জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধে ভেটেরিনারি সেবা-প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

ড. নাছরীন সুলতানা জুয়েনা:কভিড-১৯ নামক একটি অতিশয় ক্ষুদ্র আর এন, এ ভাইরাসের হামলায় পুরো বিশ্ব একটি "বিশ্বজনীন বিপর্যয়” এ রয়েছে। এই বিপর্যয়ের প্রভাবগুলির মধ্যে বিশ্বজুড়ে আর্থিক, মানসিক, শারীরিক এবং সামাজিক সম্পর্কের ঝুঁকিগুলি অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই হামলা 'সন্ত্রাসবাদী হামলার চেয়েও বেশি শক্তিশালী' বলে তা একে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসাবে ঘোষণা করেছে। আমার লেখার সময়  ওয়ার্ল্ডোমিটারে SARS-CoV-2 সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা  দেখাচ্ছিল বাংলাদেশে ১০৭৮১ জন সহ বিশ্বে সর্বমোট ৩০,৮৩,৬৫৬ জন। বাংলাদেশ সহ বিশ্বর সব দেশে করোনার কারনে মৃতদের  শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

গত একবছরে বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় টিকা উদ্ভাবিত হয়েছে এবং মাত্র ১০%জনসংখ্যা প্রয়োগের আওতায় এসেছে। তবে, বিজ্ঞানীরা  এই ভাইরাস এবং এর বিবর্তনকে আরও ভালভাবে বুঝতে এবং তা প্রতিহত করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। অদ্যাবধি নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ হিসাবে দ্রুত সনাক্তকরণ, আইসোলেশন, হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন, মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি অনুশীলন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন সংক্রমনের “দ্বিতীয় ঢেউ”  ধারনা করা হচ্ছে এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার হিসাবে ভাইরাসের নতুন স্ট্রেইনের বিস্তার রোধে জরুরি সেবা কর্মীদের সীমিত পদক্ষেপ নিয়ে দেশব্যাপী ‘লক ডাউন” চলছে। এখন অবধি, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রোধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতি বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে, যার জন্য আমাদের সকলের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার দরকার। শরীরে প্রানীজ প্রোটিনের যোগানের লক্ষ্যে দুধ, মাংস এবং ডিমের  সুরক্ষিত সরবরাহের জন্য আমরা যথাক্রমে গবাদিপ্রাণি এবং হাঁস-মুরগির উপর নির্ভর করি। ভেটেরিনারিয়ানগন নিরাপদ খাদ্যের উৎস হিসাবে ফুড এনিম্যালের স্বাস্থ্য সংরক্ষন, ব্যবস্থাপনা ও মঙ্গলিকরনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে।

