জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজন: আমাদের ভাসমান কৃষি

Category: গবেষণা ফিচার Written by agrilife24

ড. জগৎ চাঁদ মালাকার:বাংলাদেশ পৃথিবীর কৃষি প্রধান নদীমাতৃক একটি দেশ। অর্থনীতির এখনও প্রাণশক্তি কৃষি। আমাদের রয়েছে ৪৫ লাখ হেক্টরের বেশি জলসীমা। গোপালগঞ্জ, বরিশাল, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ জেলাসহ আরও অনেক জেলা বর্ষা মৌসুমে বিরাট অংশ জলাবদ্ধ থাকে। সেখানে বছরে প্রায় ৬ মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এ সময়ে সেখানে কোনো কৃষি কাজ থাকে না, ফসল হয় না, মানুষ বেকার জীবন-যাপন করেন। ওই সব এলাকায় ওই সময়ে কচুরিপানা ও অন্যান্য জলজ আগাছায় ঢাকা থাকে।

দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক নিজেদের প্রয়োজনে নিজেরাই উদ্ভাবন করছেন ভাসমান কৃষি কার্যক্রম। এসব জেলার জলমগ্ন এলাকাগুলো কচুরিপানা ও অন্যান্য জলজ আগাছা রয়েছে বিশেষ করে বিভিন্ন বিল, হাওর, নালা, খাল ও মজা পুকুর। সেখানে এখন বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে স্তুপ করে প্রয়োজনীয় মাপের ভেলার মতো মাদা তৈরি করে ভাসমান পদ্ধতিতে বছরব্যাপী বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি,ফল ও মসলা উৎপাদন করছেন অনায়াসে। বন্যা ও জলাবদ্ধপ্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন কৌশল হিসেবে ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি এবং ক্ষেত্র বিশেষে আপদকালীন আমন ধানের চারা উৎপাদন সম্প্রসারণে নতুন যুগের সূচনা করেছে, খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি সমৃদ্ধির নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে।

ভৌগলিক অবস্থান ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কৃষির উপর নির্ভরশীলতার কারনে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির তালিকায় বাংলাদেশ উপরের দিকে অবস্থান করে। খরা, লবনাক্ততা, বন্যা, সাইক্লোন, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছাস, বহিঃদেশের বালাইয়ের অনুপ্রবেশ, নদী ভাঙ্গন ইত্যাদি বাংলাদেশের কৃষিকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে। বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি যোগানের পাশাপাশি কর্ম সংস্থান সৃষ্টি, আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও দারিদ্র দূরীকরণে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই ক্ষুদ্র দেশের বিশাল জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু কৃষি জমির উপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অব্যাহত চাপ, প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে কৃষি জমি অকৃষি খাতে চলে যাওয়া।

কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব আজ আর তেমন অজানা নহে। পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নানা প্রকারের দুর্যোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে যেমন- অতি বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, খরা, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদি। যার ফলশ্রুতিতে জ্ঞান ও মালের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এর কারণে প্রতি বছর নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ঝড়, বন্যা, খরাসহ বিভিন্ন প্রকার সমস্যা বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে যার ফলে প্রতি বৎসরে লক্ষ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হচেছ আমাদের কৃষি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে হলে আমাদেরকে এই পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে খাপ খাওয়াতে হবে।

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা এ ধরনের আকস্মিক বন্যার শিকার। কিন্তু বন্যাপ্রবণ এলাকায় এর প্রভাব খুব বেশি। জোয়ারজনিত বন্যা উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি করে। জমিতে লবণাক্ত পানির জলাদ্ধতার সৃষ্টি করে, যা ফসল চাষের জন্য অনুপযোগী।

সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, নীলফামারী ইত্যাদি জেলা আকস্মিক বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিপক্ব ফসল কর্তনের আগেই প্রতি বছর হাজার হাজার একর পাকা বোরো ধান আকস্মিক বন্যায় আক্রান্ত হয় ফলে চাষি হয় ক্ষতিগ্রস্ত।

