যে যে শর্তসমূহ পাওয়া গেলে একজন ব্যক্তির উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে?

ইসলামিক ডেস্ক:রমজানে এ বছর বাংলাদেশে ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, খেজুর, কিশমিশ ও পনিরের সর্বোচ্চ বাজারমূল্যের ভিত্তিতে এই ফিতরা নির্ধারণ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটি। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যের যেকোনো একটি পণ্য বা এর বাজারমূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে। পণ্যগুলোর স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও ফিতরা আদায় হবে।

ছদাকাতুল ফিতর প্রত্যেক স্বাধীন মুসলমানের উপর ওয়াজিব যিনি নিত্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যতীত নিসাবের মালিক। এর অর্থ নিম্নের শর্তসমূহ পাওয়া গেলে একজন ব্যক্তির উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে।

১.স্বাধীন হওয়া। সুতরাং গোলামের উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব নহে।
২.মুসলমান হওয়া। সুতরাং অমুসলমানের উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব নহে।
৩.নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া। সুতরাং কেহ যদি নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয়, তার উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না। এখানে নিছাব বলতে সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রূপার মালিক অথবা যেকোন একটির সমপরিমাণ যে কোন সম্পদের মালিক হয় তাহলে তার উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে।
৪.নিছাব পরিমাণ সম্পদ সর্বপ্রকার প্রয়োজনীয় বস্তু হতে অতিরিক্ত হওয়া। অর্থাৎ একজন ব্যক্তি জীবন যাপন করতে তার বাড়ি-ঘর, খাট পালং, আসবাবপত্র, যাতায়াতের জন্য যানবাহন, পরিধানের বস্ত্র ইত্যাদি হল নিত্যপ্রয়োজনীয় সম্পদ। তাই নিত্য প্রয়োজনীয় সম্পদের মূল্য যদি নিছাব পরিমাণও হয় তার উপর ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে না।

উল্লেখ্য যে, ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্য বালেগ ও জ্ঞানী হওয়া শর্ত নহে। সুতরাং না বালেগ বা পাগল ব্যক্তি যদি নিসাবের মালিক হয় তার উপরও ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে। তাই নাবালেগ ও পাগলের অভিভাবক তাঁদের পক্ষ হতে আদায় করে দিবে। অভিভাবক আদায় না করে থাকলে নাবালেগ বালেগ হওয়ার পর এবং পাগল তার পাগলামী দূর হওয়ার জন্য সম্পদ বন্ধনশীল হওয়ার শর্ত নহে। বরং অবন্ধনশীল মালও যদি নিসাব পরিমাণ হয় ছদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব হবে।