ভেটেরিনারি শিক্ষার প্রকৃতি ও এতে অন্তর্ভুক্ত বিস্তৃত বিষয়-জ্ঞান এর কারনে ভেটেরিনারিয়ানগন বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা, জুনোটিক রোগ প্রতিকার, পরিবেশ ও জীব নিরপত্তায় সরাসরি অংশগ্রহন করে ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করে মানব স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ অবদান রাখছে এবং বিশ্ব জুড়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।২০২০ সালে বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে বিশ্ব প্রাণি স্বাস্থ্য সংস্থা (ও আই ই) গবেষণা থেকে শুরু করে মানব নমুনা পরীক্ষার পাশাপাশি গবেষনার রিসোর্স আদান-প্রদান সহ বিভিন্ন মানবিক সহযোগিতায় ভেটেরিনারি পেশার অবদান বিশ্বের সামনে অতি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে। এবার ২০২১ সালে বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে “Veterinarian response to the Covid-19 crisis”। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা দ্বারা প্রকাশিত গাইডলাইন অনুসরণ করে ভেটেরিনারিয়ানগন বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বহুদেশে এই কোভিড-১৯ অতিমারি তে বিভিন্ন উপায়ে অবদান রাখছে।  
অতিমারির শুরুতেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস),বাংলাদেশ এর অধীনে বিভিন্ন উপাজেলা ভেটেরিনারি হসপিটাল প্রায় ১৬,০০০ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) এবং ভেন্টিলেটর মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী দান করে। আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, ভারত, ফিনল্যান্ড, দক্ষিন আফ্রিকার ভেটেরিনারিয়ানদের মত বাংলাদেশেও জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাজে সাহায্য করছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (ঢাকা ট্রিবিউন, ২৩ ও ২৫ এপ্রিল ২০২০) এর ভেটেরিনারিয়ানরা তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে  নিজস্ব ল্যাবে কোভিড রোগীর নমুনা সংগ্রহ ও সনাক্তকরনে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ময়মনসিংহ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে কোভিড-১৯ সন্দেহভাজনদের নমুনা পরীক্ষা করতে যথাক্রমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি এবং হাইজিন বিভাগ  ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে (ডেইলি স্টার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০) এবং সিভাসু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (ডেইলি সান ৫মে ২০২০) কাছে রিয়েল-টাইম পিসিআর মেশিন সরবরাহ করে। শুধু তাই নয়, ভেটেরিনারি অধ্যাপকসহ বিজ্ঞানীরা হাসপাতাল ও পরীক্ষাগারগুলিতে কভিড-১৯ পরীক্ষা করতে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করছে। জনস্বাস্থ্য ও জীবন রক্ষার্থে, ভেটেরিনারি বিজ্ঞানীরা মানবদেহে এই রোগের প্রভাব জানতে এবং পর্যবেক্ষন করতে গবেষণায় সহায়তা করছেন (জাতীয় পাট গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে সিভাসুর ভেটেরিনারি বিজ্ঞানীগন কোভিড জীবাণুর জীন সিকোয়েন্স সনাক্তকরন, রেপিড একশন কিট ও টিকা উদ্ভাবনে কাজ করছেন। দুইজন ভেটেরিনারিয়ানের নাম এখানে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য-স্বল্পমূল্যে কোভিড টেস্টকিট আবিস্কারক ভেটেরিনারিয়ান ডঃ বিজন কুমার শীল এবং ফাইজারের কোভিড টিকা আবিস্কারক টিম এর প্রধান ভেটেরিনারিয়ান ডঃ আলবার্ট বোরলা। শুধু জনস্বাস্থ্যেই নয়, জনসাধারনের প্রানীজ খাদ্যের সম্ভাব্য ঘাটতি এড়াতে ও সরবরাহ নিশ্চিন্ত  করতে আমাদের গবাদী-প্রাণি ও হাস-মুরগী খামারিদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সাবলীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রাণিচিকিৎসকগন অসুস্থ প্রাণিদের চিকিৎসা সেবা সহ খামারিদের পরামর্শ দিয়ে অপরিহার্য ও প্রশংসনীয়  ভূমিকা পালন করছেন। আমি কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরন করছি সেইসব ভেটেরিনারিয়ানদের যারা নিজ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের আরোগ্য কামনা করছি।

এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে সার্স, সোয়াইন ফ্লু, মার্স, ইবোলা পর্যন্ত বিগত কয়েক  দশকে একের পর এক জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাব বিশ্বে দেখা গেছে। বাণিজ্যের বিশ্বায়ন,আন্তর্জাতিক ভ্রমণ, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, কৃষিকাজের আধুনিকতার কারনে ইকোসিস্টেমের পরিবর্তন-এই সমস্ত কারণগুলি জোনোটিক প্যাথোজেনগুলির উত্থান এবং দ্রুত প্রসারণ ,উভয়ের জন্য প্রভাবশালী ঝুঁকি হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন মহামারীর ঘটনা একটি প্রশ্ন উত্থাপন করছে-যদি কোনও ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা বিকশিত হয় তবে মহামারীটি কি চিরতরে চলে যাবে? উত্তরটি সোজা, তবে পরিশীলিত ও সীমিত। কারন, প্রকৃতি এই মহামারীর সময় তার সৌন্দর্য উপভোগ করছে, হয়তোবা আবার করোনার মতো নতুন কোন এক জীবানু প্রকৃতির পক্ষে কাজ করবে- কে জানে? মহামারী পরিস্থিতি থেকে শেখা ব্যবহারিক, সমসাময়িক চিন্তাভাবনা এবং আলোচনা আমাদের একটি বিশেষ কার্যের দিকে ইঙ্গিত করছে-সেটি হচ্ছে জুনোটিক রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য ঝুঁকি পর্যালোচনা, তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ ও সংরক্ষন, মহামারী প্রতিরোধের জন্য কৌশল এবং কৌশলগুলি বাস্তবায়নের জন্য মানসিক ও অর্থনৈতিক প্রস্তুতি। এ কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশে এখন জাতীয় নীতি-নির্ধারনে ভেটেরিনারি দক্ষতার সমন্বয় ঘটানো খুব প্রয়োজন।  

কাজের প্রকৃতি, বৈচিত্রময় ও বিস্তৃত জ্ঞানের কারনেই প্রাণিচিকৎসকগন প্রাণীজ খাদ্যের উৎস প্রাণিদের ব্রুসিলোসিস, যক্ষ্মা, অ্যানথ্রাক্স, ক্ষুরা রোগ, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, সোয়াইন ফ্লু এবং জলাতঙ্কসহ আরো অনেক জুনোটিক ও অতিমারি রোগের প্রাদুর্ভাব ও রোগজীবাণু নিয়ন্ত্রণের সফলভাবে পরিচালনায় অভিজ্ঞ। প্রাণিচিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধের জন্য ভেটেরিনারিয়ানগন এপিডেমিওলোজিক্যাল স্টাডি্তে অভ্যস্ত। তাই, জনস্বাস্থ্যে  ঝুঁকিপূর্ণ রোগগুলির প্রতিরোধের জন্য এপিডেমিওলজিকাল মডেলিং-এ ভেটেরিনারিয়ানগন অগ্রণি ভূমিকা পালন করতে পারে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলিতে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত উদ্বেগ মোকাবেলায় প্রাণিচিকিৎকরা দুর্দান্ত অবস্থানে আছেন এবং তাদের কর্মকান্ড প্রশংসিত। বাংলাদেশে ভেটেরিনারি জনস্বাস্থ্য কর্মসূচির যথাযথ পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও তদারকি নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় নীতি পর্যায়ে ভেটেরিনারি দক্ষতার সাথে সমন্বয় হওয়া অত্যন্ত জরুরি।

ইকোসিস্টেম বা পরিবেশকে কে আঘাত করে যতক্ষণ মানবতা প্রকৃতিকে একটি বৃহৎ আকারের কৃত্রিম কৃষিতে রূপান্তরিত করে রাখবে, বন্য প্রাণী এবং মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে এবং ক্রমবর্ধমানভাবে তা অব্যাহত থাকবে, কোভিড ১৯-এর মতো মহামারী বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি ও মানবজীবনের জন্য হুমকি হয়ে থাকবে। গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে যে SARS-CoV, MERS-CoV কভিড ভাইরাসের মধ্যবর্তী হোস্ট হিসাবে যথাক্রমে বাদুড়, পাম সিভেটস এবং ড্রোমডারি উট এবং টার্মিনাল হোস্ট হচ্ছে মানুষ। SARS-CoV-2 এর মধ্যবর্তী হোস্টহিসাবে চীনের উহানে অবস্থিত সীফুডের বাজারে বিক্রি হওয়া অজানা বন্য প্রাণী বলে মনে করা হচ্ছে । প্রাণী মানুষের বিভিন্ন সংক্রামক বা উদীয়মান রোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবে কাজ করে। এ কারণেই, নিরাপদ জনস্বাস্থ্যের জন্য মানুষ, প্রাণী এবং পরিবেশের স্বাস্থ্য একই বন্ধনে আবদ্ধ। তাই “ওয়ান হেলথ কনসেপ্ট” অর্থাৎ “এক স্বাস্থ্য” ধারনা বিগত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে জীব বিজ্ঞান, ভেটেরিনারি মেডিসিন এবং বায়োমেডিকাল সায়েন্সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।তবে এটি বাংলাদেশে সাধারন জনগণের কাছে অনেকটাই অজানা।

