আল্লাহ তায়ালা'র অসীম দয়া-নীল নদ

Category: ইসলাম ও জীবন Written by agrilife24

ইসলামিক ডেস্ক:মিশরকে বলা হয় নীল নদের দান। আল্লাহ তায়ালা এক রাত্রে নীলনদের পানিকে ১৬ গজ উচ্চতায় প্রবাহিত করে দিয়েছেন। তারপর নীল নদ চকচকে ঝকঝকে পানিতে ভরে উঠেছিল এবং আজ পর্যন্ত এক মিনিটের জন্যও নীল নদের পানি আর শুকিয়ে যায়নি।

হিজরি ২০ সনে ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) এর শাসনামলে বিখ্যাত সাহাবী হযরত আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর নেতৃত্বে সর্ব প্রথম মুসলমানরা মিশর বিজয় করেন। মিশরে তখন চলছিল প্রবল খরা। কারণ নিয়ম অনুযায়ী সেই সময়টি ছিল নীল নদের পানি শূন্য হয়ে পড়ার সময়।

পানি শূন্য নীল নদ দেখে সেনাপতি আমর ইবনুল আস (রাঃ) সেখানকার অধিবাসীদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন নীল নদের এমন অবস্থা কেন?  তারা প্রতি উত্তরে বলেছিল হে আমীর, নীল নদে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ম অনুসারে পানি প্রবাহিত হয় এবং বাকি সময় নীল নদ পানি শূন্য থাকে, তবে নদীকে যুবতী কন্যা উৎসর্গ করলে নদী আবার পানিতে ভরে উঠবে। তিনি বলেছিলেন সেটা কি? তারা উত্তর দিয়েছিল, নীল নদ এখন পানি শূন্য, কিন্তু এই মাসের ১৮ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা কোন এক কুমারী সুন্দরী যুবতীকে নির্বাচন করব। অতঃপর তার পিতা-মাতাকে রাজি করিয়ে তাকে সুন্দরতম অলংকারাদি ও উত্তম পোশাক পরিধান করিয়ে নীলনদে নিক্ষেপ করব। এর ফলে দেবতার আশীর্বাদে নীল নদ আবার পানিতে ভরে উঠবে।

আমর ইবনুল আস (রাঃ) তাদের কথা শুনে বললেন, ইসলামে এই কাজের কোন অনুমোদন নেই। কেননা ইসলাম প্রাচীন সব জাহেলী রীতি-নীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অতঃপর আমরের কথা মতো তারা সুন্দরী যুবতী উৎসর্গ করা থেকে বিরত থেকে পর পর তিন মাস পানির অপেক্ষায় বসে থাকলো। কিন্তু নীলনদে কোনও প্রকার পানি বৃদ্ধি পেল না। উপায় না দেখে সেখানকার অধিবাসীরা দেশত্যাগের কথা চিন্তা করতে শুরু করলো। নীল নদের এই অবস্থা দেখে আমর খলিফা ওমর (রাঃ) কে সব কিছু জানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন এবং সকল ঘটনা লিখে তিনি খলিফাকে পত্র প্রেরণ করলেন। আমরের পত্র পেয়ে খলিফা ওমর (রাঃ) নীল নদকে উদ্দেশ্য করে একটি পত্র লিখে আমরের কাছে প্রেরণ করলেন এবং পত্রটি তিনি নীল নদের কাছে পৌঁছে দিতে নির্দেশ দিলেন। নীল নদের প্রতি লেখা ওমর (রাঃ) এর পত্রটি তার নির্দেশ মোতাবেক আমর ইবনুল আস নীল নদের তীরে গিয়ে পত্রটি নদীতে নিক্ষেপ করেন। পরদিন শনিবার সকালে মিশর বাসী অতি আশ্চর্যের সাথে লক্ষ করলো, আল্লাহ তায়ালা এক রাত্রে নীলনদের পানিকে ১৬ গজ উচ্চতায় প্রবাহিত করে দিয়েছেন। তারপর নীল নদ চকচকে ঝকঝকে পানিতে ভরে উঠেছিল এবং আজ পর্যন্ত এক মিনিটের জন্যও নীল নদের পানি আর শুকিয়ে যায়নি।

ইমাম ইবনু কাসির প্রসিদ্ধ কিতাব আল-বিদায়া অন-নিহায়া। খন্ড:৭, পৃ: ১১৪, ১১৫।

মুমিন মুসলমানেরা সবসময় মহান রাব্বুল আলামিনের নির্দেশিত পথে চলেন। আসুন আমরাও মহান আল্লাহ তায়ালা'র অসীম দয়া লাভে তার নৈকট্য লাভে বেশি বেশি নেক আমল করি। রাব্বুল আলামিন আমাদের সকলকে সরল পথে চলার তাওফিক দিন।-আমিন