বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুড’র চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন

Category: ফোকাস Written by agrilife24

রাজধানী প্রতিনিধি:সুস্থ্য জাতি গঠনে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভ্যালু চেইন গড়ে তুলতে, বৈজ্ঞানিক উপায়ে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, আইনি সহায়তা গ্রহনসহ বিবিধ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সোসসাইটি ফর সেইফ ফুড (বিএসএসএফ) এর চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস (বিইউএইচএস) অডিটডরিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপি এ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন, সহ নিরাপদ খাদ্য সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহন করেণ। সম্মেলনের মুল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- "Safe and Nutritious Foods for combatting COVID-19 pandemic."

সোসাইটির সভাপতি ড. মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ড. মিথিলা ফারুক’র উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস’র ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ফরিদুল আলম। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মাহবুবুল হক এডিজি, ডিপার্টমেন্ট অব ফিসারিজ (DOF), ঢাকা, এবং জনাব মসিউর রহমান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্যারাগন গ্রুপ ও প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ড্রাস্ট্রিস সেন্ট্রাল কাউন্সিল (BPICC), সম্মানীয় অতিথি ছিলেন প্রফেসর ড. মো: আনোয়ার হোসেইন ডীন ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথ্ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস।

সম্মেলনে স্বাগত ভাসন প্রদান করেন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর সেফ ফুড’র সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. কেএইচএম নাজমুল হুসাইন নাজির।



সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মনজুর মোরশেদ আহমেদ, সদস্য, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা। মুল প্রবন্ধে তিনি খাদ্য অনিরাপদ হওয়ার কারণসমুহ, করোনাকালিন সময়ে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্বসহ বাংলাদেশের নিরাপদ খাবারের বর্তমান অবস্থা, চলমান কুসংস্কার ও আইনগত দিকসমুহ সম্পর্কে বিশদভাবে বর্ণনা করেন।

সম্মেলনে ৩৬টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। সারা বাংলাদেশের ৩২ টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে দেড় শতাধিক সদস্য সম্মেলনে অংশগ্রহন করেন। সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ঠ বিজ্ঞানীদেরকে উৎসাহিত করা হয় এবং যুগোপযোগী গবেষণা করার পরামর্শ প্রদান করা হয়।  



নিরাপদ খাদ্য সবার অধিকার। এই অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি সচেতন জনগনসহ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমুহের। সম্মেলনে নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তির নানাদিক ও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় অর্থায়নসহ ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা, জনবল বৃদ্ধি ও তাদের কাঙ্খিত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা নিঃসন্দেহে নানাভাবে খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে। পাশাপাশি নানা ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের ফলে আমাদের মাটি, পানি ও বাতাস দূষিত হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা ঝুকির মধ্যে রয়েছে। খাদ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত জনশক্তি ও মন্ত্রণালয়সমুহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক বড় এক চ্যালেঞ্জ।



সম্মেলন শেষে গৃহীত ঘোষনায় বলা হয়, নিরাপদ খাদ্য চক্র নিশ্চিত করতে হলে সরকারকে সর্বক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য গবেষণা জোরদার করতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। ‘খাদ্যমান মনিটরিং’ ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে  কমিউনিটি এন্টারপ্রাইজ’ গড়ে তুলতে হবে। নিরাপদ খাদ্যে অর্থায়ন বৃদ্ধির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসার জন্য সম্মেলনের পক্ষ থেকে আহবান জানানো হয়। সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে খাদ্যকে এমন একটা মানে নিয়ে যেতে হবে যাতে করে উন্নত দেশে রপ্তানীর ক্ষেত্রে কোন বাঁধা না থাকে।