বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি উদ্ভাবন মানব কল্যাণে  এবং দেশের কৃষির উন্নতিতে অবদান রাখতে পারে।    
 
আলোচনার স্বাগত বক্তব্যে এফএফবি-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী পরিচালক মোঃ আরিফ হোসেন বলেন, "আলেম সমাজ  কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং এর প্রয়োজন সম্পর্কে জনসাধারনকে সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন; যা বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।" তিনি আরো বলেন, নিরাপদ খাদ্যের প্রাপ্যতা ও খাদ্যে ভেজাল রোধ করতে সবার একযোগে কাজ করা উচিত।

বাংলাদেশে কৃষি-বায়োটেকনোলজির/ জিন এডিটিং এর  প্রয়োগ ও উপযোগিতা বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক  ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম। তিনি বলেন, "বিজ্ঞান ও ধর্ম পরস্পরবিরোধী নয় এবং বাংলাদেশের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য কৃষি উদ্ভাবনের উপর জোর দেওয়া উচিত। আলেমদের কথা সবাই মানে, এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে। তাই তাঁরা কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। ''

আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির গুরুত্ব এবং ইসলামে জৈবপ্রযুক্তির গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. একেএম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, "আমারা বিজ্ঞনীরা কৃষি উন্নয়নে জীব প্রযুক্তির যে ব্যবহার করছি বা আমরা যে গবেষণা করি, এর সবই মানব কল্যাণের জন্য। ধর্মের সাথে এই গবেষণা কর্মের বিবাদ নাই।  ইসলাম শরীয়াহ যেহেতু মানব কল্যাণের জন্য জাগতিক পদ্ধতি অনুমোদন করে, তাই কৃষির এই উদ্ভাবনকে 'হালাল' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।”   

কৃষি উদ্ভাবনের প্রচারে ধর্মীয় নেতাদের গুরুত্ব তুলে ধরে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, "ইসলামিক আলেমগণ জীব প্রযুক্তির ধারণা ও প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন করেন, কারণ এটি মানবজাতির কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।''      

সভার সমাপ্তির পূর্বে ইসলামী শরীয়ার দৃষ্টিতে কৃষি উদ্ভাবনের প্রভাব নিয়ে উপস্থিত আলেম এবং বক্তাদের মাঝে প্রশ্ন-উত্তর পর্বের মাধ্যমে আলোচনাটি আরও ফলপ্রসূ হয়ে ওঠে।

ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ এর কর্মকর্তাসহ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন খতিব মাওলানা আ কাহহার; খতিব, সাদিকুর রহমান আজহারি; মুহাদ্দিত, মাহমুদুল হাসান, খতিব, মোঃ হেদায়েতুল্লাহ; খতিব, মুস্তাফিজুর রাহমান; খতিব, ড মোঃ আনোয়ার হসসাইন মোল্লা; খতিব, মাওলানা গাজি সানাউল্লাহ রাহমানী; শাইখুল হাদিস, মাওলানা কামরুল ইসলাম রাহমানি; মহদিস, মাওলানা ওবাইদুল্লাহ আল কাফি; মুফতি, মাওলানা জাকারিয়া নুর; মাওলানা আলি হাসান তৈয়ব, মাওলানা আমিন ইকবাল এবং পরামর্শক খালিদ সাইফুল্লাহ বখশী।  

ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ (এফএফবি) বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এর অর্থায়নে গঠিত একটি প্রতিষ্ঠান, যার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনে জৈবপ্রযুক্তিসহ আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানো। যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যালায়েন্স ফর সাইন্স’ এর পৃষ্ঠপোষকতায় জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ফার্মিং ফিউচার বাংলাদেশ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।