বগুড়া জেলা পোল্ট্রি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি শরিফুল মাসুদ-এর ইন্তেকাল

Category: সমসাময়িক Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:বগুড়া জেলা পোল্ট্রি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি জনাব শরিফুল মাসুদ গত ২২ আগষ্ট দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে পার্বতীপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯। ২০০৮ সালের ১২ মে ২৮ বছর বয়সী তার একমাত্র পুত্র সুমন আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এরপর পুত্র শোকে ২০১১ সালের ২০ জুলাই তার স্ত্রী অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার তিনিও মারা যান। তার আপনজন বলতে কেউই ছিল না।তিনি বগুড়া শহরের সূত্রাপুরস্থ গাজী প্যালেসে একাই বসবাস করতেন।

রংপুরে কর্মরত তার এক নিকটাত্মীয় জানান ২২ আগস্ট সকালে তিনি বগুড়া শহরের বাসা থেকে একটি রিকশাযোগে বের হয়ে সাতমাথায় গিয়ে নেমে পড়েন এরপর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ ছিলেন। একমাত্র পুত্র এবং স্ত্রীকে হারিয়ে তিনি অনেকটাই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন এজন্য মাঝেমাঝেই দিনি কাউকে কিছু না বলে বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতেন আবার ফিরে আসতেন। কিন্তু এবারের আর ফিরলেন না; চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

শরিফুল মাসুদ বগুড়া জেলার সোনাতলা লুৎফর রহমান বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও বটে। তিনি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের পদ্মপাড়া নামের মৃত লুৎফর রহমানের পুত্র এবং স্থানীয় লুৎফর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা। তার আপনজন বলতে কেউই; নেই তিনি একাই বগুড়া শহরের বাসা থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতেন।

নিখোঁজের দু'দিন পর সৈয়দপুরের পার্বতীপুর জিআরপি পুলিশ তার উদ্ধার করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি থেকে জিআরপি পুলিশ তার পরিচয় পেয়ে যায় এরপর তারা তার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে এবং প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সেরে ২৪ আগষ্ট দিবাগত রাতেই তারা লাশ হস্তান্তর করে । এরপর  ২৫ আগষ্ট তার লাশ বগুড়ায় নিয়ে আসা হয় এবং বাদ মাগরিব বগুড়া শহরের সুত্রাপুরস্থ কেন্দ্রীয় ঈদগাহে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শহরের নামাজগড় গোরস্থানে তার একমাত্র পুত্র ও স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

তার মৃত্যুতে বগুড়া তথা উত্তরবঙ্গের পোল্ট্রি অঙ্গনে এক শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি বগুড়া জেলা পোল্ট্রি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি হিসেবে খামারীদের মাঝে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। বগুড়া সাবগ্রামে চক আলম এলাকায় ত্রী'স নামে একটি হ্যাচারি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেখানে তিনি সোনালী মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতেন। তার একমাত্র পুত্রের মৃত্যুর পর তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য ধীরে ধীরে গুটিয়ে ফেলেন এরপর স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আরো নীরব হয়ে যান। বগুড়া জেলায় পোল্টির শুরুর দিক ১৯৯০ সাল থেকেই তিনি কাজ করে গেছেন। জয়পুরহাটে সোনালী মুরগি লালন পালন শুরু হয় সে সময় তিনি জামালগঞ্জ সরকারী খামারের তৎকালীন সহকারী পরিচালক ও বিশিষ্ট পোল্ট্রি কনসালটেন্ট সোনালী মুরগির জনক কৃষিবিদ শাহ জামালের সাথে অনেক কাজ করেছেন।

তার মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বগুড়া জেলাসহ উত্তরবঙ্গের সকল পর্যায়ের পোল্ট্রি খামারি এবং সমিতির নেতৃবৃন্দ। শোকবার্তায় খামরী নেতৃবৃন্দ বলেন, বগুড়া জেলায় পোল্ট্রি শিল্পে তার অবদানের কথা খামারীরা সব সময় মনে রাখবে। তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন। মহান রাব্বুল আলামিন তাকে জান্নাত নসিব করুন।-আমিন