কেন জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে:-গ্রীন হাউজ গ্যাসের নি:সরণ বৃদ্ধি:-র্কাবন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ বাড়ছে , ক্লোরোফ্লোরোকার্বন এবং মিথেন গ্যাসের নি:সরণ বৃদ্ধি, ওজোন স্তর নস্ট হওয়া, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কলকারখানা বৃদ্ধি,যানবাহনের পরিমান বৃদ্ধি, গাছপালা কমে যাওয়া,রাসায়নিক পদার্থের যথেচ্ছা ব্যবহার।
     
বিভিন্ন ফসলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসমূহঃ- ধান চিটা হয়, অতি বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়, জমিতে লবনাক্ততা বৃদ্ধি পায়, খড়ায় ফসলে পোকার আক্রমন বেশী হয়, ফসলের বৃদ্ধি কম হয় এবং ফলন কমে যায়, সঠিক সময় বীজতলা করা যায় না, বন্যা/অতিবৃষ্টিতে সবজি পঁচে যায়, খড়ায় পোকার আক্রমন বেশী এবং ফলফুল ঝড়ে যায়, সময়মত ফসলের চাষাবাদ করা যায় না, কুয়াশায় পরাগায়ন ব্যাহত হয়, আমের মুকুল ঝড়ে যায়, আলুর মড়ক দেখা যায়, রবি শষ্যের ফলন কমে যায়। বাংলাদেশে পানিসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি, বন্যা ও জলাবদ্ধতার প্রকোপ ক্রমাগত বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১.৫ মিলিয়ন হেক্টর জমি প্রতি বছর বন্যাকবলিত হয়।

বন্যা জলমগ্নতা খাপ খাওয়ানোর কৌশল সমূহঃ
-বন্যা সহিষ্ণু জাত রোপন করতে হবে।
-উঁচু স্থানে বেড ও মাদা তৈরী করা
-পলিথিন নিয়ে বেড, মাদা ঢেকে দেওয়া
-বন্যা /পানি সহিষ্ণু জাত ব্রি ধান- ৫১, ৫২,৭৯ বিআর - ২২, ২৩ চাষ করা
-বেরি বাঁধ ভাঙ্গলে মেরামত করা
-মাছের ক্ষেত্রে উঁচু করে পাড় মেরামত করা নেট দেওয়া
-স্বল্প মেয়াদী ধানের চাষ করা, বিনা ধান -৭, ১৬ ব্রি ধান -২৮,৩৩,৩৯ বাউ ধান -১
-ভাসমান বীজতলা তৈরী করা
-কচুরী পানায় মাদা তৈরী করা এবং ভাসমান মাদায় সজি¦ এবং ফল চাষ করা
-পুকুর খনন করে পাড় উঁচু করা
-বন্যার পূর্বে বিভিন্ন প্রকার খাবার সংগ্রহ করে রাখা
-মাছ আগে ধরে কোথাও বিক্রি করা
-হাঁস মুরগীর প্রতিশেধক টীকা বন্যার পূর্বে দেওয়া
-হাঁস মুরগীর ঘরের মেঝ চুন/ ছাই ছিটানো
-বন্যার পানি সরে গেলে রোপা আমন মৌসুমের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শাইল জাতের যেমন: বিনা শাইল, নাইজার শাইল, ঝিংগা শাইল,রাজু শাইল,ইন্দ্রো শাইল সহ স্থানীয় জাতের ধান চাষ কর

এভাবে ভাসমান ধাপের উপরে বিভিন্ন রকম সবজির ভাসমান বীজতলা। সেসব ভাসমান বীজতলায় পেঁপে, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি আবার অন্যগুলো টমেটো, বেগুন, করলা, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ ফুলকপি, শসার চারা উৎপাদন এবং লাউশাক, লালশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাক বা সাদা শাকের চাষও করেন। এসব ভাসমান বীজতলাগুলো যাতে ভেসে না যায়, সেজন্য তারা শক্ত বাঁশের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে। শুকনো মৌসুমে পানি সরে গেলে সেসব কচুরিপানার ধাপ জমিতে মিশে জৈব পদার্থের অতিরিক্ত জোগান দেয়। জমি হয় উর্বর। শুকনো মৌসুমে এখানকার মানুষরা চাষ করে বোরো ফসল। এত দিন তারা ভাসমান বীজতলায় কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার করত না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে অল্প পরিমাণ ইউরিয়া সার ব্যবহার করে ভালো ফল পাচ্ছেন।
 
