বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে রক্ষা করতে না পারা বাঙালি জাতির বড় ব্যর্থতা-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

Category: ফোকাস Written by agrilife24

এগ্রিলাইফ২৪ ডটকম:জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারকে রক্ষা করতে না পারা বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে শেখ রাসেল দিবস ২০২১ উপলেক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, "শেখ রাসেলকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবিকে হত্যা করতে চেয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। জাতির পিতার পরিবারকে রক্ষা করতে না পারা জাতি হিসেবে আমাদের বড় ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে জাতির ইতিহাসের এ গ্লানিকে আরো জঘন্যতম অধ্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যে কারণে শেখ রাসেলের জন্মদিনে আনন্দ-উচ্ছ্বাসের পরিবর্তে আমাদের হৃদয় থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে"।

মন্ত্রী আরো বলেন, "শেখ রাসেল ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রক্ত ও আদর্শের উত্তরসূরি। জন্মের পরই তার ধমনীতে রাজনীতি সূচিত হয়েছিল। অসাধারণ, অকল্পনীয় ব্যক্তিত্বের বিকাশ তার মধ্যে হয়েছিল। শিশু রাসেলকে পর্যবেক্ষণ করে অনুধাবন করা যায়, তিনি বেঁচে থাকলে আজ জাতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসুরি হতেন। কিন্তু আমরা সে সুযোগ নিতে পারিনি। এটা বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য"।

শ ম রেজাউল করিম যোগ করেন, "শেখ রাসেলের মতো নিষ্পাপ শিশুকে যারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, সে মানুষগুলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না, তারা বাংলাদেশে বিশ্বাস করেনা, বঙ্গবন্ধুতে বিশ্বাস করে না, তারা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান-এর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না। এই মানুষগুলো বাংলাদেশ থেকে নিঃশেষ হয়ে যায়নি। তাদের উত্তর প্রজন্ম এখনো বাংলাদেশে রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে এখনো তারা ধ্বংস করতে চায়"।
 
"শেখ রাসেলের জন্মদিনের মনে রাখতে হবে, আমাদের শিশুরা যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত নির্যাতনের শিকার না হয়, নির্দয় আচরণের শিকার না হয়। আগামী দিনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শিশুদের মেধা ও চিন্তা-চেতনায় আদর্শ ও সততার বিকাশ ঘটাতে হবে। এভাবে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে পারলে তাদের ভেতরে শিশু শেখ রাসেলকে আমরা খুঁজে পাবো"-যোগ করেন মন্ত্রী।

তিনি আরো বলেন, "শিশু শেখ রাসেলকে যারা হত্যা করেছে, জাতির জনককে যারা হত্যা করেছে, তারা একটি অপশক্তি, তারা একটি প্রতিক্রিয়াশীল চক্র। তাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা জন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরসূরি শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। তাঁর মধ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুকে খুঁজে নিতে চাই, শেখ রাসেলকে খুঁজে নিতে চাই। তাঁর মধ্যে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ খুঁজে নিতে চাই। তাঁর মধ্যে খুঁজে নিতে চাই হাজার বছরের সম্প্রীতির বাংলাদেশ"।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ শেখ আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল জলিল এবং মেরিন ফিশারিজ একাডেমির অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ওয়াসিম মকসুদ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার। মন্ত্রণালয়, মৎস্য অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মন্ত্রী মন্ত্রণালয় এবং আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে মৎস্য অধিদপ্তরে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।