১৯৬০ সালে “ওয়ান হেলথ” ধারণায় বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একমত হওয়ার পর থেকেই যদিও উন্নত দেশে প্রশাসনে জুনোটিক রোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় “ওয়ান হেলথ” বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বাস্তবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে এর প্রয়োগে বেশ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পূর্ববর্তী মহামারী হতে লব্ধ জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করা সত্ত্বেও, বাংলাদেশসহ আরো অনেক স্বল্পোন্নত দেশে জনস্বাস্থ্যের সাথে জড়িত সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে “ওয়ান হেলথ” প্রসঙ্গে প্রাণিচিকিৎসকদের অবস্থান এখনো শক্তভাবে গুরুত্ব পায়নি। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই, খাদ্য সুরক্ষা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণসহ হিসাবে আমরা যে সকল সংজ্ঞায়িত চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয়েছি তার অনেকগুলি বিশ্বায়নের ফলস্বরূপ হতে পারে। কোনও দেশ নিজেরাই এই সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারে না। বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক পদ্ধতি এবং নীতিগুলি অবশ্যই ক্রমবর্ধমান বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে মানিয়ে নিতে হবে। রাস্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য আমাদের বৈজ্ঞানিক অঙ্গনে বিজ্ঞান কূটনীতি বা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা (Science for diplomacy) প্রয়োজন। সুতরাং ওয়ান হেলথ কনসেপ্ট বাস্তবায়নের সাথে সাথে বহিঃবিশ্বে গড়ে উঠা বিজ্ঞান কূটনীতিতেও বাংলাদেশের ভেটেরিনারি গবেষনা ও গবেষকরা বিশেষ ভাবে ভুমিকা রাখতে পারে বলেও আমি মনে করি।

পরিশেষে বলতে চাই, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ওয়ান হেলথ-এর কো-চেয়ারপার্সন হয়েছেন। ২০২০ সালে-একটি বিশেষ বছর, বাঙালি এবং বাংলাদেশের জন্য একটি আনন্দ উদযাপনের বছর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবার্ষিকী্তে বঙ্গবন্ধুর কন্যা করোনা নামক অদৃশ্য ভিলেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। বিশ্বে যে কয়জন রাষ্ট্রনায়ক নিজস্ব বিচক্ষনতা ও দূর-দরদর্শিতায় করোনা মোকাবেলায় সফল হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের মধ্যে অন্যতম। ভবিষ্যতে যাতে কোন মহামারীর কারণে আর্থ-সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা  না হয় তার প্রতিকারে হয়তো তিনি মিলেনিয়ামের বিভিন্ন পরিকল্পনায় আরো অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করছেন নিশ্চয়ই ।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ওয়ান হেলথের কো-চেয়ারপার্সনকে আমি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাতে চাই, বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য স্বার্থে চিকিৎসা, গবেষণা ও সামাজিক কর্মকান্ড আরো প্রসারিত ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে মানুষের চিকিৎসা সেবার মত বাংলাদেশে ভেটেরিনারি পেশাকে জরুরী সেবায় অন্তর্ভুক্ত করুন। এই সময়ে ভেটেরিনারি পেশা ও সেবাকে মূলায়্যন করা দেশের জন্যও জরুরী।

লেখক- ভেটেরিনারিয়ান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও গবেষক