ভাসমান বেডের আকার
একেকটি ভাসমান ধাপ বেড ৫ থেকে ৬ ফুট প্রশস্ত এবং ২ থেকে ৩ ফুট উঁচু ও ১৫০ থেকে ১৮০ ফুট লম্বা বীজতলা ধাপ তৈরি করে তার উপর কচুরিপানা এবং পর্যায়ক্রমে শ্যাওলা, দুলালীলতা, টেপাপানা, কুটিপানা, কলমিলতা, জলজলতা স্তরে স্তরে সাজিয়ে নারিকেলের ছোবড়ার গুঁড়া ও ক্ষুদ্রাকৃতির বিভিন্ন ধরনের জলজ উদ্ভিদ পচিয়ে বীজতলার উপর ছড়িয়ে দেয়। সেখানেই বীজ বপন করে উৎপাদন করা হয় বিভিন্ন প্রজাতির শাক সজি¦র চারা, এমনকি অল্প জীবনকাল সম্পন্ন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি।

সুবিধা সমূহ
এভাবেই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হয়। একটি অঙ্কুরিত বীজ বীজতলায় রোপণ করার ২০ থেকে ২২ দিনের মাথায় পূর্ণবয়স্ক চারায় রূপান্তরিত হয়। ১ সপ্তাহের মধ্যে কৃষক বা চারার পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যান এসব চারা। জৈবসারে উৎপাদিত এসব চারার উৎপাদন খরচ পড়ে ১ থেকে দেড় টাকা। ১ হাজার চারা আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। শাকসবজি বড় হলে চাষিরা ধাপ থেকে তুলে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। পুরনো ধাপ কিনে কৃষকরা এর স্বল্প জীবনকালীন বিভিন্ন শাকসবজির আবাদ করেন। তাছাড়া পানি কমে গেলে এসব ধাপ মাটির সাথে মিশে জৈবসার হিসেবে কাজে লাগে মাটির উর্বরা শক্তি বাড়ায়।

ভাসমান পদ্ধতির এ চাষে নারী-পুরুষ-শিশু সবাই কাজ করে থাকে। পুরুষরা ধাপ তৈরি, চারা স্থাপন, পরিচর্যা ও উৎপাদিত চারা বিক্রির কাজ করেন। আর নারী ও শিশুরা ঘরে বসে শ্যাওলা, নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি করেন। স্থানীয় ভাষায় একে টেমা বা মেদা বা দৌলা বলা হয়। এর মধ্যে বীজ রেখে অঙ্কুরোদগম ঘটানো হয় যা ভাসমান ধাপের উপর স্থাপন করে পরিচর্যার পর নির্দিষ্ট সময় পরে চারায় পরিণত হয়। এছাড়া সে ধাপের উপর সরাসরি কিছু সবজির অঙ্কুরোদগম ঘটানো হয়। ধাপ চাষিরা লাউ, শিম, বেগুন, বরবটি, করলা, পেঁপে, টমেটো, শশা, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, মরিচ, ও মশলার চারা তৈরি করেন। কেউ কেউ সে ধাপে হলুদ, মরিচ, আদা, লালশাক,ট্্রবেরি ও ঢেঁড়স আবাদ করেন। পাইকারি ক্রেতারা নদী পথে এসে ধাপ থেকে সরাসরি চারা কিনে সবজি আবাদকারীদের কাছে তা বিক্রি করেন।

