অনলাইনে গবাদিপশু ক্রয়ে যাতে কেউ প্রতারিত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

Category: ফার্ম টু ডাইনিং Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, অনলাইনে গবাদিপশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে যাতে কেউ প্রতারণার শিকার না হয় সেটি লক্ষ্য রাখতে হবে। ডিজিটাল হাটের সাথে সম্পৃক্ত এটুআই, একশপ, ই-ক্যাবসহ অন্যান্য ফোরাম সম্মিলিতভাবে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে মানুষের আস্থা বাড়ে। যদি কেউ প্রতারিত হয়, তারা আগামী বছর এ প্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত হতে আগ্রহী থাকবে না।

রবিবার (৩ জুলাই) কোরবানির পশু বিক্রির অনলাইন প্ল্যাটফর্ম 'ডিজিটাল হাট ২০২২' (digitalhatt.gov.bd) এর অনলাইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজধানীর বেইলি রোডের সরকারি বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এটুআই ও একশপ এবং ই-ক্যাব যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।   

এ সময় মন্ত্রী বলেন, ঈদ-উল-আযহায় জরিপ অনুযায়ী ৯৭ লক্ষ ৭৫ হাজার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে । এ চাহিদা মেটানোর জন্য ১ কোটি ২১ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৮৯ টি গবাদিপশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে কোনভাবে পশুর সংকট না হয়। একসময় ভারত-মিয়ানমার থেকে পশু না এলে কোরবানির পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হতো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে এগিয়ে চলেছে তার অন্যতম অধ্যায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এখন চাহিদার চেয়ে উদ্বৃত্ত পশু বাংলাদেশে উৎপাদন হচ্ছে।
 
তিনি আরও বলেন, কোরবানির পশু ব্যবস্থাপনা নিয়ে একসময় নানা বিড়ম্বনা ও বিভিন্ন রকম প্রতিকূল অবস্থা ছিল। সেটা তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিকায়নের মাধ্যমে অনেক সহজ করে দিয়েছে। অনলাইনে পশু ক্রয়ের পর যদি কারো মনোপুত না হয়, সেক্ষেত্রেও তার প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। আর্থিক লেনদেনের জন্য স্মার্ট কার্ডসহ অন্যান্য অ্যাপসের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এটি বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ডিজিটাল দেশে রূপান্তর হওয়ার দৃশ্যমান অবস্থা তুলে ধরেছে।

শ ম রেজাউল করিম আরও যোগ করেন, গতবছর অনলাইনে ৩ লাখ ৭৫ হাজার গবাদিপশু বিক্রয় হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি কারণে অনেকেই কোরবানির জন্য আগ্রহী হয়নি। এ বছর আশা করা হচ্ছে আরো বেশি গবাদিপশু বিক্রয় হবে।

মন্ত্রী বলেন, অনলাইনে ক্রয়কৃত গবাদিপশু পছন্দ না হলে ফেরত প্রদানের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে যাতে এটা সবার কল্যাণে কাজে লাগে এবং কেউ যেন কোনভাবে প্রতারণার শিকার না হয়। অনলাইন প্লাটফর্মে এবছর ভার্চুয়াল ক্যালকুলেটর নতুন সংযোজন করা হয়েছে। এটি ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে অনাহুত সমস্যা থেকে মুক্ত করবে এবং তাদের দুশ্চিন্তা দূর করবে।

তিনি আরও যোগ করেন, অনলাইনে আপলোডকৃত গবাদিপশুর মালিকানা, ঠিকানা, মালিকের মোবাইল নম্বর, পশুর বয়স, ওজন এবং ছবি সম্বলিত তথ্য প্রদান নিশ্চিত করা জরুরি। আপলোডের ক্ষেত্রে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য সনদ নিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের ভেটারিনারী সার্জনরা সেবা প্রদান করবে। তাতে রোগাক্রান্ত ও কোরবানির অনুপযুক্ত পশু নির্ণয় করা যাবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর খামারিদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত করতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবে। এক্ষেত্রে ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্রধান অতিথি আরও জানান, অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে হাসিল আদায় করা যাবে না। এ ক্ষেত্রকে ইজারা বহির্ভূত রাখা হবে এবং এ সংক্রান্ত হয়রানি রাতে কেউ না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এমনকি বাজারের বাইরে বাড়িতে বা রাস্তায় কেউ পশু বিক্রি করলে কোনভাবেই তাদের কাছ থেকে হাসিল বা চাঁদা আদায় করা যাবে না। কোরবানির পশু পরিবহনকারী যানবাহন সড়কে, সেতুতে এবং ফেরিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অনলাইনে ক্রয়কৃত পশু আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে কেউ সমস্যার মুখোমুখি হলে তা সমাধানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ কাজ করবে। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ যেন সমস্যার মুখোমুখি না হয় সেটা আমাদের লক্ষ্য।

এ সময় সবাইকে ছবি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের পরামর্শ প্রদান করেন মন্ত্রী।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান ও এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি-২ প্রকল্পের পরিচালক আ ন ম গোলাম মহিউদ্দিন, ইউএনডিপি'র জাতীয় প্রকল্প ব্যাবস্থাপক কাজল চ্যাটার্জী, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল ওয়াহেদ তমাল প্রমুখ। ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। ডিজিটাল হাট প্লাটফর্ম নিয়ে উপস্থাপন করেন এটুআই এর হেড অব ই-কমার্স রেজওয়ানুল হক জেমি।