আবুল বাশার মিরাজ, বাকৃবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক যুক্তরাজ্যের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। ড. মাহফুজুল হক নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দলের সাথে গত ছয় বছর যাবৎ কাজ করে আসছিলেন ড. মাহফুজুল হক। অতঃপর বাংলাদেশে একোয়াকালচার বিজ্ঞানে তাঁর অবদান, বিশেষ করে একোয়াকালচার বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে গত ২০ বছরে বাংলাদেশের মাটি-পানি, মাছ ও মানুষ নিয়ে তাঁর চলমান গবেষণা ও প্রকাশনা, আন্তর্জাতিক গবেষণা কলাবরেশন, গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা ও যোগ্যতা, দেশী-বিদেশী মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থী সুপারভাইজ করার অভিজ্ঞতা, গুরুত্বপূর্ণ জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ, এবং অন্যান্য স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অবদানের উপর ভিত্তি করে এই নিয়োগ প্রদানে সুপারিশ করেছিলেন গবেষণা দলটি। যার ফলশ্রুতিতে এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে এই সম্মানসূচক নিয়োগ প্রদান করেছে।
অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে যদিও তিনি কোনো আর্থিক সুবিধা পাবেন না। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে গবেষণা ও একাডেমিক ইন্টারেকশন, প্রকল্প বাস্তবায়ন, প্রকল্পে মাস্টার্স ও পিএইচডি সুযোগ সৃষ্টি করা, তাদের বিশাল অনলাইন লাইব্রেরীতে আমার এক্সেস, পৃথিবীর সমস্ত সেরা জার্নাল, বই ও অন্যান্য ডকুমেন্টে ফ্রি এক্সেস ও ডাউনলোডের সুবিধা, সেমিনার সিম্পোজিয়ামে যোগদান ও বক্তব্য রাখা, আরও অন্যান্য জ্ঞান ও তথ্য বিনিময় সুযোগ-সুবিধা পাবেন ড. মাহফুজ।
যুক্তরাজ্যে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়ে তিনি বলেন, একই সাথে বাংলাদেশের সেরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের অন্যতম সেরা এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থাকার সুযোগের বিষয়টি আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আমাকে এই সম্মানে ভূষিত করার জন্য এক্সেটার বিশ্বাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার এই সম্মানের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান স্যার অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন এবং তিনি এজন্য এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে আমার প্রাণপ্রিয় বাকৃবি এবং এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় এক মেলবন্ধনে যুক্ত হয়েছে। এই বিরল অর্জনের পেছনে আমার বাবা (প্রয়াত)-মা, পরিবারবর্গের সদস্যবৃন্দ, প্রাইমারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সকল শিক্ষক মহোদয়গণ, ছাত্র-ছাত্রী, মৎস্য চাষী ও এর সাথে যুক্ত স্টেকহোল্ডারবৃন্দ, সাংবাদিক বন্ধুগণ, শুভাকাঙ্খী সকলেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সেজন্য তাঁদের সকলের প্রতি জানাই গভীর কৃতজ্ঞতা।
অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ মাহফুজুল হক ইতোপূর্বে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিচার্স সিস্টেমের (বাউরেস) সাবেক সহযোগী পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ পশ্চিম ইংল্যান্ডে অবস্থিত এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয় টাইমস হাইয়ার এডুকেশন তালিকায় বিশ্বে ১৪৩ তম, ইমপ্যাক্ট রেঙ্কিং এ ৬৩ তম এবং ইউরোপিয়ান টিচিং রেঙ্কিং এ ২০ তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পৃথিবীব্যাপী জ্ঞান-বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।