এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:সাংবিধানিক সরকার উচ্ছেদের হুংকার নির্বোধের হুংকার বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদদীন হল মাঠে শেখ কামাল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২২ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার, সাংবিধানিক সরকার। সাংবিধানিক সরকার উচ্ছেদে ১০ তারিখ, ১২ তারিখ, এই ঈদের পর, ওই ঈদের পর বলে যারা হুংকার দিচ্ছে, এগুলো হচ্ছে নির্বোধের হুংকার। এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগের শঙ্কা কিন্তু রয়েছে। অশুভ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করার বিকল্প নেই। দেশের সাধারণ মানুষ সরকারের পক্ষে আছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের গৌরবময় অর্জনের মূল নেতৃত্বে ছিল ছাত্রলীগ। '৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট, '৬২ এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, '৬৬ এর ছয়দফা আন্দোলন, ৬৮ এর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, '৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, '৭০ এর নির্বাচনে বিজয় এবং '৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কাছে জাতির প্রত্যাশাও অনেক।
মন্ত্রী আরও বলেন, কখনও কখনও হোঁচট খাই, রাজনীতির গৌরবময় অধ্যায় বিলীন হয়ে যাচ্ছে কিনা। তবু আশাবাদী থাকি, ছাত্রলীগের আদর্শিক কর্মী যারা, আদর্শিক নেতৃত্ব যারা, তারা কখনও হারাবে না। বাঙালি জাতির রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে ছাত্রলীগ ঘিরেই উৎসমূল। ছাত্র রাজনীতি যেন হয় শিক্ষার কল্যাণে, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে, দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিষ্ঠ ভ্যানগার্ডের ভূমিকায়। যে ছাত্র ভালোভাবে লেখাপড়া সম্পন্ন করতে পারবে না, জাতির প্রত্যাশা পূরণে সে অনেক জায়গায় হোঁচট খাবে। সেজন্য ভালো করে লেখাপড়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন আমি বই কলম হাতে তুলে দেই, আমি অস্ত্র তুলে দিয়ে মেধাবী ছাত্রদের নষ্ট করার পক্ষে নই। এটাই হচ্ছে ছাত্রলীগের মৌলিক বিশ্বাসের জায়গা।
তিনি আরও বলেন, নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা না করলে এক সময় বিদেশি সংস্কৃতি আমাদের মৌলিকত্বকে গ্রাস করে ফেলতে পারে। সেজন্য ক্রীড়া ও অপরাপর সংস্কৃতি চর্চার আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশাত্মবোধের সংস্কৃতি চর্চায় পিছিয়ে নেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার কাছ থেকে শেখ হাসিনা আমাদের প্রেরণা নিতে হবে, পাথেয় রচনা করতে হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, ছাত্রলীগকে নিজেদের ইস্পাতকঠিন ঐক্য দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর রাখতে হবে। নেতৃত্ব বিতর্কিত হয় এমন কোন বক্তব্য এমন কোন বিবৃতি দেওয়া যাবে না। এটা সংগঠনবিরোধী কাজ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করতে হবে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাস রাখতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি বিশ্বের বেস্ট ক্রাইসিস ম্যানেজার। তিনি আজ দুর্গতদের কণ্ঠস্বর। আমাদের সৌভাগ্য আমরা একজন শেখ হাসিনা পেয়েছি। তার সবচেয়ে বড় ভ্যানগার্ড, সবচেয়ে বিশ্বাসের জায়গা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ যদি সোচ্চার থাকে, তার আদর্শিক বিশ্বাসে দৃঢ়তার সঙ্গে থাকে তাহলে মির্জা ফখরুল ইসলাম কী বলছে, অন্যরা কী বলছে, এগুলো কিছুই না।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্তর সঞ্চালনায় ও সভাপতি আজহারুল ইসলাম মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিললাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিতাস গ্যাস পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক সাইফুদ্দিন নাছির, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ।
পরে মন্ত্রী পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে শেখ কামাল স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন করেন।