ভাসমান বেডে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে বলে সমতল ভূমির তুলনায় ঘন করে বীজ বপন বা চারা রোপণ করা যায়। আবার ভাসমান বেডে বেশি জৈব সারের কারণে জমিতে প্রচলিত চাষের তুলনায় ফসল দ্রুত বাড়ে এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রায় ৩-৫ গুণ বেশি ফলন পাওয়া যায়। বন্যার শেষে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এসব ভাসমান বেড যখন মাটির ওপর বসে যায় তখন তা ভেঙে জমিতে বিছিয়ে বা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে সফলভাবে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায়। এছাড়া, মৌসুম শেষে পচা কচুরিপানা ফল গাছের গোড়ায় সার হিসেবে ব্যবহার করে ফলের উৎপাদন বাড়ানো যায়। ফল গাছের গোড়ায় পচা কচুরিপানা ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো যায়। এ অবস্থায় দেশের নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধ এলাকার কচুরিপানা ব্যবহার করে সবজি ও মসলা উৎপাদন করলে নিরাপদ সবজি ও মসলা উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি জোগানের পাশাপাশি বর্ষাকালীন আমন ধানের চারা উৎপাদনসহ পচা কচুরিপানা জমিতে জৈবসার হিসেবে ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা ও উৎপাদিকা শক্তি বাড়বে, উৎপাদন বাড়বে এবং জৈবকৃষি বা পরিবেশবান্ধব কৃষি বাস্তবায়নে মাত্রিক অবদান রাখবে।

উপসংহার:
ভাসমান কৃষি ১৫০ বছরের ইতিহাস। আবশ্যকীয় এবং অবশ্যই সমসাময়িক পরিবর্তিত জলবায়ুর অভিযোজন কৌশলে পরিবেশবান্ধব। সম্পূর্ণ স্থানীয় প্রযুক্তিতে বিল অঞ্চলের পতিত জমির পানিতে ভাসমান পদ্ধতিতে বিভিন্ন শাকসবজির চারা উৎপাদন ও চাষাবাদে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে এ এলাকার কৃষকরা। কৃষকরা নিজেরা স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্যদেরও স্বাবলম্বী করছেন। সবজির চারা পরিবহন ও  কেনা-বেচার মাধ্যমে জীবন-জীবিকার নতুন অধ্যায় রচিত হয়েছে কয়েক লাখ মানুষের।

প্রকৃতির সাথে সংগ্রামরত মানুষের এভাবে বেঁচে থাকার উদাহরণ হতে পারে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জলাবদ্ধ এলাকার কৃষির ভাসমান বাস্তবতা। পানি বন্দি বা ২ লাখ হেক্টর জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের। বাংলাদেশের যেখানে অবারিত জলরাশির সীমানা ৩ থেকে ৪ মাস খালি পড়ে থাকে সেখানে পরিবেশবান্ধব ভাসমান সবজির বীজতলা পদ্ধতি অনুসরণ করা যায় অনায়াসে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ কৃষি বাণিজ্যিকীকরণের লক্ষ্যে পরিবর্তনশীল জলবায়ুতে পরিবেশ বান্ধব, নিরাপদ ও টেকসই উৎপাদনক্ষম উত্তম কৃষি কার্যক্রম প্রবর্তন যাতে প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষাসহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব আজ আর তেমন অজানা নহে। জলবায়ুর এ বিরূপ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য বিশেষ করে বিভিন্ন অভিযোজন কলাকৌশল রপ্ত করতে হবে, যাতে করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কৃষিকে মুক্ত রাখা বা ঝুঁকি কমানো যায়। এ থেকে পরিত্রান পেতে হলে আমাদেরকে এই পরিবর্তিত জলবায়ুর সাথে খাপ খাওয়াতে হবে।জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য জনগোষ্ঠীকে সচেতন করা একান্তই প্রয়োজন। ভাসমান কৃষি সংশ্লিস্ট সবার যথোপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বাড়ানোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। এ কাজগুলো যথাযথভাবে করতে পারলে ভাসমান শাকসবজি,ফল চাষ আমাদের  খাদ্যপুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

লেখক:প্রকল্প পরিচালক
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা