বাকৃবি প্রতিনিধি-বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তব উদ্যোক্তায় রূপান্তর করতে ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব প্রোগ্রামের (ইউআইএইচপি) একটি ব্রিফিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে এ ব্রিফিং সেশন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বাহাটেপাক)-এর উদ্যোগে এবং বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে ইউআইএইচপি কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে ইউআইএইচপির জাতীয় প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী মো. লতিফুল খবিরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, ইউআইএইচপির ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব ম্যানেজার জাকেরা রহমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক এবং বিভিন্ন বর্ষের শতাধিক শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইউআইএইচপির এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তব উদ্যোক্তায় রূপান্তরের জন্য সহায়তা প্রদান। বাংলাদেশ এগ্রিকালচার অলিম্পিয়াড ওই অনুষ্ঠানে ইউআইএইচপি-র আনুষ্ঠানিক আউটরিচ পার্টনার হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
সেশনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা দেশের দুইজন সফল কৃষি-স্টার্টআপ উদ্যোক্তার কাছ থেকে অনুপ্রেরণামূলক অভিজ্ঞতা শুনেছেন। কৃষিভিত্তিক দুটি স্টার্টআপ 'কৃষি স্বপ্ন'-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সায়েদ জুবায়ের হাসান এবং 'ফসল ডটকম'-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মো. মামুনুর রশিদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, "তরুণরা তাদের সময়, শক্তি ও নিষ্ঠা বিনিয়োগ করে আজ সফল উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য এমন পরিবেশ তৈরি করেছি, যেখানে তারা সৃজনশীলতা প্রকাশ করে নতুন ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে। এই উদ্ভাবনী কেন্দ্রটি সরকারের সহযোগিতায় ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আশা করি, বাকৃবি ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন অবকাঠামো দ্রুত শেষ করে এই উদ্যোগকে সর্বোচ্চ সাফল্যে পৌঁছাতে পারব।"
তিনি আরও বলেন, "আমি তরুণ প্রজন্ম ও আমার শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব, সময় নষ্ট করো না। কখনো পিছিয়ে থেকো না, বরং নিরন্তর এগিয়ে যাও লক্ষ্য অর্জনের পথে।"
অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ বলেন, "যদিও এই ইনোভেশন হাবটি আগেই গঠিত ছিল, কিন্তু তখন অগ্রগতি ছিল ধীর। মাননীয় উপাচার্য নিজে উদ্যোগ নিয়ে এই ইনোভেশন হাবের কাজ গতিশীল করেছেন এবং ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে রেখেছেন।"
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, "ছাত্রজীবনে উদ্ভাবনের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি থাকে, যা পরবর্তীতে কমে যায়। এ কারণেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। অনেক স্টার্টআপ উঠে আসবে, অনেকেই স্বীকৃতি পাবে, তবে আসল সফলতা হবে এই উদ্যোগের দীর্ঘমেয়াদি ফলাফল। আমরা বলব না যে এই প্রোগ্রাম পুরো বাংলাদেশের পরিস্থিতি বদলে দেবে, তবে দেশের উদ্ভাবনী সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। আশা করি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিসরে সফলতা অর্জন করবে।"