শস্য বিন্যাস উন্নয়নের যৌথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে তিন বছরেই তেলের আমদানী ৪০ ভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব

Category: গবেষণা ফিচার Written by agrilife24

গবেষণা ডেস্ক:শস্য বিন্যাস উন্নয়ন ও ফসলের জাত নির্বাচন পর্যালোচনা কর্মশালায় ব্রি-বারি’র গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রচলিত শস্য বিন্যাসে আধুনিক উফশী ধানের জাতের পাশাপাশি তৈল ফসলসহ অন্যান্য ক্যাশক্রপ বা দামি  ফসল সন্নিবেশের ক্ষেত্রে কৃষকদের সহযোগিতা করতে পরস্পর যৌথভাবে কাজ করবে দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগ কতৃক আয়োজিত শস্য বিন্যাস উন্নয়ন ও ফসলের জাত নির্বাচন পর্যালোচনা কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন।  

ব্রির পরচিালক (গবষেণা) ড. মো: খালকেুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থতি ছিলেন ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। সম্মানতি অতিথি হিসাবে উপস্থতি ছিলেন বাংলাদশে কৃষি গবেষেণা ইনস্টটিউিট এর মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থতি ছিলেন ড. মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা), ব্রি এবং ড. মো. আবদুল লতিফ আকন্দ পরিচালক (তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র), এবং ড. ফেরদৌসি ইসলাম, পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ), বাংলাদশে কৃষি গবেষেণা ইনস্টটিউিট।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রির রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বিভাগীয় প্রধান ড. মুহম্মদ নাসিম।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্রির রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: ইব্রাহিম এবং সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বারি’র মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: মাজহারুল আনোয়র। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে উভয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে দেশের ১৪টি অঞ্চলের শস্য বিন্যাসে আরো কি কি ফসল অর্ন্তভূক্ত করা যায় সে বিষয়ে ৭টি দলগত কর্মপরিকণ্পনা উপস্থাপন করা হয়।

বাংলাদশে কৃষি গবেষেণা ইনস্টটিউিট এর মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয় ও সরকারের নির্দেশনা হচ্ছে ধান যেহেতু আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য সেহেতু ধানের উৎপাদন অক্ষুন্ন রেখে অন্যান্য দামি ফসল যেমন- তৈলবীজ, ফলমূল ও শাকসবজি চাষ বাড়াতে হবে যাতে চালের পাশাপাশি অন্যান্য ফসলেও আমরা স্বয়ংভর হতে পারি। কেননা করোনাকালে আমরা দেখেছি অনেক দেশ খাদ্য আমদানীতে হিমশিম খেয়েছে। টাকা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় আমদানী করা যায় না। তাই আমদানী নির্ভরতা কমিয়ে প্রয়োজনীয় সকল ফসলে আমাদের স্বয়ংভর হতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যে ব্রি-বারি এই যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ধান আমাদের প্রধান খাদ্য শস্য। তাই ধান নির্ভর খাদ্য নিরাপত্তার কোন ব্যাত্যয় ঘটানো যাবে না। সেটি নিশ্চিত রেখে অন্যান্য ক্যাশ ফসল উৎপাদন করার জন্য আমরা ব্রি ও বারি যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করি এই পদক্ষেপের ফলে উফশী ধানের শস্য বিন্যাসে সরিষা, পেয়াজসহ অন্যান্য দামি ফসলের আবাদ এর মাধ্যমে অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

বর্তমানে দেশের ৮৮% তেলের চাহিদা আমদানী নির্ভর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই যৌথ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে আগামী তিন বছরেই তেলের আমদানী ৪০% কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য বর্তমানে দেশের মোট তেলের চাহিদার মাত্র ১২ ভাগ পূরণ হয় অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানবৃন্দ, আঞ্চলিক কাযালয়ের বিজ্ঞানীবৃন্দ ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।