কানাডায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মুক্তিযোদ্ধা জাহিদকে সন্মাননা ও দু'জন সমাজকর্মীকে একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড প্রদান

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম: কানাডার  এডমন্টন, ক্যালগারি, ম্যানিটোবা ও টরোন্টো সহ যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও জাতীয় শহীদ দিবস পালনের নানাবিদ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে । রোববার (১৯ ফেরুয়ারি) দুপুরে এডমন্টন পাবলিক লাইব্রেরি (অ্যাবটসফিল্ড-পেনি ম্যাকি) তে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে উপস্থিত শিশু-কিশোরেরা। বিগত এক দশকের ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে তার স্বীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠাকরণ আন্দোলনের পথিকৃৎ বাংলাদেশ হেরিটেজ এন্ড এথ্নিক সোসাইটি অব আলবার্টা এক ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা পালন করে. এতে সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির সভাপতি প্রবীণ সমাজকর্মী মহ. লস্কর।

অনুষ্ঠানে কানাডা প্রবাসী লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক, স্টেপ টু হিউম্যানিটি অ্যাসোসিয়েশনের স্পেশাল প্রজেক্ট কমিটির চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ নর্থ আমেরিকান জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক এর সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কানাডা ইউনিটের নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদকে একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড (বিশেষ সম্মাননা) এবং এডমন্টনের বাংলাদেশ কমিউনিটিতে নিবেদিত প্রাণ দুইজন সংগঠক ও সমাজকর্মী মির্জা বশির ও ফারহানা ইসলামকে একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড (২০২২) প্রদান করা হয়।

আলোচনানুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ, বাংলাদেশ হেরিটেজ এন্ড এথ্নিক সোসাইটি অব আলবার্টার সাবেক সভাপতি আহসান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক চামেলী লস্কর, অনিকা স্বাতীপ্রভা ও সভার সভাপতি মহ. লস্কর।

সোসাইটির সভাপতি প্রবীণ সমাজকর্মী মহ. লস্কর পদক প্রাপ্তদের হাতে একুশে হেরিটেজ এওয়ার্ড সম্মাননা পদক তুলে দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার জাহিদ বলেন, কানাডার কোন মাতৃভাষা নেই তা সত্ত্বেও কানাডা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের চেতনাকে ধারণ করে প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ও তার কয়জন সহযোগী ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (IMLD) হিসাবে প্রবর্তনের সফল উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। বায়ান্নের একুশে একদল বাঙালির আত্মত্যাগের দিন, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের  সহায়তায় ইউনেস্কো এ দিনটিকে IMLD হিসাবে ঘোষণা করে এবং  ২০০০ সাল থেকে, ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের সচেতনতা প্রচারের জন্য দিবসটি বিশ্বব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ২০০৭ সালের মে মাসে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে "বিশ্বের মানুষের দ্বারা ব্যবহৃত সমস্ত ভাষার সংরক্ষণ ও সুরক্ষা প্রচার করার জন্য"; এরই মধ্যে কানাডার কিছু প্রদেশ ও শহর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়েছে; এবং কানাডার পার্লামেন্ট ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মূল্য স্বীকার করতে আইন ও প্রণয়ন করছে। সে তুলনায় বাংলাদেশ আজও বাংলা ভাষার প্রচার, প্রসার ও একে বৈশ্বিক মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি। এর জন্য আমাদের অনেক কাজ করতে হবে, কাজ করতে হবে বহুভাষিক শিক্ষা-শিক্ষাকে রূপান্তরের বিষয়টি নিয়ে।

আহসান উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ হেরিটেজ সোসাইটি অতীতের মতো সঙ্গবদ্ধ ভাবে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও কমিউনিটির উন্নয়নে কাজ করবে এবং একুশের চেতনাকে সমুন্নত করবে।

সাধারণ সম্পাদক চামেলী লস্কর মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে পরিবারগুলোকে আহবান জানান।

আনিকা স্বাতী প্রভা একটি সুমধুর কবিতা আবৃতি করে শুনান এবং দিবসটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রাখেন।

সভার সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। দিবসটি পালনে বেসাকে সহায়তা করে রুটার কিং নামক টেকনিকাল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান।